শিলিগুড়ি: কলকাতায় সম্পন্ন হয়েছে পুরনির্বাচন। রেকর্ড জয় হয়েছে তৃণমূলের। এ বার, বাকি বকেয়া পুরভোট সম্পন্ন করতে তৎপর রাজ্য। জানা গিয়েছে, আগামী ২২ জানুয়ারি শিলিগুড়িতে পৌরনিগমের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। সেই উপলক্ষ্যেই জোর কদমে প্রচারে নামলেন শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ (Shankar Ghosh)।
বরাবর বামেদের শক্ত ঘাঁটি শিলিগুড়িতে কখনওই দাঁত ফোটাতে পারেনি তৃণমূল। বিধানসভা নির্বাচনে সদ্যই জয় পেয়েছেন বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। শিলিগুড়ির পুরভোট আলাদা কেন হবে তা নিয়ে আগেই প্রশ্ন তুলেছে বাম শিবির। যদিও, প্রাক্তন বাম নেতা হয়েও নিজের পুরনো দলকে বিশেষ পাত্তা দিতে নারাজ অধুনা বিজেপি নেতা শঙ্কর ঘোষ।
সদ্য বিজেপির রাজ্য সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন শঙ্কর। শিলিগুড়ির পৌর নির্বাচনেও প্রার্থী হচ্ছেন তিনি। সূত্রের খবর, ২৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকেই বিজেপির টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তিনি। শুক্রবার সকাল থেকেই তাই প্রচারে নেমে গিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব।
বিজেপি বিধায়ক এদিন বলেন, “শিলিগুড়িতে এখন বামেরা অপ্রাসঙ্গিক। তৃণমূলের ভোট লুঠের চেষ্টা রুখতে তৎপর আমরা। ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি নিয়েছি। আপাতত ছোট ছোট সভা-র্যালিতে জোর দেব। কেন্দ্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে শিলিগুড়ির উন্নয়নসাধনই আমাদের লক্ষ্য।”
শিলিগুড়ির পুরভোট উপলক্ষ্যে আগেই পরিচালন কমিটির কাজ সেরে রেখেছে বিজেপি। শিলিগুড়ি পৌরনিগমের ৪৭ টি ওয়ার্ডকে মোট ৫ টি বরোতে ভাগ করে প্রত্যেক বরোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এক একজন বিধায়ককে। প্রত্যেক বরোর জন্য তৈরি করা হয়েছে পাঁচটি পৃথক কমিটিও। সবকটির দায়িত্বে থাকছেন বিধায়কেরাই।
কিছুদিন আগেই শিলিগুড়িতে পুরভোট চেয়ে পথে নেমেছিল পদ্ম শিবির। প্রায় ২০০ জনের বেশি বিজেপি কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে হিলকার্ট রোড থেকে মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ এবং আনন্দ বর্মণ। শিলিগুড়ি পুরসভা পর্যন্ত সেই মিছিলে অংশগ্রহণকারী এক বিজেপি সমর্থকের কথায়, “আমরা অবিলম্বে শিলিগুড়িতে পুরনির্বাচন চাই। একবছরের বেশি সময় ধরে কোনও প্রশাসক বোর্ড দিয়ে পুরসভা চলতে পারে না। সাধারণ মানুষ পুরসভার সুবিধা পরিষেবাগুলি পাচ্ছেন না। আমরা অবিলম্বে নির্বাচন চাই।”
প্রসঙ্গত, শিলিগুড়ির পুরভোট নিয়ে আগেও পথে নেমেছে বিজেপি। প্রশ্ন তুলেছে বাম শিবিরও। শিলিগুড়ির প্রাক্তন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “প্রথম থেকেই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচনের পক্ষে সওয়াল করেছি আমরা। শিলিগুড়িতে ধারাবাহিকভাবে আমরা আন্দোলনও করছি। গত ৬ তারিখ রাত দিন অবস্থানের কর্মসূচিও ছিল আমাদের। এখন নির্বাচনটার কথা বলা হয়েছে। আমাদের একটাই প্রশ্ন, হঠাৎ শিলিগুড়িটাকে ২২ তারিখ করে বাকিগুলো ২৭ তারিখ কেন করা হল?”
বকেয়া পুরভোট নিয়ে বৃহস্পতিবারই কলকাতা হাইকোর্টে হলফনামা জমা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। দু’দফায় ভোটের কথা বলা হয়েছে সেখানে। ২০২২ সালের ২২ জানুয়ারি ও ২৭ ফেব্রুয়ারিকে প্রাথমিকভাবে ভোটের দিন হিসাবে স্থির করা হয়েছে। হলফনামায় রয়েছে তার উল্লেখও। প্রথম দফার ভোটে উত্তরবঙ্গের একমাত্র শিলিগুড়ি পুরনিগমের কথা বলা হয়েছে।