বাঁকুড়া: আসছে না বরাদ্দ। স্কুলে স্কুলে টানাটানি। এরইমধ্যে বারবার সামনে আসছে রাজ্যর শিক্ষা ব্যবস্থার বেহাল ছবি। যা নিয়ে বিরোধীরা রোজই আক্রমণের ধার বাড়াচ্ছে। এরই মধ্যে বাঁকুড়ের স্কুলগুলির বেহাল দশার ছবি সামনে আসতেই উদ্বেগ শিক্ষা মহলের অন্দরে। বাঁকুড়ার অন্যতম পিছিয়ে পড়া গ্রাম ওন্দা ব্লকের পুনিশোল। গ্রামের অধিকাংশ মানুষের নিজস্ব জমি নেই। বেশিরভাগ বাসিন্দাই পেশায় ফেরিওয়ালা। নতুন প্রজন্মের অনেকেই মাঝপথে লেখাপড়া ছেড়ে পাড়ি দিচ্ছে ভিন রাজ্যে। হু হু করে বেড়ে চলেছে স্কুল ছুটের সংখ্যা। কিন্তু কেন এই অবস্থা?
এ নিয়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলতে গেলেই বারবার উঠে আসছে এলাকার আর্থ-সামাজিক মন্দাদশার কথা। সকলের একই কথা, স্কুলে গিয়ে তো কিছু হচ্ছে। তাই টানাটানির মধ্যে বাধ্য হয়ে অল্প বয়সেই সংসারের হাল ধরছে ছেলে-মেয়েরা। পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে পাড়ি দিতে হচ্ছে ভিন রাজ্যে।
তবে অভাব আর দারিদ্রতাকে পাশ কাটিয়েও গ্রামের কেউ কেউ উচ্চ শিক্ষিত হয়েছেন। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাঠক্রমও শেষ করেছেন অনেকে। আশা ছিল এবার হয়তো মিলবে চাকরি। কিন্তু, সরকারি চাকরি তো দূর, এ রাজ্যে নতুন করে কল-কারখানা না হওয়ায় মেলেনি বেসরকারি চাকরিও। ফলে উচ্চ শিক্ষিত হয়ে তাঁদের বেশিরভাগকেই বেছে নিতে হয়েছে গৃহ শিক্ষকতার পেশা। কষ্ট করে অভাবের সংসারে লেখাপড়া শিখেও তাঁদের হাল দেখে হতাশ অভিভাবকেরাও। সে কারণেই যাঁদের ছেলেমেয়ে এখনও স্কুলের গণ্ডি পার করেনি তারাও আর বিশেষ ভরসা করতে পারছেন না প্রথাগত শিক্ষা ব্যবস্থায়। অকপটেই বলছেন সে কথা। স্বাভাবিকভাবেই উচ্চ শিক্ষার ধারপাশ না মাড়িয়ে অষ্টম ও নবম শ্রেণির পরই বাচ্চাদের ভিন রাজ্যে পাঠিয়ে দিচ্ছেন কাজের খোঁজে। ফলে স্থানীয় স্কুলিগুলিতে হু হু করে বেড়ে যাচ্ছে স্কুলছুটের সংখ্যা।