হুগলি: পাড়ার ক্লাবকে দিতে হবে মোটা অঙ্কের টাকা। আর তা দিতে না পারায় কাউন্সিলর গিয়ে চড়াও হলেন সোজা যুবতীর বাড়িতে। এরপর সেই ঘটনা যখন ওই যুবতী ফেসবুক লাইভ করতে যান তখনই তাঁর হাত থেকে ফোন কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি শারীরিক নিগ্রহ করা হয় যুবতীকে। গোটা ঘটনায় চুঁচুড়া থানার দ্বারস্থ নিগৃহীতা। অন্যদিকে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার তৃণমূল কাউন্সিলরের।
হুগলি চুঁচুড়া পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের পীড়তলা এলাকার বাসিন্দা সঙ্গীতা দাস। বছর দু’য়ের ধরে সঙ্গীতা তাঁর ভাইকে নিয়ে বসবাস করেন।সঙ্গীতার বাবা সঞ্জিত ও মা রীতা দাস চুঁচুড়া স্টেশনের কাছে সিঙ্গীবাগানে থাকেন। ওই যুবতীর অভিযোগ, মঙ্গলবার সকালে তাঁর বাড়িতে বেশ কয়েকজন লোক চড়াও হয়। তাদের সঙ্গে ছিলেন ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অর্পিতা সাহা। বাড়িতে আসার পরই কাউন্সিলর অর্পিতা যুবতীকে প্রশ্ন করেন, “পুরসভার অংশ ঢালাই করেছে কেন? ঘরের মধ্যে এত বিড়ালই বা রয়েছে কেন?” সঙ্গীতার অভিযোগ, আদতে টাকার জন্য চাপ দিতেই তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়েছে তৃণমূল কর্মীরা।
স্থানীয় তরুণ সংঘ ক্লাবের সদস্য জয়দীপ বিশ্বাস (ভোম্বল)। সঙ্গীতার কাছ থেকে দুই ধাপে পঞ্চাশ হাজার টাকা নেয়। আরও টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। টাকা না দিলে ব্যবস্থা নেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়। সূত্রের খবর, কয়েকদিন আগে ক্লাব সদস্যরা সঙ্গীতার বাড়ির দেওয়াল ভেঙে দেয়। বাড়িতে নোংরা আবর্জনা ফেলে দেয়।
এরপর আজ অর্পিতা সাহা লোকজন নিয়ে বাড়িতে ঢুকে হেনস্থা করেন। সেই ঘটনা ফেসবুক লাইভ শুরু করেন সঙ্গীতা। তখনই তাঁর ফোন কেড়ে নিয়ে আছাড় মারা হয় বলে অভিযোগ। যারা তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়েছিল তাঁরাও ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দিয়ে যায়। এরপর সঙ্গীতা ও তার মা-বাবাকে নিয়ে চুঁচুড়া থানায় অভিযোগ জানান।
অভিযুক্ত তৃণমূল কাউন্সিলর অর্পিতা সাহা বলেন, “ওদের বাড়ির বিড়ালের জন্য এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ।দুর্গন্ধ আর বিড়ালের কান্নায় দরজা জানলা খুলতে পারে না প্রতিবেশিরা। আমাকে বলার পর আজ দেখতে আসি।বাড়ির সামনের জায়গা জবর দখল করে রেখেছে। সেটা জিজ্ঞাসা করতেই যা নয় তাই বলল। একজন কাউন্সিলরকে সামান্য সম্মানটুকু দিতে জানেনা। টাকা নেওয়ার বিষয় আমার জানা নেই। টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেন ভোম্বলও।”
সঙ্গীতার অভিযোগ চুঁচুড়া বিধায়ক অসিত মজুমদারের কাছে পৌঁছনোর পর বিধায়ক বলেন, “বেআইনি কাজ কেউ করলে তা দেখার জন্য প্রশাসন আছে। আইন হাতে নেওয়া যাবে না। যত বড় নেতাই হোক দোষ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে পুলিশ। আমি আইসি চুঁচুড়া ও সিপি চন্দননগরকে অভিযোগ পত্র পাঠিয়ে দিয়ে বলেছি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে।”