হুগলি: পূর্বের স্বরেকর্ড ভেঙে ভবানীপুর কেন্দ্রে জয় পেয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাঁর জয়লাভে শুভেচ্ছ জানিয়েছেন অখিলেশ যাদব থেকে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্তালিনও। পাশাপাশি, ভবানীপুরে মমতার প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেয়াল অভিযোগ তুলেছেন, রিগিং করে আসনলাভ হয়েছে মমতার। তৃণমূল সুপ্রিমোর জয়ে কার্যত কটাক্ষ হেনেছেন ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি (Nawshad Siddique)। তাঁর সাফ দাবি, জেতার শংসাপত্র যাঁর হাতে তিনিই ক্ষমতাবান। সে যেভাবেই তিনি জয়লাভ করুন না কেন।
ভাঙড়ের তরুণ বিধায়ক এদিন বলেন, “নির্বাচনে যো জিতা ওহী সিকন্দর। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জয়ী হয়েছেন। কিন্তু, অদ্ভুতভাবে ভবানীপুরে ভোটের হার কমেছে। বিধানসভা নির্বাচনে প্রায় ৬২ শতাংশ ভোট কমে দাঁড়িয়েছে ৫৩ শতাংশ। কী করে এই সংখ্যাটা কম হল? এর থেকে বোঝা যায় ঠিক কীভাবে সন্ত্রাস হয়েছে ওই এলাকায়। ভোট দিতেই দেওয়া হয়নি অনেককে। যেসকল মুসলিমরা একদা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর তৃণমূল কংগ্রেসকে মসীহা ভাবতেন তাঁদের প্রশ্ন করতে চাই, তাঁরা কি এই ভোটের হার কমে যাওয়ার কারণ দর্শাতে পারেন?”
তবে এখানেই থামেননি নওশাদ। আইএসএফ নেতা আরও বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর উচিত সকলের কথা ভেবে রাজধর্ম পালন করা। তিনি কেবল তাঁর দলের নেত্রী নন। খালি নিজের দলের লোকেদের নিয়ে কাজ করবেন আর অন্য় একটা শ্রেণি কেবল না খেয়ে মরবে তা হয় না।”
উল্লেখ্য, একুশের নির্বাচনকালেই প্রথম আত্মপ্রকাশ করে ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট বা আইএসএফ। সিপিএম ও কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বাঁধলেও নির্বাচনে কেবল ভাঙড়ের আসনটিই লাভ হয়েছে নওশাদের। অন্যদিকে, সিপিএম-কংগ্রেস ফিরেছে শূন্য ঝুলিতে। ফলে, নির্বাচনে অনতিপরেই চিড় ধরেছে জোটে। ভেঙে গিয়েছে জোট। পাশাপাশি ভাঙড়ে তৃণমূল আইএসএফ বিরোধ নতুন নয়। প্রায়ই সেই বিরোধ ব্যাপক আকার ধারণ করে। আইএসএফের তরফে আগেই জানানো হয়েছিল প্রয়োজনে এককভাবে তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে ‘ভাইজানের’ দল। তবে, ভবানীপুরে মমতার জয়ের পরে এই সমীকরণ কোনদিকে গড়ায় সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।
রবিবার, সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তৃণমূল নেত্রী আরও বলেন, “ভবানীপুরে ১ লক্ষ ১৫ হাজার মাত্র ভোট পড়েছে। এটা চিরকালের ধারা, কম ভোট পড়ে। ‘১১ সালে ৪৪ শতাংশ ভোট পড়েছিল, সেবার জিতেছিলাম। ১৬ সালে সম্ভবত ২৫-২৬ শোভনদেব ২৮ হাজার ভোটে জিতেছিলেন। এবার অ্যাবাউট ৬০ হাজাার ভোটে জিতেছি। কোনও ওয়ার্ডে মানুষ আমাদের হারায়নি। এটাই চ্যালেঞ্জ। মাথার রাখতে হবে।”
নন্দীগ্রামে ফল-বিতর্কের পরে সতর্ক কমিশন। ভবানীপুরের গণনা নিয়ে বাড়তি সতর্কতা। রিটার্নিং অফিসার ছাড়া কাউকে ফোন দেওয়া হয়নি। সব দিকে খতিয়ে দেখে তবেই ফল ওয়েবসাইটে। নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর জেতার খবর ছড়িয়ে পড়ে সংবাদমাধ্যমে। পরে ফল বদলে যায়। এই ঘটনা যাতে আর না হয় তাই আগে থেকেই সূত্রের খবর দিল্লি থেকেই নির্দেশ কমিশনের কলকাতার অফিসে।
আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari: ‘নিজের চেয়ার বাঁচাতে ৫০ লক্ষ মানুষকে ডুবিয়েছেন দিদিমণি’, বিস্ফোরক শুভেন্দু
আরও পড়ুন: CM Mamata Banerjee: বাতিল জেলাশাসকের সঙ্গে বৈঠক, আকাশপথেই বন্যা কবলিত বাঁকুড়া দর্শন মুখ্যমন্ত্রীর