সিঙ্গুর: সিঙ্গুরের (Singur) বাগডাঙা ছিনামোর কৃষি উন্নয়ন সমিতি। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি সেই সমবায়ের নির্বাচন ঘিরে তীব্র অশান্তির পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। বিরোধীদের অভিযোগ, বহিরাগতদের নিয়ে এসে ভোট লুঠ করা হয়েছিল সেখানে। প্রকৃত সদস্যদের ভোট দিতে বাধা দেওয়া, জোর করে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। সমবায়ে (Cooperative Bank) ৫৭টি আসনের মধ্যে ৫৩টি আসনে প্রার্থী দিতে পারে তৃণমূল সমর্থিতরা। অন্যদিকে চারটি আশনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয় সিপিএম সমর্থিতরা। পরে দেখা যায় ৫৩টি আসনের সবকটিতে জয়ী হয় তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীরা। কিন্তু বোর্ড এখনও গঠন হয়নি। এদিকে নতুন বোর্ড গঠন হওয়ার আগেই দেখা যাচ্ছে অনেক আমানতকারীই নিজেদের গচ্ছিত টাকা সমবায় থেকে তুলে নিচ্ছেন। উল্লেখ্য, ছিনামোর সমবায়ে প্রায় ছয় হাজার আমানতকারী রয়েছেন। কিন্তু কেন হঠাৎ টাকা তুলে নিচ্ছেন তাঁরা?
যে গ্রাহকরা টাকা তুলে নিচ্ছেন, তাঁদের দাবি সমবায় নির্বাচনে ভোট লুঠ করে বোর্ড গঠন হয়েছে। তাই তাঁরা টাকা রেখে আস্থা রাখতে পারছেন না। সেই সংশয় থেকেই গচ্ছিত টাকা তুলে নিচ্ছেন তাঁরা। সমবায়ের প্রাক্তন ডাইরেক্টর সুপ্রতিম বাগ বলেন, ‘যে ভাবে নির্বাচন হয়েছে, তাতে আমানতকারীদের অবিশ্বাস জন্মেছে। যাঁরা নতুন প্রতিনিধি হয়েছেন তাঁদের উপর বিশ্বাস রাখতে না পেরেই টাকা তুলে নিচ্ছেন। সেই টাকা ডাকঘর বা স্থানীয় ব্যাঙ্কে রাখছেন। এতে সমবায়ের ক্ষতি। যদি স্বচ্ছ নির্বাচন হত, আমরা হারলেও মানুষের বিশ্বাসটা থাকত।’ এখনও পর্যন্ত পাঁচ কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি প্রাক্তন ডাইরেক্টরের।
ছিনামোর সমবায়ের ম্যানেজার সন্দীপ কোলেও গ্রাহকদের টাকা তুলে নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘যেসব সদস্য গ্রাহক ভোট দিতে পারেননি, তাঁরা আমার কাছে লিখিত ভাবে জানিয়ে টাকা তুলে নেন। হয়ত নতুন বোর্ডের প্রতি ভরসা নেই তাঁদের।’
এদিকে সমবায়ের এই অবস্থা নিয়ে শাসক দলকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিজেপি শিবির। সিঙ্গুর ব্লকের বিজেপির মণ্ডল সভাপতি সৌমিত্র পাখিরা বলেন, ‘যেভাবে জোর করে সমবায় পরিচালন সমিতি দখল করেছে শাসক দল তাতে মানুষ ভয় পেয়েছে। তাই দু’দশক ধরে তাদের জমানো আমানত তুলে নিচ্ছে। আরো কয়েকশ আবেদনপত্র জমা পড়েছে টাকা তুলে নেওয়ার জন্য। এটা খবুই দুর্ভাগ্যের।’
যদিও সিঙ্গুর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি গোবিন্দ ধাড়া বলেন, ‘সিঙ্গুরে আরও সমবায় আছে এবং তার পরিচালনা করছে তৃণমূল। সেখানে কোনও সমস্যা নেই। তাহলে আস্থা রাখতে পারছে না, এটা ঠিক নয়। যাঁরা টাকা তুলে নিচ্ছেন, তাঁরাই আবার টাকা রাখবেন।’