Hooghly beggar bank account: ভিক্ষা করে ব্যাঙ্কে ৮৫ হাজার, সেই টাকাই এ যাত্রায় প্রাণে বাঁচাল বৃদ্ধাকে

TV9 Bangla Digital | Edited By: Soumya Saha

Sep 27, 2021 | 9:36 PM

Bansberia: টাকা জমানোর নেশা ছিল বৃদ্ধার। নিজে না খেয়ে টাকা জমাতেন। একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও খুলেছিলেন। তিলে তিলে খেয়ে - না খেয়ে পঁচাশি হাজার টাকা জমিয়েছিলেন ব্যাঙ্কে।

Hooghly beggar bank account: ভিক্ষা করে ব্যাঙ্কে ৮৫ হাজার, সেই টাকাই এ যাত্রায় প্রাণে বাঁচাল বৃদ্ধাকে
ভিক্ষা করেই ব্যাঙ্কে ৮৫ হাজার টাকা জমিয়েছিলেন মালতি দাস (নিজস্ব চিত্র)

Follow Us

বাঁশবেড়িয়া: বয়সের ভারে নুব্জ। সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেন না এখন আর। তিন কূলে আর কেউ নেই। পেটের টানে এখন ভিক্ষা করতে বাধ্য হয়েছেন হুগলির মগড়া বোরোপাড়ার বাসিন্দা মালতি দাস। বাঁশবেড়িয়া হংসেশ্বরী মন্দির চত্বরে ভিক্ষা করেন বছর সত্তরের বৃদ্ধা। রাতে আশে পাশে যেখানে যেমন পারেন, একটু ঘুমিয়ে নেন। সকাল হতেই আবার ভিক্ষা। কোনওদিন একবেলা, কোনওদিন আধবেলা খেয়ে কাটাতেন।

কিন্তু টাকা জমানোর নেশা ছিল বৃদ্ধার। নিজে না খেয়ে টাকা জমাতেন। একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও খুলেছিলেন। তিলে তিলে খেয়ে – না খেয়ে পঁচাশি হাজার টাকা জমিয়েছিলেন ব্যাঙ্কে। আর এই টাকা জমানোর নেশাই এ যাত্রায় প্রাণে বাঁচিয়ে দিল মালতি দেবীকে।

দীর্ঘদিন ধরে মালতি দেবীর বুকে একটি টিউমার বাসা বেঁধেছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে টিউমারটি বড় হতে থাকে। গতকাল বুকের ওই টিউমারটি ফেটে যায়। প্রায় মরণাপন্ন অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছিল বৃদ্ধার। চলফেরা করার ক্ষমতাটুকুও ছিল না। ওই অবস্থাতেই স্থানীয়রা তাঁকে নিয়ে যান এলাকার এক চিকিৎসকের কাছে। তিনি দেখে জানিয়ে দেন, বৃদ্ধাকে কলকাতায় নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে। কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভরতি করাতে হবে মহিলাকে।

চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলার পর আজ স্থানীয় দুই মহিলা ওই বৃদ্ধাকে নিয়ে যান ব্যাঙ্কে। ভেবেছিলেন, পঁচাশি হাজার টাকা আছে অ্যাকাউন্টে। ওই টাকাতেই চিকিৎসা হয়ে যাবে। কিন্তু ব্যাঙ্কে গিয়ে আর এক বিপত্তি। এত বড় অঙ্কের টাকা একসঙ্গে তুলতে গেলে যে প্য়ান কার্ড লাগবে। কিন্তু বৃদ্ধা মালতি দেবী যে হংসেশ্বরী মন্দির চত্বরে ভিক্ষা করে কাটান। তিনি হয়ত কোনও দিন ভাবার চেষ্টাও করেননি একটি প্যান কার্ড তাঁর জীবনে একসময়ে এতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। অথচ ব্যাঙ্কের নিয়মও বলছে, এতগুলি টাকা প্যান কার্ড ছাড়া দেওয়া যাবে না। ব্যাঙ্ককর্মীও অসহায়। বৃদ্ধার অবস্থা, তাঁর করুণ পরিণতির কথা বুঝেও কিছু করার উপায় নেই তাঁদের।

ব্যাঙ্কে বসে নিজেকে বড্ড অসহায় মনে হচ্ছিল মালতী দেবীর। যত সময় যাচ্ছিল, তত মুখটা ক্রমেই ফ্যাকাশে হয়ে আসছিল। বুঝতে পারছিলেন, টাকাগুলো আর পাবেন না এখন। আর ঠিক এই সময়েই এগিয়ে আসেন সতীশ গুপ্ত নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি। তিনিও বৃদ্ধার হয়ে সাক্ষী হন। প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে সই সাবুদ হয়। আর তারপরেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলতে পারেন বৃদ্ধা।

বৃদ্ধার সঙ্গে ব্যাঙ্কে এসেছিলেন বালির সোনিয়া সাউ নামে এক মহিলা। ওই মহিলার বাড়িতে বৃদ্ধার আগে যাতায়াত ছিল। বৃদ্ধা অসুস্থ শুনে দেখতে এসেছিলেন সোনিয়া সাউ। তিনি জানান, চিকিৎসার জন্য টাকার প্রয়োজন। তাই তাঁর জমানো টাকা ব্যাঙ্ক থেকে তুলে মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

ব্যাঙ্ক থেকে বেরিয়ে অশক্ত শরীরে লাঠি ভর দিয়ে কাঁপতে কাঁপতে বৃদ্ধা মালতি দাস দুধ সাদা গাড়িতে চড়ে চিকিৎসা করাতে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেন।

আরও পড়ুন : Four-Legged Chicken: চারটে ঠ্যাং নিয়ে নড়েচড়ে বেড়াচ্ছে মুরগি! কাটতে গিয়েই চোখ কপালে ব্যবসায়ীর, চুঁচুড়ায় হইহই

Next Article