হরিপাল: নিয়োগ কেলেঙ্কারি থেকে কয়লা পাচার, গরু পাচারের অভিযোগে বিদ্ধ রাজ্যের শাসকদলেক একাধিক বড় মুখ। গারদের পিছনে ঠাঁই হয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের (Partha Chatterjee)। জেলে রয়েছেন একাধিক প্রাক্তন আমলা, বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা (Trinamool Congress Leader)। রাজ্যজোড়া এই এই দুর্নীতি দেখেই মন কেঁদে উঠছিল ৭৬ বছরের বাম কর্মী বেচু সাঁতরার। বারো বছর ধরে নিজের চোখের সামনে দেখেছেন তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের দুর্নীতি। পথ খুঁজছিলেন প্রতিবাদের। শেষে এবার বৃদ্ধ বয়সেই রাজনীতির ময়দানে তৃণমূলকে জোর টক্কর দিতে লড়াইয়ের ময়দানে নেমে পড়েছেন বেচুবাবু। হুগলির (Hooghly) হরিপালের সহদেব গ্রাম পঞ্চায়েতের ২০৯ নম্বর বুথে বামেদের গ্রাম সদস্যের প্রার্থী হয়েছেন তিনি।
পেশায় মৃৎ শিল্পী বেচু সাঁতরার উল্টোদিকে তৃণমূল থেকে দাঁড়িয়েছেন পার্থ ঘোষ। তিনি আবার নিজের জয়ের ব্যাপারে একশো শতাংশ নিশ্চিত। স্পষ্টই বলছেন বাম প্রার্থীকে সারা বছর দেখতে পাওয়া যায় না। এখন ভোট আসতেই প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা হয়েছে। প্রার্থীও হয়ে গিয়েছেন। কিন্তু, মানুষ সিরিয়াসলি নেবে না। অন্যদিকে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী বেচুবাবুও। স্পষ্ট জানাচ্ছেন, গরিব মানুষের অধিকার ছিনিয়ে আনতে জিততেই হবে তাঁকে। তাঁর দলের কমরেডরাই বলছেন, বেচুবাবুর রাজনৈতিক বোধ, বচনভঙ্গি, মানসিক দৃঢ়তার নিরিখে এখনও দলের অনেক নবীন সদস্যকে গুনে গুনে গোল দিতে পারেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৬২ সালে প্রথম বাম আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন বেচু সাঁতরা। ১৯৬৮ সালে দলীয় কর্মী হিসাবে যোগ দেন। জ্য়োতি বসু, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যদের বাম আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন। যদিও এখন তিন কাল গিয়ে এক কালে ঠেকেছে। লাল পতাকা হাতে মাঠে-ময়দানে সংগ্রামের দিন এখন অতীত। তবুও রাজ্যজোড়া ভুড়ি ভুড়ি দুর্নীতির অভিযোগ দেখে আর চুপ থাকতে পারছেন না বেচুবাবু। নিজেই বলছেন সে কথা। সে জন্যই দলের নির্দেশ মেনে এবারে লড়ছেন পঞ্চায়েত ভোটে। এদিকে এখনও পর্যন্ত কোনও সরকারি সুযোগ সুবিধা নেননি বেচুবাবু। নেননি রেশনের কম দামের চাল, নেননি বার্ধ্যক ভাতা। থাকেন টালির চাল দেওয়া মাটির ঘরে। প্রতিমা তৈরির পাশাপাশি তৈরি করেন তাল পাতার হাত পাখা, বাঁশের ঝুড়ি। এসব বিক্রি করেই কোনওমতে চলে একার সংসার।