হুগলি : শরীরটা ভাল নেই বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নানের (Abdul Mannan)। সূত্রের খবর, বিগত কিছুদিন ধরেই ভুগছেন বার্ধক্যজনিত শারীরিক সমস্যায়। খবর পৌঁছেছিল বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) কাছে। বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতাকে দেখতে এদিন সোজা তাঁর বাড়িতে চলে গেলেন দিলীপ। দিলীপ-আব্দুলের সৌজন্য সাক্ষাৎ নিয়ে বর্তমানে জোরদার চর্চা চলছে জেলার রাজনৈতিক মহলে।
সূত্রের খবর, এদিন ব্যান্ডেলে বিজেপির প্রদেশ পদাধিকারীদের বৈঠক ছিল। সেই বৈঠকে যোগ দিতে হুগলিতে গিয়েছিলেন দিলীপ। কাজের ফাঁকে দেখে এলেন আব্দুল মান্নানকে। দীর্ঘদিন বিধানসভার বিরোধী শিবিরের ছিলেন দুজনে। ২০১৬ থেকে ২১ সাল পর্যন্ত রাজ্যের বিরোধী দলনেতা ছিলেন হুগলীর চাঁপদানীর প্রক্তন বিধায়ক আব্দুল মান্নান। ২০১৬ সালের ভোটে বামেদের সঙ্গে জোট বেঁধে লড়েছিল বামেরা। জোট পেয়েছিল দ্বিতীয় স্থান। এরপরই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা হিসাবে দায়িত্ব নেন আব্দুল মান্নান। এদিকে এই সময়সীমার মধ্যে আবার রাজ্যের বিধায় ছিলেন দিলীপ ঘোষ। ফলে বিধানসভায় তাঁদের দেখা হত প্রায়শই।
তারপর গঙ্গা দিয়ে বয়ে গিয়েছে অনেক জল। বিধানসভা ছেড়ে সংসদে ঠাঁই হয়েছে দিলীপের। ২০১৯ সালে ভোটে জিতে সংসদ হন বিজেপির এই বর্ষীয়ান নেতা। একুশের ভোটে আবার রাজ্য়ের প্রধান বিরোধী দলনেতা হিসাবে উঠে আসে বিজেপি। বিধানসভার বিরোধী দলনেতার আসনে বসেন শুভেন্দু অধিকারী। তারপর থেকে দিলীপের সাক্ষাৎ কমেছিল আব্দুল শিবিরের সঙ্গে। তবে তিনি যে প্রাক্তন বিরেধী দলনেতাকে একেবারে ভুলে যাননি তার প্রমাণ মিলল এদিন, এমনটাই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।
এদিকে আবার বছর ঘুরতেই পঞ্চায়েত ভোট। ইতিমধ্যেই রাজ্যের একাধিক সমবায় নির্বাচনে রাম-বাম জোটের কথা শোনা গিয়েছে। তবে কী এবার বিজেপি-কংগ্রেস নতুন সমীকরণের কোনও ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে? দিলীপের উত্তর, “রাজনীতির কথা কম হয়েছে। বাকি ওনার শরীর-স্বাস্থ্যের বিষয়ে খোঁজ নিয়েছি। দুজন নেতার দেখা হলে রাজনীতির ময়দানে চর্চা তো হবেই। বাংলায় তো এটা হয়। তবে রাজনীতির বাইরে কী ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকতে পারে না?”
দিলীপ আরও বলেন, “মান্নানদা আমাদের বাংলার এক বরিষ্ঠ রাজ নেতা। কলেজ জীবন থেকে রাজনীতি করে আসছেন। আমি যখন বিধায়ক হয়ে বিধানসভায় যাই উনি তখন বিরোধী দলনেতা ছিলেন। ওনার হাত ধরে সংসদীয় রাজনীতিতে আমার প্রবেশ। ওনার প্রতি আমার মনে একটা ভালবাসা আছে। বিধানসভায় ওনার সঙ্গে কত গল্প করেছি। এখন আর অতটা দেখা হয় না। আমি দলের কাজে আজ হুগলি এসেছিলাম। ভাবলাম ওনার সঙ্গে দেখা করে যাই। ওনার শরীরের বিষয়ে খোঁজ নেই।” খানিক একই সুর আব্দুলের গলায়। তিনি বলেন, “আমার সঙ্গে সবার সম্পর্ক ভাল। আমি তো আগে জানতাম না উনি আসছেন। সাংবাদিকদের কাছ থেকে তো জানলাম উনি আসছেন। রাজনীতি নিয়ো কোনও কথা হয়নি।”