AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Gold Coin: নদীর চরের বালি সরালেই উঠে আসছে সোনার মোহর! শোরগোল বীরভূমে

আকারে খুবই ছোট, অবিকল মোহরের মতো দেখতে ওই গোলাকার ধাতুর উপর কিছু আঁকা রয়েছে। সেটি প্রাচীন কোনও লিপি বা কোনও অক্ষর হতে পারে বলে গ্রামবাসীর প্রাথমিক অনুমান।

Gold Coin: নদীর চরের বালি সরালেই উঠে আসছে সোনার মোহর! শোরগোল বীরভূমে
বীরভূমে বাঁশলই নদীর চর থেকে উদ্ধার সোনার মুদ্রা।
| Edited By: | Updated on: Mar 17, 2023 | 8:16 PM
Share

মুরারই: সোনার নদী! যেমন নাম, তেমন কাজ। নদীর চরের বালি সরালেই উঠে আসছে সোনার মোহর (Gold Coin)। শুনতে অবাক লাগছে? কিন্তু, ঝাড়খণ্ড ও বীরভূমের সীমানা লাগোয়া সুবর্ণরেখা নদীর (Subarnarekha river) শাখা নদীতে নাকি এমনই ঘটনা ঘটেছে। সুবর্ণরেখার শাখা, বাঁশলই নদীর চর থেকে উদ্ধার হচ্ছে একের পর এক ‘সোনার মোহর’। অন্তত গ্রামবাসীর এমনই দাবি। মাটি খুঁড়লেই বেরিয়ে আসছে মহামূল্য এই হলুদ ধাতু। ফলে গত তিনদিন ধরে বাঁশলই নদীর চরে সোনার মোহরের খোঁজে নেমেছে এলাকার আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা।

ঘটনাটি ঠিক কী? জানা গিয়েছে, ঘটনাটি বীরভূমের (Birbhum) মুরারই থানার পারকান্দি গ্রামের। পারকান্দি পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সুবর্ণরেখার শাখা, বাঁশলই নদীতে গত তিনদিন আগে নদীতে বালি তুলতে গিয়ে এক ব্যক্তি বেশ কয়েকটি সোনার মোহর সদৃশ ধাতব কিছু পান। তারপর ঘটনাটি জানাজানি হতেই সেখানে ভিড় জমে যায় গ্রামবাসীর। সেটি ‘সোনার মোহর’ বলেই দাবি গ্রামবাসীর। তাই সোনার মোহর পেতে নদীর চরে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করেছেন গ্রামের বাচ্চা থেকে বুড়ো। সকলের ভাগ্যে যে শিকেয় ছিঁড়ছে তা নয়। বালি খুঁড়ে কেউ মোহর পাচ্ছেন, আবার কেউ পাচ্ছেন না। তবু মহামূল্য সোনা পাওয়ার আশায় গ্রামের বহু মানুষই ঘরের কাজ ফেলে দিনভোর নদীর চরে পড়ে রয়েছেন। স্থানীয় এক যুবকের কথায়, “দু-দিন আগে একজন নদীর চরে বালি তুলতে গিয়ে সোনার মোহর পেয়েছিলেন। তারপর মোহর পেতে গ্রামের অনেকেই তিনদিন ধরে নদীর চরে বালি খুঁড়তে শুরু করেছেন। তাঁদের অনেকেই লাভবান হয়েছেন। সেসব শুনে আজ আমিও এসেছি।”

সত্যিই কি সোনার মোহর উঠছে? বাঁশলই নদীর চরে বালির নীচে থেকে উঠে আসছে গোলাকার মোহরের (Gold Coin) মতো দেখতে হলুদ ধাতু। আকারে খুবই ছোট, অবিকল মোহরের মতো দেখতে ওই গোলাকার ধাতুর উপর কিছু আঁকা রয়েছে। ঠিক কী আঁকা রয়েছে তা স্পষ্ট নয়। তবে সেটি প্রাচীন কোনও লিপি বা কোনও অক্ষর হতে পারে বলে গ্রামবাসীর প্রাথমিক অনুমান। আর সেটা থেকেই এগুলি প্রাচীন আমলের সোনার মুদ্রা বলে দাবি পারকান্দি গ্রামের বাসিন্দাদের। এপ্রসঙ্গে প্রাচীন ইতিহাসও তুলে ধরছেন অনেকে।

বাঁশলই নদীর চর থেকে সোনা উদ্ধারের পিছনে কী ইতিহাস রয়েছে? ভৌগোলিক অবস্থান অনুসারে, ঝাড়খণ্ড ও বীরভূম সীমানার মধ্যে দিয়ে বয়ে গিয়েছে সুবর্ণরেখা নদী (Subarnarekha river)। আর সুবর্ণরেখা নদীর শাখানদী হল বাঁশলই। সুবর্ণরেখা নদীর তীরে একসময়ে ঝাড়খণ্ড রাজবাড়ি ছিল। যা বর্তমানে নদীগর্ভে নিমজ্জিত। ফলে সেই রাজবাড়িতে গচ্ছিত মোহর কোনভাবে সুবর্ণরেখা নদীর মাধ্যমে ভেসে বাঁশলই নদীতে চলে এসেছিল এবং নদীগর্ভেই সঞ্চিত হয়। এখন নদীর জল সরে যাওয়ায় ওই সমস্ত মোহর ভেসে আসছে। আবার অনেকের মতে, সুবর্ণরেখা নদীর মাধ্যমে একসময়ে ব্যবসা-বাণিজ্য হত। প্রাচীনকালে কেউ বাণিজ্য করতে যাওয়ার সময় নৌকাডুবির কবলে পড়তে পারেন এবং তাঁর সমস্ত মোহর নদীবক্ষে চলে যায়। সেগুলিই এখন উঠে আসছে। সেজন্য ওই মোহরে বিশেষ লিপি বা চিহ্ন রয়েছে বলেও গ্রামবাসীর দাবি।

কিন্তু, যদি সত্যিই নদীর চর থেকে প্রাচীন মুদ্রা বা সোনার মোহর উদ্ধার হয়, তাহলে প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ করবে না? এমন প্রশ্নও উঠছে। যদিও ঘটনা ঘটে চলার তিনদিন পরেও এলাকায় প্রশাসনের কাউকে দেখা যায়নি। বিষয়টি জল্পনা বলে দাবি বিশ্বভারতীর ইতিহাসের অধ্যাপক বিদ্যুৎ পাতারের। তবে বীরভূম জেলা তৃণমূল নেতা মলয় মুখোপাধ্যায় জানান, বাঁশলই নদীর চর থেকে সোনার মোহর উদ্ধারের যে খবর শোনা যাচ্ছে, সেটা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। প্রশাসন গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। শেষ পর্যন্ত, এই সোনার মোহরের রহস্য কবে উদ্ঘাটন হয়, সেটাই দেখার!