হুগলি: করোনা পরিস্থিতিতে (Corona Situation) রাত্রিকালীন নিষেধাজ্ঞা থাকবে কিনা সেই ধোঁয়াশা থেকেই গেল। সিসিটিভি ক্যামেরায় নজরদারির সঙ্গে গোপন ক্যামেরার ভরসায় চন্দননগরের (Chandannagar) জগদ্ধাত্রী পুজোর (Jagadhatri Puja) চার দিন।
চন্দননগর রবীন্দ্র ভবনে সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করেন চন্দননগর পুলিশ কমিশনার অর্ণব ঘোষ। তিনি জানান, এবার চন্দননগর ও ভদ্রেশ্বর মিলিয়ে মোট ৩০০ পুজোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে অনলাইনে। পুজোর ক’দিন আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির নজরদারিতে থাকছেন ৮ জন এসপি, ডিএসপি ১৩ জন, ২৬ জন ইন্সপেক্টর ও সাব ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার অফিসার। এছাড় কনস্টেবল ও ৬০০ জন অস্থায়ী হোমগার্ড সহ প্রায় দেড় হাজার পুলিশ মোতায়েন থাকবে চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোয়।
পুজোর সময় রাস্তাঘাটে নজরদারি চালাতে ৫০টি জায়গায় সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। থাকছে ওয়াচ টিম। এছাড়া গোপন জায়গা থেকে ভিডিওগ্রাফি হবে। এমন কোনো ছাদ যেখানে কারো নজর না যায় সেই জায়গায় ক্যামেরা থাকবে বলে জানান পুলিশ কমিশনার। তাছাড়া ওয়াচ টাওয়ার থেকে বাইনোকুলারে নজরদারি চালাবে পুলিশ। চন্দননগর ঢোকার রাস্তায়
নো এন্ট্রি থাকছে। ৯ থেকে ১৫ তারিখ দুপুর দুটো থেকে পরদিন সকাল ৬ টা পর্যন্ত এই ব্যবস্থা চালু থাকবে।
পুলিশ কমিশনার বলেন এবারই প্রথম বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ের দিকে খেয়াল করে। পুজোর দিনগুলিতে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনে হলে সুষ্ঠু ব্যবস্থা থাকছে। রাস্তায় ভিড় থাকায় এই সময় অ্যাম্বুলেন্স ঠিক মত যেতে পারে না। তাই চন্দননগর রানিঘাটে লঞ্চ থাকবে। দ্রুত অসুস্থ ব্যক্তিকে লঞ্চে করে চুঁচুড়া ফেরিঘাটে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে থাকবে অ্যাম্বুলেন্স। এই পথে ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে রোগীদের।
আর সে সময় সাদা পোশাকে স্পেশাল পুলিশ থাকবেন, যাঁরা সিপিকে রিপোর্ট করবেন এই বিষয়গুলিতে।
কোভিড বিধি নিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশাবলী পুজো কমিটিগুলোকে ইতিমধ্যে দিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান পুলিশ কমিশনার। কিন্তু রাত্রিকালীন কারফিউ নিয়ে কী সিদ্ধান্ত হয়েছে সাংবাদিকদের এই প্রশ্নে পুলিশ কমিশনার বলেন, সরকারি যা নির্দেশিকা আসবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কয়েক দিন আগে প্রশাসনিক বৈঠকে তিনি জানিয়েছিলেন জগদ্ধাত্রী পুজোয় রাত্রীকালীন কারফিউ বলবৎ থাকবে। তা নিয়ে পুজো উদ্যোক্তাদের মধ্যে বিস্তর আলোচনা শুরু হয়। এর মধ্যে মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন আবার জানান যে কয়েকদিনের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে রাতের কারফিউ থাকবে কি না। কিন্তু এদিন নিরাপত্তা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য দিলেও রাত্রিকালীন কারফিউ থাকবে কিনা তা নিয়ে পুলিশ কমিশনার কোনও স্পষ্ট উত্তর দেননি।
চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজোর রাতগুলিতে যে পরিমাণ মানুষের ঢল নামে তা রাত এগারোটায় থামিয়ে দেওয়া কোনওমতেই সম্ভব নয় বলে জানাচ্ছে ওয়াকিবহাল মহল। এদিকে হাইকোর্টের নির্দেশে পুজো প্যান্ডেলে না ঢুকলেও রাস্তায় লোক থাকলে তাঁদের কীভাবে কারফিউ মানতে বলা হবে তা নিয়ে ভাবনায় প্রশাসনও। তবে পুজো উদ্যোক্তা ও প্রশাসনের কর্তারা মনে করছেন ছট পুজোতে যেমন রাতের নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেছে, জগদ্ধাত্রী পুজোতেও তাই হবে।