কলকাতা: টানা চারদিন ধরে জলমগ্ন জেলার পর জেলা। মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। ভারী বৃষ্টি আর ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ায় কার্যত ভাসছে হাওড়া, হুগলি, মেদিনীপুরের ঘাটালের বিস্তীর্ণ অংশ। বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে নদীগুলি। ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। ত্রাণ শিবিরেও ঢুকছে জল। ফলে প্রমাণ গুনছেন দুর্গতরা। কোথাও কোথাও আবার অভিযোগ উঠছে ত্রাণবিলি নিয়ে। সব মিলিয়ে জলযন্ত্রণায় কাবু গ্রাম বাংলা।
বিপদসীমার উপর শিলাবতী নদীর জল। বাঁধ ভেঙে জল ঢুকেছে গ্রামে। ভাসছে রাজ্য সড়ক। মেদিনীপুরের ঘাটাল পুরসভার ১৭টি ওয়ার্ড ও ঘাটাল ব্লকের ১২টি গ্রামপঞ্চায়েত এলাকান জলের তলায়। ডুবে গিয়েছে পাকাবাড়ির একতলা। ছাদের উপর গবাদি পশুর সঙ্গে দিন কাটছে জলবন্দি এলাকার মানুষের। দেখা দিয়েছে খাবার ও পানীয় জলের সমস্যাও। যদিও ঘাটাল মহকুমা প্রশাসন ও ঘাটাল পুলিশ প্রশাসন যৌথভাবে এনডিআরএফ টিমকে কাজে লাগিয়ে দুর্গত এলাকায় গিয়ে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার কাজ করছে।
হাওড়ার আমতার উদয়নারায়ণপুরে ১১টি পঞ্চায়েত এলাকার মধ্যে ১১টিই জলের তলায়। বন্যা পরিস্থিতি উদয়নারায়ণপুরে। আমতা-২ ব্লকের ২৪-২৫টি গ্রাম এখনও জলের তলায়। এলাকার মানুষ সিয়াগুড়ি ব্রিজের উপর অস্থায়ী শিবির তৈরি করে রয়েছেন। শিবিরে গাদাগাদি করে থাকার ফলে কোভিড বিধিও শিকেয়। যদিও দুর্গতরা বলছেন, আগে তো মাথা গোজার জায়গাটুকু হোক। তার পর করোনা নিয়ে ভাবা যাবে। সোমবার ডিভিসির জলে ডুবে যায় আমতা-২ ব্লক। নামাতে হয় নৌকা। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ তাঁরা কোনও ত্রাণ পাচ্ছেন না। শুকনো খাবার, ত্রিপল এমনকী খাবার জলটুকুও পাননি বলে অভিযোগ। যদিও বিডিও জানিয়েছেন, পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
হুগলির খানাকূলে ১২টি গ্রামপঞ্চায়েত জলের তলায়। খানাকূল-২ ব্লক জলে ভাসছে। জলস্তর বাড়ছে রূপনারায়ণ, দ্বারকেশ্বরের। মুণ্ডেশ্বরী দিয়ে ক্রমাগত বইছে ডিভিসির ছাড়া জল। যার জেরে খানাকূলের পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। এরই মধ্যে ত্রাণ নিয়েও ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে অনেকের মধ্যে। রাজহাটি গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান অবশ্য ত্রাণ নিয়ে অভিযোগ সম্পর্কে বলেন, “আমরা যতটা পারছি ত্রাণ পাঠাচ্ছি। বেশির ভাগ জায়গায়ই জলের তলায়। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। ফলে পৌঁছতে সমস্যা হচ্ছে।” আরও পড়ুন: ‘সরকার আশ্বাস দেয় অথচ কথা রাখার বেলায় নেই’, মন্ত্রীর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ ‘কৃষক বন্ধু’ কর্মীদের