কলকাতা: প্রথম দফা ভোটের (West Bengal Assembly Election 2021) আগে হাতে সময় আর মাত্র চারদিন। এক এক করে আট দফায় আমার-আপনার ভোটে বিধায়ক (MLA) হবেন ২৯৪ জন প্রার্থী। তারপর, সেই প্রার্থীদের কাজের ফলাফলই প্রতিফলিত হবে সাধারণ জনগণের রোজকার জীবনে। তবে পাঠক-দর্শক একটা বিষয়ে বিলক্ষণ জানেন। তা হল, অনেক ক্ষেত্রেই এই জনপ্রতিনিধিদের গায়ে বিস্তর কালির ছিটে থাকে। অনেক প্রার্থীর বিরুদ্ধে গুরুতর ফৌজদারি (Criminal Case) অপরাধের অভিযোগও থাকে।
আসুন দেখে নেওয়া যাক, আসন্ন বিধানসভা ভোটে যাঁরা প্রার্থী হয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কী ধরনের অভিযোগ রয়েছে? কেননা TV9 বাংলা মনে করে, সেই সমস্ত তথ্য জানার ১৬ আনা অধিকার রয়েছে আপনার। কারণ, আপনি ভোটার।
প্রার্থীদের কার বিরুদ্ধে কত অভিযোগ? কার সম্পত্তির পরিমাণই বা কেমন? এই সব তথ্য হলফনামায় উল্লেখ করতে হয় প্রার্থীদের। সেই তথ্য বিশ্লেষণ করে থাকে অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস নামে একটি সংস্থা। বাংলায় সেই কাজে তাদের সঙ্গে রয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল ইলেকশন ওয়াচ। এখনও পর্যন্ত প্রথম দফার ৩০টি আসনের প্রার্থীদের নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনা হয়েছে। সেই রিপোর্টেই উঠে এসেছে কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য।
আসন্ন ভোটে প্রথম দফায় ভাগ্য নির্ধারণ হবে ১৯১ জন প্রার্থীর। তাদের বেশিরভাগের বিরুদ্ধেই রয়েছে একাধিক ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ। উপরিউক্ত দুই সংস্থার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রথম দফার মোট ১৯১ প্রার্থীর মধ্যে ফৌজদারি মামলা রয়েছে ৪৮ জনের বিরুদ্ধে। শতাংশের হিসেবে যা মোট প্রার্থীর ২৫ শতাংশ।
দলগত ভাবে হিসাব করলে যে ছবিটা উঠে উঠে আসে তাও নজর কেড়েছে। সবচেয়ে বেশি ফৌজদারি মামলা রয়েছে রাজ্যের দুই বিরোধী দলের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে। জানা যাচ্ছে, সিপিএমের ৫৬ শতাংশ প্রার্থীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। বিজেপির ৪১ শতাংশ প্রার্থীর বিরুদ্ধে রয়েছে ফৌজদারি অভিযোগ। অন্যদিকে, শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের ৩৫ শতাংশ প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ রয়েছে। কংগ্রেসের ৩৩ শতাংশ প্রার্থী ফৌজদারি মামলায় অভিযোগ রয়েছে।
এসইউসির ১১ শতাংশ প্রার্থীর বিরুদ্ধেও রয়েছে ফৌজদারি অভিযোগ।
আরও পড়ুন: পিকে-র ‘গেম প্ল্যান’! তৃণমূলের একঝাঁক ‘গুপ্তচর’ বিজেপিতে, কান্তির বিস্ফোরক দাবি
এ বার দেখে নেওয়া যাক কোন দলের কত প্রার্থীর বিরুদ্ধে গুরুতর ফৌজদারি মামলার অভিযোগ (খুন, অপহরণ, ধর্ষণের মতো অপরাধ) রয়েছে। দেখা যাচ্ছে, ১৯১ জনের মধ্যে ৪২ প্রার্থীর বিরুদ্ধে রয়েছে গুরুতর ফৌজদারি মামলার অভিযোগ। যা মোট প্রার্থীর ২২ শতাংশ। এই অপরাধের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শাস্তি ৫ বছর বা তার বেশি।
তবে বলে রাখা ভাল, অনেক সময়েই বিরোধীরা শাসক দলের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ তোলেন। বিরোধীদের দিকেও পাল্টা অভিযোগ তোলে শাসকপক্ষ। তবে সেসব বাদ দিলেও যে প্রশ্নটা রয়ে যায় তা হল, ফৌজদারি মামলা থাকা কেউ ভোটে দাঁড়ালে তা কি গণতন্ত্রের পক্ষে খুব সুখকর? এমন দিন কি আসবে না যেদিন প্রার্থীর গায়ে কালির ছিটে থাকবে না?
আরও পড়ুন: গত এপ্রিলের থেকেও বেশি সংক্রামক করোনা, চিন্তা বাড়াচ্ছে ‘আর’ ফ্যাক্টর