‘কী করে সংসার চালাব জানিনা’ ইয়াস পরবর্তী বিপর্যয়ে গাঙ্গেয় ধসে ডুবল ৩০ টি নৌকা, মাথায় হাত মৎস্যজীবীদের

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রায় ত্রিশ বছর আগে ফরাক্কা ব্যারেজের তত্ত্বাবধানে গঙ্গা বাঁধানো হয়েছিল। তারপর থেকে কোনও রক্ষণাবেক্ষণ নেই।

'কী করে সংসার চালাব জানিনা' ইয়াস পরবর্তী বিপর্যয়ে গাঙ্গেয় ধসে ডুবল ৩০ টি নৌকা, মাথায় হাত মৎস্যজীবীদের
ধস কবলিত এলাকা পরিদর্শনে প্রশাসনিক কর্তারা, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: May 28, 2021 | 6:39 PM

মুর্শিদাবাদ: ঘূর্ণিঝড় ইয়াস (cyclone Yaas) বাংলা থেকে বিদায় নিলেও এখনও অব্যাহত ধ্বংসলীলা। ইয়াসের প্রকোপে গত বৃ্হস্পতিবার থেকে রাজ্যের ছটি জেলায় শুরু হয়েছে বজ্র-বিদ্য়ুৎ-সহ ভারী বৃষ্টিপাত। আর এই বৃষ্টিপাতের জেরে ফরাক্কার রঘুনাথপুরে ধস নেমেছে গঙ্গায়। তলিয়ে গিয়েছে প্রায় ৩০ টি ছোট বড় নৌকা-সহ বেশ কয়েকটি ঘর বাড়ি। ধসে গিয়েছে নদীতীরের অনেকটা জমিও।

ইয়াসের (Cyclone Yaas) প্রকোপে দুই পরগনা, বাঁকুড়া-সহ মুর্শিদাবাদেও যে ভারী বৃষ্টিপাত হবে তার পূর্বাভাস দিয়েছিল আলিপুর আবহাওয়া দফতর। বৃহস্পতিবার থেকে বৃষ্টিপাত শুরুও হয়। শুক্রবার প্রবল বৃষ্টির জেরে দেখা যায় নদীতে ধস নামছে। ফরাক্কার (Farakka Barrage) রঘুনাথপুরে নদীর তীর ঘেঁষে মৎস্যজীবীদের বাস। নদীই তাঁদের জীবন। নৌকাই তাঁদের সম্বল। শুক্রবার নদীতে ধস নামার ফলে ডুবে যায় প্রায় ৩০ টি ছোট বড় নৌকা। এমনকী তিন-চারটি বাস্তুভিটেও চলে যায় নদীগর্ভে। মৎস্যজীবীদের অভিযোগ, ঠিক করে বাঁধ মেরামত হয়নি, এমনকী রক্ষণাবেক্ষণও ঠিক করে হয় না, তার জেরেই এই বিপত্তি।

স্থানীয় এক মৎস্যজীবীর (Fisherman) কথায়, “আমরা নৌকা চালিয়ে মাছ ধরে সংসার চালাই। এখন নৌকাই ডুবে গেল। সংসার কীভাবে চালাব জানি না। বুধবার থেকে ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে ভুগছি। বহুবার আমরা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে জানিয়েছি। এই বাঁধের রক্ষণাবেক্ষণ হয় না। তার জন্যই এত ধস নামছে। ফল ভুগতে হচ্ছে আমাদের।” স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রায় ত্রিশ বছর আগে ফরাক্কা ব্যারেজের তত্ত্বাবধানে গঙ্গা বাঁধানো হয়েছিল। তারপর থেকে কোনও রক্ষণাবেক্ষণ নেই। বারবার প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। তাঁদের দাবি, দ্রুত এই বাঁধের মেরামতি করতে হবে। যাতে এই ধস নামা আটকানো যায়। শুক্রবার সকালে, এলাকা পরিদর্শনে আসেন ফরাক্কা ব্য়ারেজের জেনারেল ম্যানেজার আর.আজহাগেসন। তিনি জানিয়েছেন, এলাকার মানুষদের সঙ্গে কথা হয়েছে। খুব দ্রুত এই মেরামতির কাজ শুরু হবে।

উল্লেখ্য, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস-এর দাপটে রাজ্যে ভেঙেছে প্রচুর নদী ও সমুদ্র বাঁধ। বৃহস্পতিবার নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে সেই বাঁধ ভাঙা নিয়ে সেচ দফতরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। সেচ দফতরের সচিবকে ভৎর্সনার পাশাপাশি কমিটি গঠন করে তদন্তেরও নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরেই সল্টলেকের জলসম্পদ ভবনে বৈঠক সারেন সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। দু’ঘণ্টার বৈঠকে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। সেই কমিটির তত্ত্বাবধানেই দুর্গত এলাকায় কাজ করবে সেচ দফতর এমনটাই জানা গিয়েছে। সেচ দফতর সূত্রে খবর, বর্ষার আগেই এই মেরামতির কাজ শেষ হবে। তার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: বিপদের নাম ব্ল্যাক ফাঙ্গাস! এ বার রামপুরহাটে সংক্রমিত ৮৬ বছরের বৃদ্ধা