‘যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তা আমারই থাকুক…’ কাবুল থেকে দার্জিলিঙ ফেরা রাজেশের চোখেমুখে উদ্বেগ

TV9 Bangla Digital | Edited By: সৈকত দাস

Aug 23, 2021 | 8:43 PM

Rajesh Thapa: "আমরা তো বটেই, ওখানকার মানুষও ভয় পেয়ে রয়েছে এত আগ্নেয়াস্ত্র হাতে তালিবানদের দেখে। সবাই পালাতে চাইছেন। কিন্তু সবাই পালাতে চাইছেন বলে অসুবিধা। টিকিট পাওয়ার কষ্ট হচ্ছে। অনেক ভারতীয় এখনও ফেঁসে রয়েছেন।''

যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তা আমারই থাকুক... কাবুল থেকে দার্জিলিঙ ফেরা রাজেশের চোখেমুখে উদ্বেগ
নিজস্ব চিত্র

Follow Us

শিলিগুড়ি: আফগানিস্থান থেকে দিল্লি হয়ে অবশেষে বাগডোগরা পৌঁছলেন শিলিগুড়ির বেশ কয়েকজন বাসিন্দা। পরিজনদের দেখতে পেয়ে তাঁদের কারও চোখে ভাসল কান্নায়, কেউ আবেগে জড়িয়ে ধরলেন প্রিয়জনদের। বাড়ি ফিরলেও তাঁদের চোখে মুখে আতঙ্ক এখনও স্পষ্ট। সবাই যেন সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এলেন। তাঁদের মধ্যে একজন রাকেশ থাপা।

দার্জিলিঙের বাসিন্দা রাজেশের কথায়, যে অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে এসেছি, তা আমারই থাকুক। প্রকাশ করতে চাই না। কিছু কি লুকোতে চাইছেন? রাজেশের মন্তব্য, ‘ওদেশে সবাই ভয়ে রয়েছে। সেখানকার মানুষই দেশ ছেড়ে পালাতে চাইছেন। আর আমি ভয় পাব না?’

রবিবারই আফগানিস্তান থেকে দিল্লি আসেন বহু মানুষ। তাঁরা এদিন দিল্লি থেকে যে যার বাড়ি ফেরেন। পরিজনেরা সকাল থেকেই উৎকণ্ঠায় ছিলেন। বারবার ঘড়ি দেখছিলেন তাঁরা। সময় যেন কাটছিল না। বিমান সঠিক সময়ে চলছে কিনা তার খোঁজ নিচ্ছিলেন কেউ কেউ। অবশেষে দিল্লি থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান বাগডোগরা এসে পৌঁছতেই চোখের তারায় কেবল প্রিয়জনের খোঁজ।

দুপুর আড়াইটা নাগাদ আফগানিস্থানে আটকে থাকা যাত্রীদের মধ্যে যাঁদের বাড়ি দার্জিলিঙ ও কালিম্পঙে তাঁরা কয়েকজন বেরিয়ে আসেন বিমানবন্দর থেকে। তবে অনেকেই ভয়ে কথাই বলতে চাননি। কর্মসূত্রে সেদেশে নিরাপত্তা কর্মীর কাজ করতেন রাজেশ থাপা এঁদেরই একজন। জোরাজুরিতে তিনি মুখ খুললেন। তবে যা জানালেন তা সংক্ষেপে। বলা যায়, কাবুলিওয়ালার দেশে একদিনে তাঁর যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তার অনেক কিছুই তিনি কাউকে বলতে চান না। রাজেশ জানান, তাঁর সঙ্গে প্রায় দুশো জন ফিরেছেন। ওদেশে আটকে থাকা বাকিরাও নির্বিঘ্নে ফিরবেন, এটাই তাঁর আশা। বললেন, ‘মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরেছি।’

রাজেশের কথায়, “অনেকে এসেছেন আমার সঙ্গে। রবিবার কাবুল থেকে বিমানবন্দরে পৌঁছই। সাড়ে আটটা নাগাদ দিল্লি পৌঁছই।” এখন কাববুলে পরিস্থিতি কেমন? তাঁর কথায়, ‘সরকার ফিরে আসতে ভীষণ সাহায্য করেছে। তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। সরকার থেকে এয়ার ফোর্স, সংবাদমাধ্যম সবাইকে অজস্র ধন্যবাদ।” তারপর তাঁর সংযোজন, “আমরা তো বটেই, ওখানকার মানুষও ভয় পেয়ে রয়েছে এত আগ্নেয়াস্ত্র হাতে তালিবানদের দেখে। সবাই পালাতে চাইছেন। কিন্তু সবাই পালাতে চাইছেন বলে অসুবিধা। টিকিট পাওয়ার কষ্ট হচ্ছে। অনেক ভারতীয় এখনও ফেঁসে রয়েছেন।”

তবে আর বিশেষ কিছু বলতে চাননি তিনি। বলেন, “আর যা অনুভব করেছি, সেটা আমার মধ্যেই থাকুক। প্রকাশ করতে চাই না।” বলেই সটান দার্জিলিঙয়ে নিজের বাড়ির দিকে পা বাড়ালেন রাজেশ থাপা।

উল্লেখ্য, এদিনই আফগানিস্তান থেকে থেকে কতজন বাংলায় ফিরলেন, তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি হলেই জানাব। এসবে দেশের ব্যাপার জড়িয়ে, রাজ্যের ব্যাপার জড়িয়ে। আমরা একসঙ্গেই কাজ করছি। সবাইকে যাতে ফিরিয়ে আনা যায় এখন সেটাই লক্ষ্য। বিস্তারিত যখন হাতে পাব, আমাদের কাছে রিপোর্টিং করবে, তখন আমরা আপনাদের জানাতে পারব।”

অন্যদিকে আফগান-পরিস্থিতি নিয়ে আগামী ২৬ অগস্ট সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছে কেন্দ্র। আগামী বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় সেই বৈঠক হবে। তৃণমূলের অংশগ্রহণ নেবে বলে জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, দেশের স্বার্থে, দশের স্বার্থে অবশ্যই তৃণমূল এই বৈঠকে অংশ নেবে বলে জানিয়ে দেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের বক্তব্য, “বিদেশমন্ত্রক যদি সর্বদল ডাকে, আফগান তালিবানের মতো বিষয়ে যদি বৈঠক ডাকা হয় সেখানে নিশ্চয়ই যাবে।” আরও পড়ুন: তালিবানি তালুক থেকে কতজন বাংলায় ফিরলেন, জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় 

Next Article