জলপাইগুড়ি: খুলতে না খুলতেই ফের বন্ধের মুখে ডুয়ার্সের (Dooars) পর্যটন শিল্প, বন্ধ জঙ্গলে প্রবেশ। করোনা (Corona) পরিস্থিতিতে দীর্ঘ প্রায় এক বছর ধরে বন্ধ ছিল ডুয়ার্সের এলিফ্যান্ট সাফারি। সাফারি চালু হতে না হতেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে (Corona Second Wave) ফের জঙ্গলে প্রবেশ বন্ধের নির্দেশিকা জারি হল।
রাজ্যজুড়ে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। ইতিমধ্যে আংশিক লকডাউন ঘোষণা হয়েছে রাজ্যে। এবার সরকারি নির্দেশ অনুসারে মঙ্গলবার থেকে বন্ধ হয়ে গেল অভয়ারণ্য, ইকো ট্যুরিজম, ব্যাঘ্র সংরক্ষণ বনাঞ্চল এবং চিড়িয়াখানা। অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হল ডুয়ার্সের গরুমারা ও চাপরামারি অভয়ারণ্যে পর্যটকদের প্রবেশ। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ডুয়ার্সের পর্যটন ব্যবসা।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ফের জঙ্গলে প্রবেশ বন্ধের এই নির্দেশিকায় কার্যত মাথায় হাত পড়েছে বহু ব্যবসায়ীর। বন দফতরের এই নতুন নির্দেশিকায় ডুয়ার্সের লাটাগুড়ি, মূর্তি, বাতাবাড়ি, ধুপঝোরা, মঙ্গলবাড়ি, মাথাচুলকা, চালসা-সহ বিভিন্ন এলাকার পর্যটন ব্যবসায়ীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ।
মূর্তি জিপসি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক মজিদুল আলম বলেন, “অনিদিষ্টকালের জন্য জঙ্গল বন্ধ হওয়ার ফলে জিপসি চালক, ট্যুরিস্ট গাইডরা আবার কর্মহীন হয়ে পড়লেন। অনেকেই ব্যাঙ্ক ও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে জিপসি কিনেছেন। এঁদের রুজি-রোজগারের কী হবে?” তিনি প্রশ্ন তোলেন, বাজারের ক্ষেত্রে যদি আংশিক লকডাউন করা হয়, তবে জঙ্গলের ক্ষেত্রে কেন করা হবে না? এতে অন্তত জিপসি চালক, ট্যুরিস্ট গাইডদের রোজগারের জায়গাটা একেবারে বন্ধ হত না।
গরুমারা ট্যুরিজম ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দেবকমল মিশ্রের কথায়,”এমনিতেই তো ১৫ জুন থেকে বর্ষার জন্য তিন মাস জঙ্গল বন্ধ হয়ে যায়। তার মধ্যে কোভিডের জন্য অনির্দিষ্টকালের জন্য জঙ্গল বন্ধ হওয়ায় জঙ্গলকেন্দ্রিক ডুয়ার্সের পর্যটন ব্যবসা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ল।” এই অবস্থায় সরকারি সাহায্যের আবেদন জানিয়ে তিনি বলেন, “এই পরিস্থিতিতে পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীদের জন্য অন্য কোনও ব্যবস্থা করা হোক।”
আরও পড়ুন: প্রাক্তন মন্ত্রীর হাত ধরে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ! এবার সেই নেতার বাড়িতেই বেপরোয়া ভাঙচুর, লুঠপাট
সংগঠনের সদস্য শেখ জিয়াউর রহমান জানান, “এমনিতেই করোনার জেরে মূর্তি-সহ সংলগ্ন বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটক আসা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তবু একটু একটু করে সচল হচ্ছিল। কিন্ত জঙ্গল বন্ধের নির্দেশের ফলে তাও বন্ধ হয়ে গেল। গত বছরের ক্ষতি এখনও পূরণ হয়নি তার ওপর ফের জঙ্গল বন্ধ হয়ে গেল!”