চন্দননগর: পাহাড়ে কীভাবে চড়তে হয়। পাহাড়ের চূড়ায়, উঠতে কী কী প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়। আবহাওয়া কেমন থাকে। কেমন ধরনের পোশাক পরতে হয়। প্রশিক্ষণ কতটা জরুরি। কোন বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতে হবে। এসব জানাতেই চন্দননগর বই মেলায় স্টল দিয়েছেন চন্দননগরের গর্ব পিয়ালি বসাক। পর্বত আরোহণের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়ার পাশাপাশি পর্বতারোহণের বিভিন্ন সামগ্রীও ছিল পিয়ালি স্টলে। কিন্তু বছরের শেষ দিনে বইমেলায় ভিড় জমলেও আশানুরূপ বিক্রি হয়নি পিলায়ীর। তবে তিনি আশা ছাড়েননি। আগামী দিনে কলকাতা বইমেলাও স্টল দেবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
পিয়ালির মা স্বপ্না বসাক প্রয়াত হয়েছেন গত ১১ অক্টোবর। বাবা তপন বসাক বিছানায় শয্যাশায়ী। পিয়ালি নিজে অসুস্থ। দিল্লি এইমসে চিকিৎসা করাচ্ছেন তিনি। ২০১৬ সালে একবার অস্ত্রোপচার হয়েছিল তার। ইউটেরাসে টিউমার আবার বড় হয়েছে। ব্যক্তিগত জীবনে লড়াইয়ের পাশাপাশি তাঁর পর্বতারোহণ থেমে থাকেনি। ২০১৮ সালে মানাসুলু, ২০২১ সালে ধৌলাগিরি, ২০২২ সালে এভারেস্ট ও লোৎসে জয়। ২০২৩ সালে এপ্রিম ও মে মাসে যথাক্রমে অন্নপূর্ণা ও মাকালু শৃঙ্গ জয় করেন। পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্ট সহ মোট ছয়টি আট হাজারি শৃঙ্গ জয় করেছেন পিয়ালি। অক্সিজেন ছাড়া এভারেস্টের সব থেকে কাছে পৌঁছেছিলেন। এহেন কৃতিত্বের অধিকারী পর্বতারোহী কেন মেলায় স্টল দিলেন?
এ বিষয়ে পিয়ালি বলেন, “অনেক পর্বতারোহী আছেন যারা ঠিক মতো প্রশিক্ষণ নিতে পারেন না। অনেক ছাত্র-ছাত্রী যারা পর্বতারোণে উৎসাহী, কিন্তু তাঁদের অনেক কিছুই জিজ্ঞাসা থাকে। আমি তাঁদের সরাসরি সেই বিষয়গুলো বলতে পারছি স্টলের মাধ্যমে। কম খরচে কীকরে পর্বতারোহণের প্রশিক্ষণ নেওয়া যায় সেটা সেটা জানাতে পারছি। পাহাড়ে কী ধরনের প্রতিকূলতা থাকে, তা জানা দরকার। নিজের নিরাপত্তার জন্য সেগুলো জানা প্রয়োজন।” পর্বতারোহণের সামগ্রী অনেকে কিনতে পারেন বা জানেন না কোন ধরনের জিনিস কিনতে হয়। সেগুলি স্টলে রাখছেন বলে জানিয়েছেন পিয়ালি।
এখনও টাকা মেটাতে না পারাতে এখনো অন্নপূর্ণা ও মাকালু শৃঙ্গ জয়ের শংসাপত্র পাননি পিয়ালি। আগের অভিযানের ৫০ লাখ, মাকালু অভিযানের ৩০ লাখ। মোট ৮০ লাখ টাকা দেনা রয়েছে পিয়ালির। সেই টাকা শোধের উদ্দেশ্যেও জিনিস বিক্রি বলে জানিয়েছেন তিনি। পিয়ালি বসাকের বোন তমালি বসাক বলেন, “চন্দননগর মেলায় দুটি ৮০০ টাকার জ্যাকেট বিক্রি হয়েছে। কিছু মানুষ আসছেন পর্বতারোহণে যাদের উৎসাহ আছে।” পিয়ালি বলেছেন, “কলকাতা বইমেলা সহ বিভিন্ন বই মেলাতে আমি থাকব। কারণ সেখানে অনেক মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ হয়।”