আরামবাগ: ‘বুক পেতেছি গুলি কর/ জাস্টিস ফর আরজি কর।’ ‘ছাত্র-যুবর একই স্বর/ জাস্টিস ফর আরজি কর।’ এবার কী তাহলে ওপার বাংলার আন্দোলন থেকে অনুপ্রাণিত হচ্ছে এপার বাংলার পড়ুয়ারাও? তিলোত্তমা কাণ্ডের প্রতিবাদে এমন স্লোগান দেখে এই প্রশ্ন আসছে অনেকের মনেই। শুধু তাই নয়, উঠল আজাদি স্লোগানও। শহর-শহরতলির পর এই স্লোগান উঠল একেবারে প্রত্যন্ত গ্রামে। রবিবার আরজি করের ঘটনায় বিচারের দাবিতে পথে নামে আরামবাগের প্রত্যন্ত গ্রাম কানপুরের পড়ুয়ারা। মিছিল বের হয়। সেখান থেকেই উঠল এই সব স্লোগান। মিছিলকে কেন্দ্র করে আবার রীতিমতো উত্তেজনাও ছড়ায় এলাকায়। অভিযোগ, পড়ুয়াদের মিছিল ঘেরাও করে ফেলে শাসকদলের লোকজন। তাঁদের হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ।
উত্তেজনার খবর যায় পুলিশের কাছেও। শেষ পর্যন্ত পুলিশ গিয়ে তাঁদের ঘেরাও মুক্ত করে। যদিও মিছিল থেকেই বাংলার আইন-শৃঙ্খলার অবনতি নিয়ে সরব হতে দেখা যায় আন্দোলনকারীদের। একযোগে সকলেই বলছেন, পড়ুয়াদের প্রতিবাদের ভাষা কেড়ে নিতে চাইছে শাসক। বিদ্যালয়গুলিতে নির্দেশিকা পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু এভাবে আন্দোলন দমানো যাবে না।
সুর চড়িয়েছে বামেরাও। এ প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা বিপ্লব কুমার মৈত্র বলছেন, “আসলে স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে সরকার যে কোনও আন্দোলনে দমিয়ে দিতে চাইছে। তাঁদের নেতা-মন্ত্রীরা আঙুল ভেঙে দেওয়ার নিদান দিচ্ছে। হুমকি দিচ্ছে। কিন্তু, আন্দোলনকে দমিয়ে রাখা যাবে না। এই আন্দোলন আরও তীব্র আকার ধারণ করবেই।” সুর চড়িয়েছে বিজেপিও। মাধবপুর অঞ্চল বিজেপি নেতা সায়ন রায় বলছেন, “হঠাৎ তৃণমূলের কিছু দুষ্কৃতী এসে ওদের উপর চড়াও হয়। কেন জাস্টিস ফর আরজি কর বলা হবে সেই প্রশ্ন তোলে। তা দেখে এলাকার লোকজন ক্ষেপে যায়। বচসা তৈরি হয়। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আসলে তৃণমূল পাবলিকের মুখ বন্ধ করে দিতে চাইছে। তাই এসব হচ্ছে।”
তৃণমূলের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা চেয়ারম্যান স্বপন নন্দী যদিও ঘেরায়ের অভিযোগ মানতে চাননি। তিনি বলছেন, “সবই বিরোধীদের চক্রান্ত। তাঁরাই পড়ুয়াদের উস্কানি দিচ্ছে। ওরা কী চাইছেন বাংলাটা বাংলাদেশ হয়ে যাক?” পাল্টা আরামবাগের বিজেপি বিধায়ক মধূসূদন বাগ বলছেন, “শাসকদলকে এই আন্দোলনকে দমন করার জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে। মাধবপুরের কানপুরে আজ পড়ুয়াদের আন্দোলনকে বানচাল করার জন্য কৌশল নিয়েছিল। যা অত্যন্ত নিন্দনীয়।”