হুগলি: জেলা শাসক দফতরে দ্বিতীয় দিনের বৈঠকে বেরল সমাধান সূত্র। ধনিয়াখালির বলাকা হিমঘরের সমস্যা মিটল সেই ক্ষতিপূরণের প্যাকেজে। ধনিয়াখালির বলাকা হিমঘরে রাখা বেশ কিছু আলুতে পচন ধরে কয়েকদিন আগে। যা নিয়ে বিক্ষোভ হয় চাষি ও সংরক্ষণকারীদের মধ্যে। আলুর ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এই দাবিতে অনড় থাকেন চাষিরা। হিমঘর কর্তৃপক্ষ প্রথমে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিলেও পরে পিছু হটে।প্রতিবাদে হিমঘর সিল করে দেন সংরক্ষণকারীরা। হিমঘরে থাকা ৫৪ হাজার বস্তা আলু নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। দ্রুত পদক্ষেপ করেন জেলাশাসক পি দীপাপ প্রিয়া।পুলিশ পাঠিয়ে হিমঘর খুলে দেন। সমস্যা মেটাতে চুঁচুড়ায় তাঁর দফতরে সব পক্ষকে বৈঠকে ডাকেন জেলা শাসক। গত ২৬ তারিখের সেই বৈঠকে হিমঘর কর্তৃপক্ষ জানায় তারা আলুর ভাড়া বাবদ ১০০ টাকা ও অতিরিক্ত আরও ৫০ টাকা ছাড়তে পারে।সংরক্ষণকারীরা তা মানতে চায়নি। প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টার বৈঠকে রফাসূত্র মেলেনি সেদিন।
বৃহস্পতিবার আবার বৈঠক ডাকেন জেলা শাসক। কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্না, ধনিয়াখালির বিধায়ক অসীমা পাত্র, জেলা শাসক, মহকুমা শাসক, হিমঘর কর্তৃপক্ষ, সংরক্ষণকারী, আলু ব্যবসায়ী সমিতি এবং ধনিয়াখালি পঞ্চায়েত সমিতির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে বেচারাম মান্না ও অসীমা পাত্র বলেন, “সমস্যা মিটে গিয়েছে। আমরা আগের দিন আলোচনা করে অনেকটাই এগিয়ে রেখেছিলাম। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, বড় আলু সাড়ে ৪০০ টাকা, মাঝারি আলু ৩০০ টাকা বস্তা দেবেন হিমঘর কর্তৃপক্ষ। কেট আলুর ভাড়া হিমঘর নেবে না।”
আগামী সাত দিনের মধ্যে চাষিরা, তাঁদের আলুর বন্ড জমা দেবে। হিমঘর চাষিদের অ্যাকাউন্ট টাকা পাঠিয়ে দেবে। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে গোটা বিষয়টা মেটাতে হবে।
আলু সংরক্ষণকারী ও চাষিরা তাতে কিছুটা হলেও আশাবাদী। আলুর বন্ড ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আলুর দাম ক্রমশ নিম্নমুখী। আলু হিমঘরে মজুত করার সময় যা দাম ছিল তার তুলনায় এখন অনেকটাই কম।
তবুও বর্তমান বাজার মূল্যে ক্ষতিপূরণ পাওয়ায় লোকসান হলেও মেনে নিতে হচ্ছে বলেন চাষি সেখ সৌকত আলি। রাজ্য আলু ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায় বলেন, “চাষিদের আলু হিমঘর কর্তৃপক্ষ নিয়ে বিক্রি করবে।একটু সমস্যা হবে তবে বিক্রি হয়ে যাবে। হিমঘরে আলু রাখার ক্ষেত্রে চাষিরা ভয় পেতে পারে তবে ব্যবসায়ীদের দিক থেকে আমরাও বিষয়টা বোঝাব। তবে প্রতিবছর এই ঘটনা হবে ভাবার কোনও কারণ নেই।”
প্রশাসনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত মেনে নিতে বাধ্য হয়েছেন হিমঘর কর্তৃপক্ষ। ডাইরেক্টর নিখিল সিংহ রায় বলেন, “আমরা প্রশাসনের বিরুদ্ধে কিছু বলব না।তবে সব আলুতো খারাপ হয়নি তা সত্ত্বেও সব আলুর দাম দিতে হবে।আসলে বাজারে অনেক ধার দেনা থাকে সেগুলো তুলতে হবে। যে আলুতে দাগ এসেছে তার দাম নিলে বোধ হয় ভালো হত।”