হুগলি: জীবিতকে বলা হয়েছে মৃত। অভিযোগ, তাঁর প্রাপ্য চাকরি দিয়ে দেওয়া হয়েছে অন্যজনকে। আর সেই অন্যজন আরামবাগের তৃণমূল নেতার ভাই বলেও অভিযোগ উঠছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক চাপানউতর শুরু হয়েছে এলাকায়। অভিযোগ, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে জায়গা দান করেন ওই ব্যক্তি। বদলে চাকরি পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা তিনি পাননি। এখন তাঁকে মৃত বলে দাবি করে সেই চাকরি অন্য একজনকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখনও চাকরির জন্য সরকারি দফতরগুলিতে ঘুরছেন ওই ব্যক্তি।
আরামবাগের প্রতাপনগর গ্রামের বাসিন্দা জীবনকৃষ্ণ নাথের দাবি, কয়েক বছর আগে এলাকায় পিএইচই-এর কাজের জন্য জায়গা দেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, এই জায়গার বদলে তাঁদের পরিবারের এক সদস্যকে চাকরি দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। জীবনকৃষ্ণের অভিযোগ, প্রতাপনগর জল প্রকল্প যখন শুরু হয় তখন তাঁকে বা তাঁর ছেলেকে চাকরি দেওয়া হয়নি। বদলে চাকরি পান এলাকার তৃণমূল নেতা সোহরাব হোসেনের ভাই।
জীবনকৃষ্ণের এমনও দাবি, এ নিয়ে কোর্টকাছারি করছেন বলে বাড়ি থেকে উৎখাতেরও চেষ্টা হয়। তিনি এলাকা ছেড়ে চলে যান। অভিযোগ, এরপরই জ্যান্ত জীবনকৃষ্ণ হয়ে যান ‘মৃত’। জীবনকৃষ্ণ বলেন, “আমার প্রাপ্য চাকরি প্রাক্তন প্রধান এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা শেখ সোহরাব হোসেনের ভাই মহম্মদ সিদ্দিকীকে দিয়ে দিয়েছে।”
আরামবাগ সাব ডিভিশন অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার অফিসে এ নিয়ে তিনি জানিয়েছেন। তবে কোনও সমাধানই হয়নি। তবে যাঁর বিরুদ্ধে চাকরি নেওয়ার অভিযোগ সেই মহম্মদ সিদ্দিকীর দাবি, সমস্তটাই মিথ্যা। তিনি যে চাকরি পেয়েছেন, তা তিনি নিজের যোগ্যতায় পেয়েছেন বলে দাবি করেন।
মহম্মদ সিদ্দিকী বলেন, “অপারেটর পদে আমি দীর্ঘদিন ধরেই চাকরি করছি। আমার বেতনও আমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আসে। সমস্ত কাগজপত্র আছে। সরকারি নিয়ম মেনেই সবটা হয়। আর উনি তো আদালতে গিয়েছেনই। সম্মানীয় আদালত নিশ্চয়ই কিছু একটা নির্দেশও দেবে।”
স্থানীয় আরান্ডি-১ গ্রামপঞ্চায়েতের বর্তমান প্রধান তেগদিরা খাতুনকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে, তাঁর বক্তব্য, সদ্য পদে বসেছেন তিনি। এ নিয়ে কিছু জানেন না। তবে জীবনকৃষ্ণ যে বেঁচে আছেন, সে কথা মানছেন তিনি। তেগদিরারও বক্তব্য, আদালতের নির্দেশই শিরোধার্য। তৃণমূল নেতা সোহরাব হোসেনেরও বক্তব্য, সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা।