তিন সদ্যোজাতকে স্তন্যপান, গর্ভে ধারণ না করেও ‘মা’ হয়ে উঠলেন চিকিৎসক

ঋদ্ধীশ দত্ত |

Dec 16, 2020 | 11:45 PM

সদ্যোজাত তিন নবজাতককে স্তন্যপান করালেন হাসপাতালের কর্তব্যরত এক চিকিৎসক। এমনই অনন্য ঘটনার সাক্ষী থাকল হাসপাতালে স্বাস্থ্যকর্মী থেকে প্রসূতিরা।

তিন সদ্যোজাতকে স্তন্যপান, গর্ভে ধারণ না করেও মা হয়ে উঠলেন চিকিৎসক

Follow Us

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: সদ্যোজাত তিন নবজাতককে স্তন্যপান (Breast Feeding) করালেন হাসপাতালের কর্তব্যরত এক চিকিৎসক। এমনই অনন্য ঘটনার সাক্ষী থাকল হাসপাতালে স্বাস্থ্যকর্মী থেকে প্রসূতিরা।

গোসাবা ব্লক গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে মাতৃত্বকালীন ছুটি কাটিয়ে সম্প্রতি সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকা কুলতলির ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে মহিলা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন চিত্রলেখা সর্দার। চম্পাহাটির বাড়িতে একরত্তি ছেলেকে রেখেই সোমবার থেকে সেখানে একটানা ডিউটি সামাল দিচ্ছিলেন। গত তিন দিনে ওই হাসপাতালে ১১টি সন্তানের জন্ম হয়েছে। তার মধ্যেই মঙ্গলবার রাতেই জন্ম নিয়েছিল তিনটি নবজাতক। বুধবার সকালে হাসপাতালে রাউন্ড দেওয়ার সময় ওই চিকিৎসকের নজরে আসে যে, তিনটি শিশু অবিরাম কেঁদে চলেছে। এরপর ওয়ার্ডে গিয়ে জানতে পারেন, তিনটি শিশুর মায়েদের স্তন্যপান করাতে দেওয়া হচ্ছে না। তাই পেটের জ্বালায় কাঁদছে শিশুগুলি।

বাপের বাড়িতে ৯ মাসের শিশুকে রেখে হাসপাতালের ডিউটি সামলানো চিকিৎসকের আত্মউপলব্ধি তাঁকে তৎক্ষণাৎ সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। ঠিক করেন, তিনিই ওই শিশুদের স্তন্যপান করাবেন।

যেমন ভাবনা তেমন কাজ। একে একে ওই তিন শিশুকে হাসপাতালের আলাদা ঘরে নিয়ে এসে নিয়ে বুকের দুধ পান করিয়ে তাদের খিদের জ্বালা মেটান চিত্রলেখাদেবী। চিকিৎসকের এহেন মানবিক আচরণের মুগ্ধ হয়ে যান টুম্পা হালদার, নমিতা মণ্ডলের মত মায়েরা।

আরও পড়ুন: ‘মাথা গরম করিস না, আমি আসছি’, জিতেন্দ্রকে মমতা

সদ্য মা হওয়া টুম্পা হালদার বলেন ,’বাচ্চা জন্মানোর পর বুধবার সকাল থেকেই আমার সন্তান খিদের জন্য কাঁদছিল। কিন্তু আমি অসহায় বোধ করছিলাম ওর খিদে মেটাতে না পেরে। বাকি দুটি শিশুও একই কারণে অনর্গল কেঁদেই চলেছিল। তখনই চিত্রলেখা ওয়ার্ডে এসে শিশুদের খিদের কথা জানতে পেরে নিজের উদ্যোগে স্তন্যপান করান। যা আমরা কখনোই ভাবতে পারিনি।

এই প্রসঙ্গে ওই মহিলা বলেন, ‘আমার বাড়িতেও দুধের শিশু রয়েছে। সেই শিশুকে রেখেই আমাকে হাসপাতালে ডিউটি করতে হয়। আমি হাসপাতালে সদ্য জন্মানো তিনটি বাচ্চাদের খিদের সমস্যাটা উপলব্ধি করেছি বলেই তাদের খিদে মেটানোর চেষ্টা করি। কারণ আমি নিজেও তো একজন মা।’

আরও পড়ুন: ওমপ্রকাশের বিরুদ্ধে ‘ছেলে ডাকার’ অভিযোগ, ঘেরাও-বিক্ষোভ জেইউ-তে

Next Article