নদিয়া: একই রকম দেখতে লেভেল, স্টিকার, কৌটর ধরন, তেলের রং- দেখে আলাদাই করতে পারবেন না আসল-নকল! সেই সেই নারকেল তেলেই মেশানো হচ্ছে ক্ষতিকারক কেমিক্যাল। একইভাবে তা সাবানের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য! নকল প্রশাধনী সামগ্রীর বড়সড় পর্দাফাঁস করলেন তদন্তকারীরা। তেল থেকে সাবান, দাঁত মাজার মাজন, গোলাপ জল এমনকি ডেটলও হবহু নকল করে জাল করা হচ্ছে।
লক্ষ্ লক্ষ টাকার নকল প্রসাধনী খাদ্য সামগ্রী তৈরির কারখানা থেকে প্রচুর নকল মাল ও যন্ত্রাংশ উদ্ধার করল পুলিশ। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে আইবি ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রায় ৮ লক্ষ টাকার নকল তেল, চা, নিহার তেল, ডেট্ল,গোলাপ জল,ডাবর, রেড মাজন ইত্যাদি নাম জাত কোম্পানির মাল উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাটি ধুবুলিয়া থানা নিমতলা এলাকার।
শুক্রবার রাত্রে পুলিশের ইনভেস্টিগেশন ব্রাঞ্চ হানা দিয়ে ওই এলাকায় একটি জায়গা থেকে নকল সামগ্রী তৈরি করার যন্ত্রপাতি ও সমস্ত সামগ্রী তৈরি করা কাঁচা মাল তুলে নিয়ে আসে ধুবুলিয়া থানায়। খবর পেয়ে ঘটনার আগে পলাতক অভিযুক্ত। পুলিশ তার খোঁজ চালাচ্ছে।
তদন্তকারী বলেন, “আমাদের কাছে আগে থেকেই খবর ছিল। তেল থেকে শুরু করে সাবান, গোলাপ জল- এইগুলো নকল করা হচ্ছে বলে খবর ছিল। আসলে এই এরিয়াগুলোতে এই দ্রব্যগুলোর বিক্রি ও দাম দুটোই কমছিল। তা থেকেই তদন্ত শুরু। যেগুলো বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, সেগুলি মোটামুটি আসল জিনিসের মতো দামেই বিক্রি করা হচ্ছিল।”
হলুদ থেকে শুরু করে লঙ্কা, জিরে, এমনকি ধনে গুঁড়োতে মেশানো হত রং, চালের গুঁড়ো। এই অভিযোগ আগেই উঠেছিল। এমনই এক ভেজাল মশলার তৈরির কারখানা সন্ধান মেলে হাওড়ার ডোমজুড়ে। কারখানার হানা দিয়ে এক শ্রমিককে আটক করেছে কলকাতা পুলিসের এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ।
বাজারের পোস্তার নবাব লেন থেকে গ্রেফতার করা হয় রাজেশ শ্ব নামে এক ব্যক্তিকে। তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের আধিকারিকরা। বৃহস্পতিবার হাওড়ার সেই কারখানাতে হানা দেয় কলকাতা পুলিশের ইবি। সেই সময়ও ভেজাল মশলা তৈরির কাজ চলছিল।
ওই কারখানাতে ভেজাল ৬০০কেজি হলুদ গুঁড়ো এবং ৩০০কেজি লঙ্কাগুঁড়ো বাজেয়াপ্ত করে ইবি। সঙ্গে হলুদে মেশানোর জন্য ৭০০কেজি চাল ও লঙ্কা গুঁড়োর সঙ্গে মেশানোর জন্য ৬৫০কেজি কাঠের গুঁড়ো। পাশাপাশি ইন্ডাস্ট্রিয়াল রঙের প্যাকেট বাজেয়াপ্ত করেছেন তদন্ততকারীরা।
ভেজাল মশলা তৈরির পিছনে রাজ্যের একটা বড় চক্র কাজ করছেন বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। যারা ইতিমধ্যেই জালে ধরা পড়েছেন, তারা ছোট মাথা। আসল মাথার খোঁজ পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এই চক্রের চাঁই পর্যন্ত পৌঁছতে চাইছেন তাঁরা।
প্রত্যন্ত জেলায় বিভিন্ন কারখানাগুলিতে এই ভাবেই ভেজাল মশলা তৈরি হচ্ছে। আপাতত একই দিনে হাওড়া ও নদিয়া ধরা পড়ল ভেজাল নিত্য সামগ্রী তৈরির কারখানা। আরও অনেক জায়গাতেই এর জাল বিছিয়ে রয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
আরও পড়ুন: বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরো! এই বুঝি কী হয় কী হয়…মামলার ফাঁসে থমকে বিপজ্জনক বাড়ির সংস্কার