শিলিগুড়ি: মাল নদীতে বিপর্যয়ের রেশ এখনও কাটেনি। হড়পা বানে প্রাণ গিয়েছে আটজনের। সব নদীতেই এই বান আসে প্রকৃতির নিয়মে। আবার চলেও যায়। প্রকৃতির নিয়ম হলেও বিপর্যয়ের কারণ নিয়ে উঠছে একাধিক প্রশ্ন। কোথাও নদীর স্বাভাবিক গতিপথ ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা, কোথাও নদীর চর দখল, বিজ্ঞানসম্মত উপায় ছাড়াই যথেচ্ছভাবে বালি-পাথর তোলায় ‘ক্ষেপে’ উঠছে জলস্রোত।
মালবাজারে নদীর গতি আটকানোর চেষ্টা ও নদীতে এক হাজার মানুষের নামার ঘটনা না ঘটলে বিপদ এড়ানো যেত বলেই মত নদী বিশেষজ্ঞদের। তা না হওয়ায় আটজনের প্রাণ গিয়েছে। এরপরও কি হুঁশ ফিরেছে? শিলিগুড়িতে শহরের ফুসফুস মহানন্দাতেও কি আসতে পারে হড়পা বান?
প্রকৃতি নিয়ে যাঁদের কাজকর্ম তাঁদের দাবি, সব নদীতেই বান আসতে পারে। ক্যাচমেন্টে প্রবল বৃষ্টি, মেঘভাঙা বৃষ্টি-সহ একাধিক কারণে হড়পা আসতে পারে মহানন্দাতেও। কিন্তু এলে কী হবে তা ভেবে শিউরে উঠছেন অনেকেই।
ন্যাফের তরফে অনিমেষ বসুর বক্তব্য, “মহানন্দা নাব্যতা হারিয়ে ধুঁকছে। নদীর চর দখল হয়ে গিয়েছে। দিনে-রাতে বালি পাথর তোলায় বিপদ বাড়ছে। যেভাবে দুই চরে বসতবাড়ি গড়ে উঠেছে তাতে বান এলে দু’কূল ছাপিয়ে ভাসতে পারে নদীর চরের কয়েক হাজার ঘরবাড়ি। প্রাণহানির আশঙ্কাও থাকছেই। কিন্তু নদীর বহমানতা যাতে স্বাভাবিক থাকে এসব নিয়ে বলতে গেলেই লোকে ভাবেন পাগলের প্রলাপ৷ কেউ শুনতেই চায় না।”
মহানন্দা বাঁচাও আন্দোলনের অন্যতম কর্তা অধ্যাপিকা বিদ্যাবতী আগরওয়ালার বক্তব্য, “প্রতিদিন চর দখল হচ্ছে। বসতবাড়ি তৈরি হচ্ছে। কলোনি গড়ে উঠছে। মানুষ এলে, ভোটব্যাঙ্ক বাড়ে। তাই কেউ বাধা দেন না। আমরা নানা বিষয় নিয়ে বারংবার গ্রিন ট্রাইবুনালে গিয়েছি। নদী বাঁচাতে নানা রায় আছে। কিন্তু সেসব মানে কে। তাই বিপদ বাড়ছে। সেদিন আর বেশি দূরে নয়, যেদিন অন্য নদীতেও ভয়াবহ ধ্বংসলীলা প্রত্যক্ষ করতে হতেই পারে।”