হুগলি: বছর শেষে বড় ধাক্কা শাসকদলের। ফুরফুরা হাই মাদ্রাসা পরিচালন সমিতি গেল আইএসএফ ও সিপিএম সমর্থিত প্রার্থীদের দখলে। একেবারে ৬-০ ব্যবধানে জয় লাভ করে তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীদের পরাজিত করল আইএসএফ ও সিপিএম সমর্থিত প্রগতিশীল অভিভাবক মঞ্চ। অন্যদিকে, মুর্শিদাবাদের জলঙ্গি হাই মাদ্রাসা নির্বাচনেও শাসকদলকে পরাজিত করে জয়ী হয়েছে বাং-কংগ্রেস জোট।
এদিন ফুরফুরা হাই মাদ্রাসার পরিচালনা সমিতির নির্বাচন ছিল। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এদিন সকাল থেকেই নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছিল গোটা ফুরফুরা শরিফ চত্বর। কোনওরকম অশান্তি এড়াতে পুলিশি নিরাপত্তা ছিল আঁটোসাঁটো। ফুরফুরার বিভিন্ন মোড়ে মোতায়েন করা হয়েছিল পুলিশ। তারপর ১০টা থেকে শুরু হয় ভোট গ্রহণ। বিকালে ভোটের ফল প্রকাশের পরই উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন সিপিএম এবং আইএসএফ কর্মী-সমর্থকেরা। এই জয়ে উচ্ছ্বসিত ভাঙড়ের বিধায়ক তথা আইএসএফ নেতা নওশাদ সিদ্দিকী বলেন, “এই ধরনের অবাধ ভোট হলে দিকে-দিকে তৃণমূল প্রার্থীরা পরাজিত হবে।”
এদিন ভোটে জয় পেয়ে সকলকে শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানিয়ে আইএসএফ কর্মী আবু আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, “এই মাদ্রাসাকে দুর্নীতিমুক্ত করব। মাদ্রাসা যাতে আরও ভালভাবে করা যায়, সেই চেষ্টা করব।” অন্যদিকে, ‘ফুরফুরা আছে ফুরফুরাতেই’ বলে মন্তব্য করেছেন সিপিএম এরিয়া কমিটির সদস্য সামসুর আরিভিন। তিনি বলেন, “ফুরফুরা হাই মাদ্রাসা অভিভাবক নির্বাচনে জয় পেয়েছে আইএসএফ ও সিপিএম সমর্থিত প্রার্থীরা। এটা গণতন্ত্রের জয়।” ভোটার-সহ সকল এলাকাবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন তিনি। সুষ্ঠুভাবে ভোট সম্পন্ন করায় সহযোগিতার জন্য প্রশাসনকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
ফুরফুরা হাই মাদ্রাসার পরিচালনা সমিতির মোট আসন সংখ্যা ৬। আইএসএফ ও সিপিএমের মনোনীত প্রার্থী ছিল ৬ জন। অন্যদিকে, তৃণমূলও ৬ জন প্রার্থী দিয়েছিল। মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ৫৫০ জন। যার মধ্যে ভোট দিয়েছেন ৩২২ জন। গণনা শেষে দেখা যায়, ৬টি আসনেই জয়লাভ করেছে আইএসএফ ও সিপিএম সমর্থিত প্রার্থী।
উল্লেখ্য, এতদিন এই সমিতি ছিল শাসকদলের দখলে। ২০১১ সালের পর থেকে এই হাই মাদ্রাসায় কোনও নির্বাচন হয়নি। নির্বাচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিচালনা সমিতি গঠনের জন্য সম্প্রতি বিরোধী শিবির আদালতের দ্বারস্থ হয়। অবশেষে আদালতের রায়ে এদিন পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যে পরিচালন সমিতির নির্বাচন প্রক্রিয়া নির্বিঘ্নে সম্পূর্ণ হয়।