ঝাড়গ্রাম: সরকারি চাকরির (government jobs) নামে প্রতারণার অভিযোগ ইদানিং প্রায়শই মিলতে শুরু করেছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। এমতাবস্থায় এবার প্রতারণার অভিযোগে সরাসরি নাম জড়িয়ে গেল সেচ দফতরের। নাম জড়াল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীরও। সূত্রের খবর, সেচ দফতরে চাকরি দেওয়ার নাম করে কয়েক লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠছে জল সম্পদ দফতরের ঝাড়গ্রাম কার্যালয়ের এক কর্মীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত সরকারি কর্মচারীর নাম বিশ্বজিৎ সাহা। তাঁর বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মেদিনীপুর সদর ব্লকের খয়েরুলাচক গ্রামে। তিনি বর্তমানে মেদিনীপুর শহরের পুলিশ লাইন সংলগ্ন মাইকেল মধুসূদন নগর এলাকায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন।
বিশ্বজিৎ সাহার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেচ দপ্তরে চাকরি দেওয়ার নাম করে কয়েক লক্ষ টাকা প্রতারণা করেছেন উত্তর ২৪ পরগনার বারাসাত এলাকার কল্যাণ পুরের বাসিন্দা সায়ন মুখার্জি। সেচ দফতরে চাকরি দেওয়ার নাম করে ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে সায়নের কাছ থেকে ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন বিশ্বজিৎ। কিন্তু, প্রতিশ্রুতি মিললেও মেলেনি চাকরি। অবশেষে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বললেও ফেরত দেওয়া হয়নি। এদিকে সায়নকে চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়ার সময় শুভেন্দু অধিকারীর পরিচয় দিয়েছিলেন বিশ্বজিৎ। সেই সময় শুভেন্দু অধিকারী পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সেচ দফতরের দায়িত্বে ছিলেন।
অভিযোগকারীর দাবি, পরিচয় দেওয়ার সময় অভিযুক্ত নিজেকে শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ট বলে দাবি করেছিলেন। তাতেই সরল বিশ্বাসে টাকা দিয়েছিলেন সায়ন বাবু। কিন্তু, তারপর দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও আর মেলেনি চাকরি। একাধিক টাকা ফেরতের জন্য দরবার করলেও তাতে কর্ণপাত করেননি বিশ্বজিৎ। অবশেষে টাকা ফেরত না পেয়ে সোমবার তিনি কোতয়ালী থানায় বিশ্বজিৎ সাহার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। সেই সঙ্গে মঙ্গলবার ঝাড়গ্রাম শহরে এসে জলসম্পদ দপ্তরের অফিসেও বিশ্বজিৎ সাহার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। ঘটনা প্রসঙ্গে সায়ন বাবু বলেন, “২০২০ সালের ২২ অক্টোবর ওনার সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। তখন তিনি নিজে একজন উচ্চপদস্থ সরকারি আধিকারিক হিসাবে দাবি করেছিলেন। এমনকী তিনি একজন নেতার ছত্রছায়াতে আছেন বলেও জানিয়েছিলেন। তারপরেই চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ২ লক্ষ ১০হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। কথা দেন, ওই বছর ডিসেম্বর মাসের মধ্যে আমার চাকরি হয়ে যাবে। কিন্তু, চাকরি তিনি দিতে পারেননি। এরপরেই ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আমি টাকা ফেরত চাই। মুখে ফেরত দিয়ে দেব বললেও, কোনও টাকা তিনি দেননি। তারপর ওনার বাড়িতে গেলে আমাকে লিখিত ভাবে জানান ২০২২ সালের নভেম্বরের মধ্যে উনি আমাকে টাকা ফেরত দেবেন। কিন্তু, তা না দেওয়াতেই আজ পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছি”।
বিশ্বজিৎ সাহার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে,ঝাড়গ্রামের সেচ দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার অমর মণ্ডল জানান, দীর্ঘদিন থেকেই নাকি আর অফিসে দেখা যায়নি বিশ্বজিৎকে। তবে কেন তিনি দীর্ঘদিন অফিসে আসছেন না তা জানতে চেয়ে তাকে একটি নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলেও তিনি জানান। ইতিমধ্যেই, বিষয়টি দফতরের ঊর্ধ্বতন আধিকারিকরা দেখছেন বলেও জানিয়েছেন। এছাড়াও আরও একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার নাম করে ওই অভিযুক্ত সরকারি কর্মচারি কয়েক লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলেও শোনা যাচ্ছে।