শিলিগুড়ি: রাজ্য মেডিকেল কাউন্সিলের জন্য স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তার নির্দেশে ঘর দখলের খবর আগেই এসেছিল। এবার ওই অফিস সরানোর দাবিতে অধ্যক্ষকে স্বারকলিপি জমা দিলেন সিনিয়র চিকিৎসকেরা। কিন্তু এই খবর সামনে আসতে না আসতেই আরও নানা কেলেঙ্কারি সামনে আসছে। সূত্রের খবর, কাউন্সিলের জন্য দু’টি ঘর বরাদ্দ করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে মোট পাঁচটা ঘর জুড়ে রয়েছে মেডিকেল কাউন্সিলের উত্তরবঙ্গ শাখা। কার নির্দেশে বাড়তি তিনটি ঘর? তাও আবার সুপার স্পেশালিটি ব্লকে? উত্তর মিলছে না। কিন্তু, দিব্যি বহাল তবিয়তে ওই ব্লকের পাঁচটি ঘর দখল করে রয়েছে মেডিকেল কাউন্সিল।
অন্যদিকে, কলকাতায় মেডিকেল কাউন্সিলে অভিযানের পর যেসব তথ্য সামনে আসছে তাতে শঙ্কিত চিকিৎসকেরা। এক আসোসিয়েট প্রফেসর এদিন জানান, যে রেজিস্ট্রার কাউন্সিলে বসে আসেন তার মেয়াদ আগেই উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে। তিনি বলছেন, “তাহলে আমরা যে রেজিস্ট্রেশন করালাম সেটা কি বৈধ? আদালতে প্রশ্ন উঠলে কি হবে?”
প্রসঙ্গত, উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ থেকে কাউন্সিলে নির্বাচিত সদস্য ছিলেন দীপাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় দিন কয়েক আগেই আন্দোলনের জেরে তিনি আগেভাগেই পদত্যাগপত্র জমা দেন। কিন্তু, চিকিৎসকদের বড় অংশ বলছেন একদিন আগে কলকাতায় ওই অভিযানের পরে স্পষ্ট হয় বাস্তবে কারও পদত্যাগ গৃহীত হয়নি। ফলে এবার প্রশ্নের মুখে চিকিৎসক দীপাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকাও। এখন চিকিৎসকেরা অনেকেই বলছেন, “দায় তো নিতেই হবে। আন্দোলনের চাপ বাড়ছে বুঝে উনি আগেভাগে পদত্যাগের কথা বললেন। কিন্তু এতদিনের অব্যবস্থার দায় নেবেন না? উনিই পেছন থেকে গত কাউন্সিল নির্বাচনের আগে সমস্ত ব্যালট সংগ্রহ করিয়েছিলেন। আমরা ভোট দিতে পারিনি। এখন উনি জানান উনি কার চাপে এসব করেছিলেন?” একই সুর অ্য়াসোসিয়েট প্রফেসর উষশী বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলাতেও।
এই পরিস্থিতির মাঝে এদিন মেডিকেল কলেজে এসে পোস্টার লাগান বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। তাঁর অভিযোগ, তৈল মর্দনেই ব্যস্ত স্বাস্থ্য প্রশাসন উত্তরবঙ্গ লবির কাছে নিজেদের সঁপে দিয়েছিল। তাই দু’টো ঘর চাওয়া হলেও পাঁচটি ঘর তাঁরা দখল করে নিয়েছেন। এভাবে ঘর দখলের কথা সামনে আসতেই বিব্রত অর্থপেডিক বিভাগের প্রধান পার্থসারথি সরকার। তিনি বলছেন, “দু’টি ঘরের নির্দেশ ছিল। পাঁচটি ঘরসহ পুরো ব্লক দখল করল রাজ্য মেডিকেল কাউন্সিল। দীপাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়েরা কাউন্সিল সদস্য হয়ে অতীতে ব্যালট চুরি থেকে অভিকদের কোলের ছেলে বানিয়ে ঘুরে এখন পদত্যাগ করছেন? আমরা চাইছি অবিলম্বে কাউন্সিলকে ঘর ছাড়তে বলা হোক। আর দিপাঞ্জন রাজসাক্ষী হয়ে সব সামনে আনুন।” বিব্রত অধ্যক্ষ ইন্দ্রজিৎ সাহাও। তিনি বলেন, “ক’টি ঘর দখল করে আছে দেখতে হবে। ডিএমই নিজেই হাজির ছিলেন। দুটি ঘর দিতে নির্দেশ ছিল। নতুন নির্দেশ এলেই ওদের সরিয়ে দেব।”