AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Balagarh: সহবাসে আপত্তি ছিল, ‘পথের কাঁটা’ সরাতে ১০ হাজার টাকার লেনদেন, ওঝা-খুনে গ্রেফতার মহিলা!

Crime: বছর ৪০-এর সুরেন্দ্র ওঝা ছিলেন। গত ৩ অক্টোবর বলাগড় থানার ডুমুরদহ ফুলপুকুর এলাকা থেকে তাঁর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করেন স্থানীয়রা।

Balagarh: সহবাসে আপত্তি ছিল, 'পথের কাঁটা' সরাতে ১০ হাজার টাকার লেনদেন, ওঝা-খুনে গ্রেফতার মহিলা!
ধৃত মহিলা, নিজস্ব চিত্র
| Edited By: | Updated on: Oct 21, 2021 | 10:00 PM
Share

 হুগলি: ভূত ছাড়ানো, তুকতাক করা, ঝাড়ফুঁক ইত্যাদি কাজের বরাত এনে দিতেন সঙ্গী। দু’জন মিলে তার পর ‘খদ্দেরের’ বাড়ি যেতেন। কিন্তু সেই সঙ্গীর এক আত্মীয়ের সমস্যা দূর করতে গিয়ে হিতে বিপরীত করেছিলেন ওঝা। সেই রাগে তাঁকে মদ খাইয়ে ধারাল অস্ত্র দিয়ে তাঁকে খুন (Murder) করেন সাগরেদ। সেই  খুনের (Murder) ঘটনায় মূল কাণ্ডারী এক মহিলাকে গ্রেফতার করল বলাগড় থানার পুলিশ।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, কল্যাণীর মাঝের চরের জদুবাটিতে এক মহিলার সঙ্গে ঝাড়ফুঁক করতে গিয়েই আলাপ হয় ওঝা পুরন্দর চৌধুরীর। মূলত ছেলের চিকিত্‍সা করাতেই পুরন্দরের কাছে গিয়েছিলেন ওই মহিলা। তখনই ধীরে ধীরে তাঁদের মধ্যে একটি সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তার জেরে তাঁদের মধ্য়ে শারীরিক সম্পর্কও হয়। কিন্তু, ছেলে সুস্থ না হওয়ায় সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চান ওই মহিলা। কিন্তু, পুরন্দর তা চাননি। সময়েঅসময়ে তাই ওই মহিলার উপর জোর খাটাতেন পুরন্দর। একাধিকবার জোর করে সহবাসে বাধ্যও করেছিলেন তিনি। অবশেষে  ‘পথের কাঁটা’-কে সরাতে ১০ হাজার টাকা পুরন্দরের সাগরেদ লালটুর হাতে দেন ওই মহিলা। সেই মতোই পরিকল্পনামাফিক খুন করে লালটু।

বছর ৪০-এর সুরেন্দ্র ওঝা ছিলেন। গত ৩ অক্টোবর বলাগড় থানার ডুমুরদহ ফুলপুকুর এলাকা থেকে তাঁর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান রেল লাইনের পাশে এক নয়ানজুলিতে একটি রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখেন তাঁরা। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। বলাগড় থানার পুলিশ এসে সেই মৃতদেহ উদ্ধার করে। তখনও জানা যায়নি মৃতের পরিচয়।

পরে অবশ্য পরিচয় মেলে। জানা যায় আদতে নৈহাটির গড়িফার বাসিন্দা সুরেন্দ্র চৌধুরী ওঝা ছিলেন। ঝাঁড়ফুঁক, তুকতাক করা ছিল তার কাজ। কিন্তু তাঁকে কেন খুন হতে হল? কেই বা হত্যা করতে পারে তাঁকে। তদন্ত নেমে পুলিশ জানতে পারেন কল্যাণীর বাসিন্দা লাল্টু চৌধুরী তাকে বিভিন্ন জায়গায় ওঝার কাজে নিয়ে যেতেন। দু’জনের ভালই বন্ধুত্ব ছিল। একজন কাজের খোঁজ দিতেন, আর অন্যজন ‘অ্যাসাইনমেন্ট’ নিতেন।

গত সোমবার ওঝার সেই সঙ্গী  লাল্টুকেই কুন্তিঘাট থেকে গ্রেফতার করে বলাগড় থানার পুলিশ। ধৃত পুলিশের কাছে খুনের কথা স্বীকারও করে নিয়েছেন বলে জানান হুগলি গ্রামীন পুলিশের ডিএসপি ক্রাইম দেবীদয়াল কুণ্ডু। তাঁকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে ঘটনার দিন অর্থাৎ, ২ অক্টোবর ওঝা সুরেন্দ্রকে ডুমুরদহ নিয়ে যায় লাল্টু। সেখানে মদ খায় দুই বন্ধু। তার পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে সুরেন্দ্রকে খুন করে নয়ানজুলিতে ফেলে দেয় লাল্টু। কিন্তু কেন এই খুন?

পুলিশ তদন্তে নেমে প্রথমে মৃতের পরিচয় জানতে চেষ্টা করেছিল। নৈহাটি থানায় মিসিং ডায়েরির সূত্র থেকে সুরেন্দ্রর খোঁজ মেলে। সুরেন্দ্রর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তিনি কার সঙ্গে মিশতেন, বন্ধু বান্ধব কারা তা জানতে পারে পুলিশ। সেই সূত্র ধরে পুলিশ লাল্টুর খোঁজ পায়। লাল্টুও জেরায় স্বীকার করে খুনের কথা। তিনি জানান, ওঝাগিরি করার জন্য সুরেন্দ্রকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যেতেন তিনিই। ভূত ছাড়ানো থেকে সাপে কাটা, বিভিন্ন সমস্যায় ঝাড়ফুঁক করতেন ওই ওঝা। এরকমই কোনও এক জায়গায় তাঁর পরিচিতের ঝাড়ফুঁক করতে গিয়ে হিতে বিপরীত করে দেওয়ায় রাগের বশে সুরেন্দ্রকে খুন করেন তিনি। পুলিশের কাছে এমনই স্বীকারোক্তি দেন অভিযুক্ত লাল্টু। পরে জেরায়  ওই মহিলার সঙ্গে সম্পর্কের কথা স্বীকার করেন লালটু। তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, ত্রিকোণ প্রেমের সম্পর্কের জেরেই খুন হয়েছেন পুরন্দর।

আরও পড়ুন: North Dinajpur: কে মালিক? সিসিক্যামেরায় মোড়া ক্যাম্পাসে শোভা পাচ্ছে নীলবাতির রহস্যময় গাড়ি!