শিলিগুড়ি: ‘নো ভোট টু মমতা’, ‘বিরোধী জোটকে কাঁধে কাঁধে মিলিয়ে লড়াই করার বার্তা আগেই দিয়েছিলেন বিজেপি নেতা তথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বাম-কংগ্রেসকে ভোট দিলেও তৃণমূলকে কদাপি ভোট না হয় তাও আর্জি জানান। এবার এই একই সুর শোনা গেল তৃণমূল নেতা তথা শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেবের গলায়। বললেন, “তৃণমূলকে ভোট না দিলে বিজেপি-কেও নয়, বাম-কংগ্রেসকে ভোট দিন” তাহলে কি তৃণমূল-বিজেপি দুই দলই ‘ভরসা’ রাখছে বামেদের উপর? প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলের।
উল্লেখ্য, রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন চলাকালীন বিহারের পাটনায় বিরোধী জোটের যে ছবি সামনে এসেছে, সেখানে বাম-কংগ্রেস ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাশাপাশিই থেকেছেন। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে ‘দিল্লিতে দোস্তি, এ রাজ্যে কুস্তি’?
গৌতম দেব বলেন, “জাতীয় প্রেক্ষিতে বিজেপি শত্রু। তাই বিরোধীরা ঐক্যবদ্ধ হচ্ছি। তবে স্থানীয় বাধ্যবাধ্যকতা আলাদা।” বর্ষীয়ান এই তৃণমূল নেতার অনুমান, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল একশো শতাংশ ভোট পাবে না। তাই শাসকদলকে ভোট না দিলে বিজেপিকেও যেন একটি ভোটও দেওয়া না হয়। বিকল্প প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার কথা বলেন তিনি। আর ‘বিকল্প’ প্রার্থী বলতে বাম-কংগ্রেস জোট ছাড়া আর যে কেউ হবে না সে কথা বলাই যায়।
তবে এখানেও সেটিং তত্ত্ব খাড়া করেছেন বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, “সবটাই তৃণমূল ও সিপিএম-এর সেটিং।” এ রাজ্যে বাম ভোটারদের উদ্দেশ্যে শঙ্করের আর্জি তাঁরা যেন সিদ্ধান্ত নেন কাকে ভোট দেবেন। অত্যাচারী তৃণমূলের সঙ্গীদের ভোট দেবেন নাকি বিজেপি-কে।
কিন্তু সিপিএম-এর অশোক ভট্টাচার্য সাফ বলেছেন, “দিল্লিতে দোস্তি হলেও এ রাজ্যে বিজেপি ও তৃণমূলকে একচুলও জায়গা ছাড়বে না বামেরা। এ রাজ্যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই হবেই।”
প্রসঙ্গত, জেলায়-জেলায় নিত্যদিন দলবদলের খবর আসছে। তার মধ্যে আকছাড় বাম-কংগ্রেসে যোগদান হচ্ছে এই খবরও প্রকাশিত হচ্ছে। শুধু তাই নয়, মনোনয়ন পর্বে বিভিন্ন জায়গায় বাম প্রার্থীদের ভয় দেখানো, মারধর এমনকী মৃত্যুর ঘটনাও প্রকাশ্যে এসেছে। তাহলে ‘শূন্য’ বামেদের কি ভয় পাচ্ছে শাসকদল? সে প্রশ্ন এখন বিদ্যমান।
সামনের মাসে এ রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট। আর কয়েক মাস আগে হয়েছে সাগরদিঘির উপনির্বাচন। সেখানে বিরোধী দলনেতা তৃণমূল বিরোধীদলগুলিকে ‘একজোট’ হয়ে লড়ার বার্তা দিয়েছিলেন। এমনকী পঞ্চায়েত ভোটেও মমতাকে ভোট না দেওয়ার আর্জি জানানো পাশাপাশি বিকল্প শক্তিকে ভোট দিতে আহ্বান জানিয়েছিলেন। তৃণমূলকে হঠাতে জোটকেই আগে আনার বার্তা দেন।
এ দিকে, কেন্দ্রে আবার বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে একজোট করতে সিপিএম-এর সাহায্য চেয়েছে তৃণমূল। ফলে গেরুয়া এবং সবুজ শিবির যে ‘শূন্য’ বামেদের উপর ভরসা করছেন তা মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।