হুগলি: অমানবিক। পিতা-মাতা হীন ১৪ বছরের নাবালিকার পিঠে খুন্তির ছ্যাঁকা দেওয়ার অভিযোগ উঠল কাকিমার বিরুদ্ধে। গোঘাট থানার পুলিশ অভিযুক্ত কাকিমা সারদামণি চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছে। অনাথ নাবালিকাকে পুলিশ উদ্ধার করে চিকিৎসা করায় ও মামা বাড়িতে পৌঁছে দেয়। নাবালিকার পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।
বছর চোদ্দোর ওই নাবালিকার বাবা তন্ময় চট্টোপাধ্যায় বেশ কয়েক বছর আগেই দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন। মা ১০ বছর আগেই বাড়ি ছেড়েছেন। নাবালিকা তার দাদু ঠাকুমার কাছে থাকত। কিন্তু কয়েক বছর আগে মৃত্যু হয় দাদুরও। গোঘাটের ভগবতী বালিকা বিদ্যালয় সপ্তম শ্রেণীতে পড়াশোনা করে নাবালিকা। আর বাড়িতে কাকু কাকিমার ফাইফরমাশ খাটত। দুপুরের খাবারটা স্কুলেই হয়ে যেত। কাকু কাকিমার ভালবাসা সেভাবে কোনওদিনই পায়নি বাচ্চাটা।
প্রতিবেশীরাই জানাচ্ছেন, বাড়ির কাজ থেকে দোকান বাজার সবই এই নাবালিকা মেয়েটিকে দিয়ে করাত। কাজে কোনও ভুল থাকলেই আর জুটত না খাবার। উপোস করে থাকতে হত বাচ্চাটাকে। সৃজনীর বাবা-মা না থাকায় কথায় কথায় মেরে ফেলার হুমকি চলতো। বেধড়ক মারধরের অভিযোগ ওঠে।
প্রতিবেশীরাই জানাচ্ছেন মঙ্গলবার সারাদিন উপোস ছিল নাবালিকা। সারাদিনই খেতে দেয়নি কাকু কাকিমা। বিকালের দিকে খিদেই ছটফট করতে থাকে ছোট্ট মেয়েটা। বাধ্য হয়েই খিদে সহ্য করতে না পেরে ফ্রিজ খুলে দুটি মিষ্টি খেয়ে নিয়েছিল। অভিযোগ, আর তাতেই কাকিমা সারদামনি চট্টোপাধ্যায় ছোট্ট নাবালিকার ওপর অত্যাচার চালায়। মারধরের পাশাপাশি খুন্তি গরম করে নাবালিকার পিঠে ছ্যাঁকা দিয়ে দেয়।
চুপচাপ সেই অত্যাচার সহ্যও করে নেয়। বুধবার নাবালিকা বিদ্যালয়ে যায়। সেখানে বিদ্যালয়ে অসংলগ্ন থাকায় বিদ্যালয়ের শিক্ষিকাদের সন্দেহ হয়। এবং তখনই জানতে পারে এই অবস্থার কথা। পিঠের ফোসকা গলে গিয়েছে ততক্ষণে। ছটফট করতে থাকে নাবালিকাটি। স্কুলের ‘আন্টিদের’ কাছেই গোটা বিষয়টি খুলে বলে। বিদ্যালয়ের তরফেই গোঘাট থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এই ঘটনায় অভিযোগের ভিত্তিতে একাধিক ধারায় মামলার রুজু করেছে। পুলিশ অসহায় নাবালিকা ছাত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছে।