Dilip Ghosh on Anubrata Mondal: ‘কয়লাকাণ্ডে কার নাম রয়েছে, হিম্মত থাকলে অনুব্রত প্রকাশ করুন’
Birbhum: কিছুদিন আগেই অবৈধভাবে কয়লা মজুত করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বীরভূম। পুলিশের সঙ্গে গ্রামবাসীদের খণ্ডযুদ্ধ বাধে। চলে গুলি।
হুগলি: সম্প্রতি বীরভূমের দেউচাপাচামিতে প্রকল্পকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক চর্চা তুঙ্গে। সিঙ্গুরের মতো জোর করে জমি অধিগ্রহণ করা হবে না এমন কথা খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করলেও নিশ্চিত হতে পারেননি পাচামি এলাকার আদিবাসীরা। ফলে, ক্ষোভ বিক্ষোভ লেগেই রয়েছে। এরইমধ্যে কয়লাপাচারকাণ্ডে বিকাশ মিশ্রের স্বাস্থ্য রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে সিবিআই। এ বার, তাই নিয়েই সরাসরি বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে নিশানা করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
বিজেপি সাংসদের কথায়, “অনুব্রত কি কোনওদিন স্পষ্ট করে বলতে পারবেন কয়লা পাচারে কে বা কারা যুক্ত ছিল? আদৌ সেটা কি বলা সম্ভব! কই দেখি তো, হিম্মত থাকলে কয়লাকাণ্ডে কার নাম রয়েছে তা অনুব্রত প্রকাশ করুন। তা কি ওঁ পারবেন? মনে হয় না।”
কিছুদিন আগেই অবৈধভাবে কয়লা মজুত করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বীরভূম। পুলিশের সঙ্গে গ্রামবাসীদের খণ্ডযুদ্ধ বাধে। চলে গুলিও। গুলিবিদ্ধ হন ৪-৫ জন গ্রামবাসী। আহত হন পুলিশ আধিকারিকেরাও। শুক্রবার দুপুরে বীরভূমের খয়রাশোলের নোপাড়া গ্রামে জনতা- পুলিশ খণ্ডযুদ্ধ শুরু হয়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
ঝাড়খণ্ড লাগোয়া লোকপুর থানা এলাকার এই নোপাড়া গ্রামে দীর্ঘদিন ধরেই অবৈধ কয়লা মজুত করার অভিযোগ সামনে আসছিল। ঝাড়খণ্ড থেকে এনে এই কয়লাগুলি মজুত করা হচ্ছিল বলে খবর। শুক্রবার পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকে সেই কয়লা বাজেয়াপ্ত করার জন্য অভিযান চালানো হয়। এরপরই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বেঁধে যায় গ্রামবাসীদের। বেশ কিছুক্ষণ ধরে চলে এই খণ্ডযুদ্ধ। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় প্রায় পাঁচ জন গুলিবিদ্ধ হন।
কয়লা চোরাকারবারিদের আনাগোনা বাড়ছিল ওই নোপাড়া গ্রামে। পুলিশের কাছে খবর আসে, অনেক দিন ধরেই ওই গ্রামের বেশ কয়েকজন চোরাকারবারি ঝাড়খণ্ড থেকে কয়লা নিয়ে আসছেন, সেই কয়লা মজুত করে রাখা হত এই গ্রামে। তারপর সেই কয়লা বীরভূম থেকে রাজ্যের একাধিক জায়গায় পাচার করা হয়। সেই অভিযোগের কথা শুনেই এ দিন আচমকা ওই গ্রামে হানা দেয় পুলিশ। বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে যায়।
একদিকে যখন দেউচাপাচামিকে শিল্পতালুকে পরিণত করার পরিকল্পনা করে রাজ্য সরকার, তখন বারবার বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনা সামনে আসছে। ফলে, থেকে থেকেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে ‘লালভূমের দেশ’। এই পরিস্থিতিতে, কিছুদিন আগেই ভোট পরবর্তী হিংসা তদন্তে সিবিআইয়ের তরফে বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে তলব করা হয়। ‘অসুস্থ’ থাকায় অনুব্রত অবশ্য হাজিরা দেননি।
এদিকে, বীরভূমের ‘বেতাজ বাদশা’ অনুব্রতর চোখ ফাঁকি দিয়ে কার্যত কোনও কিছুই হয় না জেলায়, এমনটাই বলেন বিরোধীরা। গোটা জেলায় শাসক শিবিরই শেষ কথা। কয়লাপাচারের ঘটনাটিও অনুব্রতর অজানা নয় বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। সেক্ষেত্রে পাচামি এলাকা বরাবর কী করে এমন বিক্ষোভ হল তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। বিরোধীদের অভিযোগ, রাজ্যের কয়লা-পাচারকাণ্ডে শাসক শিবিরের বড় বড় নেতার নাম জড়িয়ে। তাই অনুব্রতও এ বিষয়ে বিশেষ মুখ খুলবেন না বলেই দাবি করেছেন দিলীপ।
আরও পড়ুন: Halisahar Blast Case: একা অর্জুন নন! পাশে শুভেন্দু, সিপিএম, হালিশহর বিস্ফোরণকাণ্ডে NIA তদন্তের দাবি