হুগলি: বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo)-র অতর্কিত বিজেপি (BJP) ত্যাগ এবং তৃণমূলে (TMC) যোগদান নিয়ে রাজনৈতিক তরজা চলছে। তবে বঙ্গ বিজেপি বাবুলের তৃণমূলে যোগদানকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) বাবুলকে রাজনৈতিক পর্যটক (Polital Tourist) বলে কটাক্ষ করেছেন। যার প্রেক্ষিতে পাল্টা খোঁচা দিলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee)। তাঁর কথায়, নিজেদের খোঁড়া গর্তেই পড়তে হয়েছে বিজেপিকে। অর্থাৎ, তাঁর ইঙ্গিত ভোটের আগে যেমন তৃণমূল নেতাদের ভাঙিয়ে যোগদান মেলা করেছিল গেরুয়া শিবির, এখন তার উল্টো ফল ভুগতে হচ্ছে তাদের।
রবিবার শ্রীরামপুরের নগার মোড়ে একটি রক্তদান শিবিরে এসে বিজেপির বিরুদ্ধে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করলেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জি। বাবুল সুপ্রিয় তৃণমূলের যোগ দেওয়া নিয়ে দিলীপ ঘোষের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কল্যাণ বলেন, “এগুলো ওদের ব্যাপার, আমার কমেন্ট করার কিছু নেই। বাবুল সুপ্রিয় তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছে, এখন তৃণমূল কংগ্রেস পরিবারের একজন সদস্য। আজ দিলীপ ঘোষের এসমস্ত কথা বলার জায়গা নেই। একুশের নির্বাচনের আগে ট্রাকে করে, বাসে করে, চার্টার্ড ফ্লাইট পাঠিয়ে তৃণমূল থেকে মন্ত্রী থেকে আরম্ভ করে সবাইকে নিয়ে চলে গিয়েছিল।”
এর পর শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণে নামেন তিনি। বিধানসভা ভোটের আগে শুভেন্দুর তৃণমূল-ত্যাগকে কটাক্ষ করে কল্যাণের মন্তব্য, “এখনকার বিরোধী দলনেতা শুদ্ধ। সেদিন তো উনি বলেননি যে এরা বিজেপিতে আসেছে টুরিস্ট বিজেপি বলে। যে গর্ত করবে সেই গর্তেই তাকে ঢুকতে হবে কিন্তু।” এখানেই থামেননি কল্যাণ। এর পর বারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংকে কটাক্ষ করেন তিনি। উল্লেখ্য, অর্জুন অভিযোগ করেন ভবানীপুরে উপনির্বাচনে বিরোধীদের প্রচার করতে দিচ্ছে না তৃণমূল। সেই প্রসঙ্গে কল্যাণের মন্তব্য, “অর্জুন সিং আয়নায় নিজেকে দেখে, তাই এই সব বলছে। বিজেপি এমনিতেই সাইনবোর্ড হয়ে গেছে আগামী দিনে সারা ভারতবর্ষে সাইনবোর্ড হয়ে যাবে যেভাবে দিদি এগোচ্ছে।”
কল্যাণের কথায়, “২০২১- এ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে নরেন্দ্র মোদী জীবনের রাজনীতির হার সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক হার। বিশ্বের মানুষ দেখেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কীভাবে টক্কর দিয়েছে। বিরোধী রাজনৈতিক দল আজ বিশ্বাস করতে শুরু করেছে যে, সবচেয়ে বেশি মানুষ আস্থা রাখছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর।”
তিনি আরও যোগ করেন নরেন্দ্র মোদীর জামানায় অগণতান্ত্রিক কাজ হয়েছে। মোদীর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য যদি কোন মুখ থাকে সেই মুখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এটা ভারতবর্ষের মানুষ বিশ্বাস করতে শুরু করেছে বলে দাবি কল্যাণের। কল্যাণের দাবি, “দিল্লিতে পর্যন্ত বিজেপির সমর্থক যাঁরা রয়েছেন, যাঁদের দোকান রয়েছে এখানে, ওখানে তাঁরা পর্যন্ত বলছেন বাংলার শেরনি আমাদের নেতাকে রাস্তায় ফেলে দিয়েছে।”
তাহলে বাবুলের পর কি এবার লকেট বা অন্য কেউ দলে যোগ দিতে পারেন? কল্যাণের সাফাই, “আমি এ কথা বলতে পারব না, আমি কোন অ্যাস্ট্রোলজার নই। আর আমি ওত বড় লেভেলে আমার দলে নেই।”
আরও পড়ুন: Rajarhat: ‘বিধায়ক এর মধ্যে ঢুকলেন কেন?’, বিজেপি কর্মীর মৃত্যুতে সিবিআই তদন্তের হুঁশিয়ারি সায়ন্তনের