Binay Tamang: রাজ্যস্তরীয় নেতৃত্বের সঙ্গে পাহাড়-বৈঠকে বিনয়-রোশন, পৃথক অনীত
Kolkata: কানাঘুষো শোনা গিয়েছে, শাসক শিবিরের কাছে স্পষ্ট, বিমল গুরুং ও বিনয় তামাংরা একমঞ্চে এলেও অনীত থাপা পৃথকই থাকবেন।
কলকাতা ও শিলিগুড়ি: একুশের বিধানসভা নির্বাচন মিটেছে। পাহাড়ে দ্রুত জিটিএ নির্বাচন (GTA Election) হবে, এ আশ্বাসও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায। সদ্যই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন পাহাড় নেতা বিনয় তামাং। কিন্তু একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর পাহাড়-নেতাদের ‘এক ছাতের তলায়’ আনতে কার্যত প্রচুর কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে শাসক শিবিরকে। অবশেষে, শুক্রবার কলকাতার বিবাদী বাগ লাগোয়া একটি বিলাসবহুল হোটেলে মলয় ঘটক, অরূপ বিশ্বাসদের সঙ্গে পাহাড়ের নেতাদের বৈঠক হয়েছে। তবে সেই বৈঠকে বিনয় তামাং ও রোশন গিরি উপস্থিত থাকলেও ছিলেন অনীত থাপা (Anit Thapa)।
সূত্রের খবর, বৈঠকে যা যা আলোচিত হয়েছে সেইসমস্ত তথ্যই পাঠানো হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। এরপর উচ্চ নেতৃত্বের নির্দেশ মতো আগামী দফার বৈঠক ডাকা হবে। তবে, কানাঘুষো শোনা গিয়েছে, শাসক শিবিরের কাছে স্পষ্ট, বিমল গুরুং ও বিনয় তামাংরা একমঞ্চে এলেও অনীত থাপা পৃথকই থাকবেন।
তৃণমূল সুপ্রিমো বরাবরই পাহাড়ে বিশেষ নজর দিয়েছেন। পাহাড়ের বিভিন্ন দাবিদাওয়া, উন্নয়নের কাজের বিষয় ছাড়াও আসন্ন পুরভোট এবং জিটিএ ভোট নিয়ে নেতাদের মতামত জানতেই শুক্রবার কলকাতায় ডেকে পাঠানো হয়। পুরভোট হওয়ার পরেই রাজ্য জিটিএ বা পঞ্চায়েত ভোটের দিকে এগোবে, তা কার্যত স্পষ্ট।
শুক্রবার গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার রোশন গিরি, পিটি ওলা এবং পাহাড় তৃণমূলের বিনয় তামাং, রোহিত শর্মাদের নিয়ে একটি বৈঠক হয়েছে। অন্যদিকে, একা একটি পৃথক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অনীত থাপা। নির্বাচনের আগে কোন কোন প্রকল্প পাহাড়ে আনা সম্ভব, কোনগুলির কী সমস্যা সবদিকেই নজর দিয়েছে তৃণমূল। কোনওভাবেই পাহাড়ে ভোট হারাতে চায় না ঘাসফুল শিবির।
এদিনের বৈঠকের পর বিনয় তামাং বলেন, ‘‘শিক্ষক নিয়োগ থেকে সরকারি কর্মীদের বিষয়ের মতো পাহাড়ের নানা সমস্যা নিয়ে কথা হল। আমাদের সঙ্গে রোশনেরাও ছিলেন। তবে অনীত থাপাদের কথা বলতে পারছি না।’’
পাশাপাশি, রোশন গিরির মন্তব্য ‘‘আমরা তো তৃণমূলের জোটসঙ্গী। পাহাড়ের পরিস্থিতি নিয়ে কথা হল। আগামীতে আরও হবে। বিনয়েরাও বৈঠকে ছিলেন। আর কারও কথা বলতে পারব না।’’
তৃণমূল সূত্রের খবর, দুই পক্ষ অনীতকে এড়িয়ে গেলেও অনীত তৃণমূল নেত্রীর ‘কাছে’র বলেই পরিচিত। পাহাড়ে সফরে এলে প্রাতঃভ্রমণ বা দেখা করার জন্য একমাত্র ডাক পান অনীত। প্রশাসনিক সভাতেও অনীতের হয়ে নিজের সাংসদকে শাসন করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। অনীতের নতুন দল যথেষ্টই শক্তিশালী। তাই তাঁকে বাদ দিয়ে কোনও কিছুই করার পক্ষপাতী নন ঘাসফুল। সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনে তৃণমূল নেত্রী অনীতের সঙ্গে ভবিষ্যতে আলাদা করে কথা বলতেই পারেন। যদিও, এ নিয়ে অনীত কোনও মন্তব্য করেননি।
যদিও, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আরও একটি সম্ভাবনা উড়িয়ে দিতে পারছেন না। পাহাড় তৃণমূল এবং বিমল গুরুং একসঙ্গে আগামী ভোটগুলিতে লড়তে পারে। কিন্তু সেক্ষেত্রে অনীত যদি পৃথকভাবে লড়াই করেন তবে ক্ষতি তৃণমূলেরই। পুরসভা, পঞ্চায়েত বা জিটিএ, যে ভোটই হোক না কেন, এমন হলে লাভের গুড় খাবে বিজেপি বা জিএনএলএফ। এদিকে, তৃণমূল নেত্রী বারবার বলেছেন, পাহাড়ে সকলে ‘বন্ধু’। সে বিষয়ে অনীত নিজেও জানেন। ফলে, নতুন ‘বোঝাপড়া’ করেই পাহাড়ে ভোটে নজর দেবে ঘাসফুল এমনটাই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
আরও পড়ুন: Jai Hind University: চার দেওয়ালের মধ্যে প্রস্তাব, কবে পরিণতি? থমকে জয় হিন্দ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ