হুগলি: স্কুলে যাওয়ার একটাই পথ। সরু রাস্তা, তার একপাশে স্কুলের ভবন, অন্যপাশে ভাগাড়। নিয়মিত এই নোংরার আড়ত পার করেই স্কুলে যেতে হয় ছেলে মেয়েদের। কেউ দেখারও নেই, কেউ বলারও নেই, অভিযোগ অভিভাবকদের। তাঁরা বলছেন, পচা গন্ধে টেকা দায়। বাচ্চাগুলো মিড-ডে মিল খায়। বোঁটকা গন্ধ ভাসতে থাকে চারপাশে। ব্যান্ডেল বিদ্যামন্দির নিম্ন বুনিয়াদি প্রাথমিক বিদ্যালয়। তার সামনেই আবর্জনার স্তূপ।
অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে নোংরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যেই ছেলে মেয়েরা স্কুল করছে। এই যন্ত্রণা চরমে ওঠে বর্ষাকাল এলে। জমা নোংরা ভেসে আসে মাঝ রাস্তায়। অভিভাবকদের অভিযোগ, বর্ষায় বাচ্চারা স্কুলে যেতে পর্যন্ত চায় না। স্কুল ছাড়িয়ে বাচ্চাদের অন্য স্কুলে নিয়ে চলে যাবেন বলেও ঠিক করেছেন কয়েকজন।
এই স্কুলে প্রায় সাড়ে ৩০০ বাচ্চা পড়ে। শিক্ষক-শিক্ষিকা ১২ জন। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সীমা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “আমাদের ইচ্ছে ছিল মাঠটা যাতে বাচ্চারা ব্যবহার করতে পারে। এত নোংরা, জঞ্জাল এখানে যেটা দেখলে খারাপই লাগে। আমি এক সময় পরিষ্কারও করিয়েছি। ব্যান্ডেল পঞ্চায়েত ও মগরা বিডিও অফিসে আমাদের শিক্ষক শিক্ষিকারা, অভিভাবকরা পর্যন্ত গেছি।” জেলাশাসক পি দীপাপ প্রিয়া জানান, বিষয়টা তাঁর নজরে এসেছে। কোনওভাবেই যাতে অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতিতে বাচ্চাদের পড়াশোনা করতে না হয় সেই দিকটা দেখবেন।
স্কুলের সামনে এই অবস্থা। সাপ, পোকামাকড়ের ভয় আছে। যে কোনও সময় বিপদে পড়তে পারে বাচ্চারা। কিন্তু কোনও সুরাহাই মেলেনি। পরে পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসন থেকে আবর্জনা ফেলে নীচু জমি ভরাট করবে বলা হয়। সেই কাজ তিন মাসে শেষ করার কথা ছিল বলে স্কুল সূত্রে খবর। তবে সে কাজ হয়নি এখনও। এ প্রসঙ্গে চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার বলেন, রেলের জমিতে এই স্কুল। খুবই নীচু জায়গায় অবস্থিত। দীর্ঘদিন ধরে রেল কোনও রক্ষণাবেক্ষণ করে না। প্রাইমারি স্কুলটা তো জলের তলাতেই ছিল। এক সময় হাইস্কুলেও ক্লাস হয়। পরে শিক্ষাদফতরের কারণে চলাচলের রাস্তা উঁচু করে একটা আলাদা ভবন করে খোলা হয়। জমিটা নীচু হওয়ার কারণে সমস্যা থেকেই গিয়েছে।