Hooghly: ৫ মাস আগে বিয়ে, সিভিক ভলান্টিয়ারের স্ত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার, খুনের অভিযোগ পরিবারের
Hooghly: যদিও শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে রিয়ার শাশুড়ি শোভা সাঁতরার দাবি, "বিয়ের পর থেকেই সাংসারিক অশান্তি লেগে থাকত দু'জনের। গতকাল বৌমা কুন্তীঘাটের কারখানায় কাজে গিয়েছিল। বাড়িতে দীর্ঘক্ষণ ফিরছে না দেখে রাতে ছেলে ফোন করে। বৌমা জানায়, তার ফোনে রিচার্জ ছিল না। তাই সে ফোন করতে পারেনি। এ নিয়ে দু'জনের মধ্যে বচসা হয়।"

বলাগড়: মাস পাঁচেক আগে বিয়ে হয়েছিল। বিয়েতে বরকে ইলেকট্রিক স্কুটি, ল্যাপটপ-সহ নানা সামগ্রী দিয়েছিলেন মেয়ের বাবা। কিন্তু, বিয়ের পাঁচ মাস কাটতে না কাটতেই গৃহবধূর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল শ্বশুরবাড়ি থেকে। মৃতের নাম রিয়া দাস (২৯)। মৃতের বাবার অভিযোগ, রিয়ার স্বামী ও শাশুড়ি তাঁকে মেরে ঝুলিয়ে দিয়েছেন। ঘটনাটি হুগলির বলাগড়ের।
বলাগড়ের রুকেসপুরের বাসিন্দা পেশায় সিভিক ভলান্টিয়ার সুভাষ সাঁতরার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল মগড়ার বিশপাড়ার রিয়া দাসের। মৃতের শ্বশুরবাড়ির দাবি, এদিন সকাল থেকে রিয়ার ঘরের দরজা বন্ধ ছিল। তাঁর স্বামী ও শাশুড়ি ডাকাডাকি করেও কোনও সাড়াশব্দ পাননি। তখন তাঁরা রিয়ার বাপেরবাড়ির লোকজনকে ফোন করেন। এরপরই বাপের বাড়ির লোকজন এসে দরজা ভেঙে দেখেন, ঘরে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়নার ফাঁস দিয়ে ঝুলছেন রিয়া।
তাঁকে উদ্ধার করে জিরাট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয় বলাগড় থানার পুলিশ। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। মেয়ের মৃত্যুর খবর শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন রিয়ার মা ও অন্যরা।

কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মৃতের মা
রিয়ার মাসি বলেন, “আমাদের মেয়েকে এরা মরতে বাধ্য করেছে। দীর্ঘদিন ধরেই রিয়ার উপর মানসিক অত্যাচার চালাত। রিয়াকে সন্দেহও করতেন স্বামী ও শাশুড়ি। তা নিয়ে সাংসারিক অশান্তিও চলছিল। কেন কেউ হঠাৎ করে মরতে যাবে। বাড়িতে মা আর ছেলে ছাড়া কেউ নেই। আমাদের প্রশ্ন, দীর্ঘক্ষণ ধরে কেন দরজা বন্ধ ছিল? কেন প্রতিবেশীদের ডেকে দরজা ভেঙে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়নি? আগেই যদি তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হত, তাহলে মেয়েটা হয়তো বেঁচে যেত।”
মৃতের বাবা দীপক দাস বলাগড় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগপত্রে তিনি লিখেছেন, বিয়ের সময় স্কুটি, ল্যাপট-সহ নানা সামগ্রী দেওয়া হয়েছিল। তারপরও আরও পণের জন্য বিয়ের পর থেকে তাঁর মেয়ের উপর চাপ দেওয়া হত। মেয়ের কাছ থেকে একথা শুনে তাঁরা সুভাষ ও তাঁর মাকে বোঝান। কিন্তু, তাঁরা কোনও কথা কানে দেননি। দীপক দাসের অভিযোগ, তাঁর মেয়েকে খুন করেছেন সুভাষ ও তাঁর মা।
যদিও শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে রিয়ার শাশুড়ি শোভা সাঁতরার দাবি, “বিয়ের পর থেকেই সাংসারিক অশান্তি লেগে থাকত দু’জনের। গতকাল বৌমা কুন্তীঘাটের কারখানায় কাজে গিয়েছিল। বাড়িতে দীর্ঘক্ষণ ফিরছে না দেখে রাতে ছেলে ফোন করে। বৌমা জানায়, তার ফোনে রিচার্জ ছিল না। তাই সে ফোন করতে পারেনি। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে বচসা হয়। আজ সকালে ছেলে মাঠে গিয়েছিল।” তখনই এই ঘটনা ঘটে বলে তিনি দাবি করেন।
হুগলি গ্রামীণ পুলিশের DSP ক্রাইম অভিজিৎ সিনহা মহাপাত্র বলেন, একটা অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে দেহ ময়নাতদন্ত হবে।

