শিলিগুড়ি: প্রোমোটারের অত্যাচারে অতিষ্ট অবসরপ্রাপ্ত পুলিশকর্তা। অভিযোগ, ব্যবস্থা নিতে গড়িমসি করছে পুরসভা, পুলিশের। খুনের হুমকি আসায় ভয়ে কেঁদে ফেললেন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্তা। নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশের দ্বারস্থও হয়েছেন। পুরসভার ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাবুপাড়ায় থাকেন অবসরপ্রাপ্ত ডিএসপি অভিজিৎ সাহা ও তার স্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, বাড়ির পাশেই থাকা এক বহুতলের প্রোমোটার গনেশ দাস ওই প্লটে অভিজিতবাবুর বাড়ির গা ঘেষেই নির্মাণ কাজ চালাচ্ছেন। প্রতিবাদ করায় বাড়িতে পড়ছে ঢিল। হুমকি আসছে টেলিফোনে।
গত ডিসেম্বরে ডিটেকটিভ ডিপার্টমেন্টে ডিএসপি পদ থেকে অবসর নেন অভিজিৎ। তিনি বলছেন, “প্রভাবশালী প্রোমোটারের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে স্থানীয় পুরসভা, পুলিশের কাছে বারবার অভিযোগ করেছি। কাজ হয়নি কিছুই। যে পুলিশে এতদিন কাজ করলাম সেই পুলিশও মুখ ফিরিয়ে নিল৷ আমি হাইকোর্টে মামলা করেছি বেআইনি নির্মাণ নিয়ে। এ নিয়ে মেয়র গৌতম দেব, স্থানীয় থানা, পুলিশ কমিশনার, এমনকি রাজ্যের মুখ্যসচিবের কাছেও অভিযোগ জানিয়েছি।”
অবসরপ্রাপ্ত পুলিশকর্তার দাবি, দাপটের সঙ্গেই তিনি এতদিন কাজ করেছেন। কিন্তু অবসরের পর এভাবে হেনস্থা হবে ভাবেননি। বলছেন, “স্ত্রীকে নিয়ে একাই বাড়িতে থাকি। কেউ পাশে দাঁড়াচ্ছেন না। হাইকোর্ট আমার আবেদনে সাড়া দিয়ে পুরসভাকে রিপোর্ট দিতে বলেছে।” অভিজিতবাবুর স্ত্রী পলি সাহা বলেন, “অত্যাচারে অতিষ্ট আমরা। রাস্তায় বের হতেও ভয় পাচ্ছি। বাড়িতে রাতে ঢিল পড়ছে। কেউ পাশে নেই। পাড়ায় সবাই সব জানেন। প্রভাবশালী প্রমোটারের ভয়ে সবাই চুপ। আমরা কোথায় যাব? আমার স্বামীকে সন্ধ্যায় মাস্ক পড়ে তিনজন এসে শাসিয়েছে। খুন করে দেবে বলে হুমকি দিয়েছে। গুলি করবে বলছে। ভয়ে ঘুমাতে পারছি না। কেউ পাশে দাড়াচ্ছে না।”
অন্যদিকে অভিযুক্ত প্রোমোটার গণেশ দাস ক্যামেরার সামনে আসেননি। তবে টেলিফোনে রীতিমতো হুঙ্কারের সুরেই বলেন, “হ্যাঁ আমি জায়গা না ছেড়েই কাজ করছি। চাইলে পুরসভা ভেঙে দিক না। আপত্তি নেই। আইনি পথেই এগোচ্ছি।” স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর সিক্তা বসু রায় বলেন, “দুজনেই ওয়ার্ডের বাসিন্দা। সহ নাগরিক। আইন আইনের পথেই চলবে। আদালতের নির্দেশ দেখেছি। অভিজিৎ সাহার অভিযোগের ভিত্তিতে প্রোমোটারকে নোটিশ দিয়েছি। সব খিতিয়ে দেখছি। বেআইনি নির্মাণ ভেঙে দেওয়া হবে।”