উত্তরপাড়া: নার্সিংহোমে ফেলে চলে গিয়েছে পরিবার। আর নিতে চাইছে না ফেরত। শেষ জন্মদিনেই বৃদ্ধকে নতুন ঘর খুঁজে দিল পুলিশ। হাওড়ার লিলুয়ার বাসিন্দা বছর ষাটের শুভাশিস বক্সির জন্মদিন ২৩ জানুয়ারি। এই দিনই পুলিশকে তাঁর পাশে দাঁড়াতে দেখা সাধুবাদ দিচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এখন থেকে চুঁচুড়ার এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার বৃদ্ধাশ্রমে থাকবে শুভাশিসবাবু। সূত্ররে খবর, গত ২ ডিসেম্বর ওই বৃদ্ধাকে তাঁর বোন উত্তরপাড়া স্টেশনের পাশে একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করে দিয়ে যান। স্নায়ুর সমস্যা ছিল। নার্সিংহোমেই তাঁর অস্ত্রপোচার হয়। কিন্তু, বর্তমানে ভাল হয়ে উঠলেও আর তাঁকে বাড়ির লোকজনেরা ফিরিয়ে নেননি।
বাড়িতে তাঁর স্ত্রী, মেয়ে রয়েছে। কিন্তু, তাঁরা আলাদা থাকেন। অন্য কেউ আর যোগাযোগ না করায় এক মাস ২১ দিন ধরে তিনি উত্তরপাড়ার নার্সিংহোমেই ছিলেন বৃদ্ধা। শেষ পর্যন্ত নার্সিংহোম থেকে পুলিশকে জানানো হয়। এরপরেই চন্দননগর পুলিশের স্পর্শ টিম সোজা চলে আসে নার্সিংহোমে। বৃদ্ধের সঙ্গে কথা বলেন পুলিশের কর্তা। শুরু হয় তাঁর থাকার নতুন ঠিকানা।
উত্তরপাড়া থানার এসআই কৃষ্ণধন চট্টোপাধ্যায় বলছেন, “নার্সিংহোম থেকেই পুলিশকে জানানো হয়েছিল। তারপরই আমরা ঘটনাটা খতিয়ে দেখি। দেখা যায় পরিবারের লোকজন ওনাকে আর ফেরাতে চাইছেন না। এরপরই আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টা জানাই। বৃ্দ্ধাশ্রমের খোঁজ চলে। অনেক চেষ্টার পর চুঁচুড়ায় একটা বৃদ্ধার খোঁজ মেলে।”
পুলিশের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা। এক স্থানীয় বাসিন্দা বলছেন, “খুবই ভাল কাজ হল। শেষ পর্যন্ত একটা বৃদ্ধাশ্রম পেলেন। একটা থাকার জায়গা পেলেন। আশা করি এবার উনি ভালভাবে থাকতে পারবেন। তবে সমাজ এখন যেদিকে যাচ্ছে তা খুব একটা ভাল নয়। অনেক ছেলেমেয়েই মা-বাবকে একা বাড়িতে রেখে বাইরে চলে যাচ্ছে। অনেকে ফ্ল্যাটের মধ্যেই মারা যাচ্ছেন। এ ঘটনাও বারবার দেথা যাচ্ছে। আমরা যদি সবাই এই বিষয়গুলি ভেবে দেখি। তাহলে হয়তো সমাজটা একটু বদলাতে পারে।”