নামছে প্লেটলেট, হচ্ছে অর্গান ফেলিওর! কী কারণে শিশুদের এই উপসর্গ, জানালেন চিকিত্সক

TV9 Bangla Digital | Edited By: শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী

Sep 15, 2021 | 9:50 AM

Viral Fever: আর ঠিক এই কারণেই খুব তাড়াতাড়ি জ্বরে নেতিয়ে পড়ছে শিশুরা। বলছেন চিকিত্সকরাই।

নামছে প্লেটলেট, হচ্ছে অর্গান ফেলিওর! কী কারণে শিশুদের এই উপসর্গ, জানালেন চিকিত্সক
জ্বরে কাবু শিশুরা। ফাইল চিত্র।

Follow Us

শিলিগুড়ি: হুহু করে নামছে রক্তের প্লেটলেট কাউন্ট, কমছে শ্বেত রক্তকণিকা। শিলিগুড়িতে জ্বরে (Viral Fever) আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে একই সমস্যা দেখা যাচ্ছে। আর ঠিক এই কারণেই খুব তাড়াতাড়ি জ্বরে নেতিয়ে পড়ছে শিশুরা। বলছেন চিকিত্সকরাই।

গত ২৪ ঘন্টায় শিলিগুড়িতে জেলা হাসপাতালে ৮০ জন ও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১৩০ জন শিশুকে ভর্তি নেওয়া হয়েছে। বেড না মেলায় মেঝেতেই গাদাগাদি করে বাচ্চাদের নিয়ে মায়েরা আছেন।

জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকদের দাবি, “আমরা ভাইরাসকে চিনতে পারছি না। অন্য বছরগুলিতে অক্টোবর মাসে ঠান্ডা পড়লে কিছু জ্বর সর্দি কাশি বাচ্চাদের হতো। কিন্তু এবার তা সেপ্টেম্বরেই হচ্ছে। হুহু করে প্লেটলেট ও রক্তের শ্বেত রক্তকণিকা কমে যাচ্ছে। এর জেরেই দুর্বল হয়ে পড়ছে শিশুরা।”

তবে শিশুদের প্রত্যেকটি উপসর্গ নিয়ে চিকিত্সকরা সচেতন রয়েছেন বলে জানিয়েছেন। সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি নার্সিংহোম গুলিতেও ভিড় উপচে পড়ছে। সরকারি চিকিৎসকেরা এ নিয়ে মুখ খুলতে চাইছেন না। তবে প্রাক্তন সরকারি হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেষঞ্জ চিকিৎসক সুবল দত্ত বলেন, “প্রচন্ড ছোঁয়াচে ভাইরাস। আমরাও আক্রান্ত হয়ে পড়ছি। পুষ্টির অভাবে থাকলে জ্বরে আক্রান্ত বাচ্চাদের অর্গান ফেলিওর হচ্ছে। দ্রুত কমছে প্লেটলেট। আমরা চিকিৎসা চালাচ্ছি।”

চিকিত্সক জানাচ্ছেন, আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার জন্যই শিশুদের মধ্যে এই সমস্যা দেখা দিচ্ছে। সকালে দিকে উত্তরবঙ্গের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে অনেকটাই বেশি থাকছে। পরে আবার বৃষ্টি, স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া। উত্তরবঙ্গের বেশিরভাগ শিশুই অনগ্রসর পরিবারের। তারা এমনিতেই অপুষ্টিতে ভোগে। ফলে তাদের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। আর সেই কারণেই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে তারা।

এদিকে, বানারহাট হাসপাতালে প্রায় ১০০ জনের মত রোগী ভাইরাল ফিভারের উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসা করাতে এসেছেন। যাঁদের মধ্যে কয়েকজন রোগীকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়ে ওষুধ নিয়ে বাড়ি চলে যান।

একই ছবি ধূপগুড়ি হাসপাতালের ক্ষেত্রেও ভাইরাল ফিভারে আক্রান্ত ৪ জন শিশুকে ভর্তি করা হয়েছে ধূপগুড়ি হাসপাতালে। প্রায় ৫০ থেকে ৬০ জন শিশুকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর পরিবারের সদস্যরা নিয়ে চলে গিয়েছেন। করোনার আতঙ্কে অধিকাংশ পরিবার শিশুদের হাসপাতলে ভর্তি রাখতে চাইছেন না।

কিন্তু যে সমস্ত শিশুদের অবস্থা আশঙ্কাজনক, তাদের ভর্তি রাখা হয়েছে স্থানীয় হাসপাতালে। অনেকক্ষেত্রে জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, গত কয়েক দিনে মালবাজার সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে প্রায় ৮১ জন ভাইরাল ফিভারে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন।

অন্যদিকে বানারহাট হাসপাতালে ১০০ জন রোগী ভাইরাল ফিভারে আক্রান্ত। ধূপগুড়ি হাসপাতাল শতাধিক রোগী ভাইরাল ফিভারে আক্রান্ত হয়ে এসেছিলেন। যাঁরা বাইরে থেকেই চিকিৎসক দেখিয়ে ওষুধ নিয়ে বাড়ি চলে গিয়েছেন।

শিশুদের হাসপাতালে ভর্তি রাখার সাহস পাননি। তবে যে চারটি শিশুর জ্বর কোনওভাবেই কমছে না, তাঁদের ধুপগুড়ি হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। একজনকে ধূপগুড়ি হাসপাতাল থেকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে।

আরও পড়ুন: তিন শিশুর মৃত্যুর পরও জানা গেল না কোন জ্বর! আক্রান্ত পাঁচ শতাধিক

আরও পড়ুন: হু হু করে শিশুদের মধ্যে দেখা দিচ্ছে উপসর্গ! কোভিড নেগেটিভ, এবার ভয় ধরাচ্ছে অন্য রোগ

Next Article