শিলিগুড়ি : স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে প্রসন্ন রায় গ্রেফতার হওয়ার পর সামনে এসেছে তাঁর বিপুল সম্পত্তি। কলকাতার আশেপাশে ভিলা, বাগানবাড়ির হদিশ মিলেছে ইতিমধ্যেই। এবার সামনে এল উত্তরবঙ্গে তাঁর সম্পত্তি। প্রসন্ন রায়ের অন্তত তিনটি রিসর্ট রয়েছে বলে সূত্রের খবর। অভিযোগ, তিন খানা রিসর্ট থাকা সত্ত্বেও হোটেল মালিকদের আসোসিয়েশনের সদস্য হননি প্রসন্ন। উত্তরবঙ্গের হোটেলের ব্যবসার সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, তাঁদের অনেকেই প্রসন্নর কথাই জানতেন না।
সিবিআই-এর গোয়েন্দাদের নজরে রয়েছে উত্তরবঙ্গের তিনটি রিসর্ট। আলিপুরদুয়ার, লাটাগুড়ি ও মূর্তিতে সোই রিসর্টের খোঁজ মিলেছে, যেগুলির মালিক প্রসন্ন বলে সূত্রের খবর। তাঁর সংস্থা এসডিডি-র নামেও রয়েছে মালিকানা। হোটেল মালিকদের আসোসিয়েশনের কর্তারা জানিয়েছেন, জেলায় নতুন কোনও হোটেল হলে সাধারণত সেই সব হোটেল বা রিসর্টের মালিকরা আসোসিয়েশনের সদস্যপদ নিয়ে নেন। কিন্তু এই চিলাপাতা, মূর্তি ও লাটাগুড়ির এই তিনটি রিসর্ট কখনই ওই আসোসিয়েশনের আওতায় আসেননি। হোটেলগুলিকে অনুরোধ করা হলেও তারা আগ্রহ দেখায়নি বলেই দাবি করেছেন আসোসিয়েশনের কর্তারা।
অ্যাসোসিয়েশনের তরফে আরও দাবি করা হয়েছে, এই হোটেল গুলোর মালিকপক্ষের প্রতিনিধিরা কখনই সামনেই আসেননি। ফেডারেশন অব বেঙ্গল হোটেলিয়ার্সের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি উজ্জ্বল ঘোষ জানিয়েছেন, স্থানীয় কিছু বেকার যুবকদের এই সব হোটেল বা রিসর্টে কাজ দেওয়া হত। নিজেদের পরিচয় সে ভাবে নাকি প্রকাশ্যে আনত না মালিকপক্ষ। হোটেল ব্যবসায়ীদের দাবি, প্রসন্ন গ্রেফতার হওয়ার পরই তাঁরা জানতে পেরেছেন এ সব হোটেলের মালিক প্রসন্ন।
এ দিকে, নিউটাউনে ‘রবিরশ্মি’ নামে আরও একটি অভিজাত আবাসনের খোঁজ মিলেছে, যেখানে প্রসন্নর দুটি ফ্ল্যাট রয়েছে বলে সূত্রের খবর। এ ছাড়া রাজারহাটের ধরসায় বাগানবাড়িও রয়েছে তাঁর। পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত প্রসন্ন। শুধু তাই নয়, কেউ কেউ বলছেন তিনি পার্থর ভাগ্নি-জামাই। তবে সবথেকে বড় বিষয় হল, সল্টলেকে তাঁর কার রেন্টাল সার্ভিসের অফিসে বসেই নিয়োগ সংক্রান্ত লেনদেন নিয়ে রফা হত বলে জানতে পেরেছেন সিবিআই আধিকারিকরা। তাই সেই অফিস থেকেই গ্রেফতার করা হয়েছে প্রসন্নকে। তাঁর এই বিপুল সম্পত্তির সঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতির কোনও সম্পর্ক আছে কি না, সেটাই খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।