দিনের পর দিন বৃদ্ধ বাবা-মাকে নিপীড়ন! হাইকোর্টের নির্দেশে ঘরছাড়া হল ছেলে-বউমা

TV9 Bangla Digital | Edited By: সৈকত দাস

Aug 02, 2021 | 9:25 PM

Calcutta High Court: বৃদ্ধ-বৃদ্ধা বলেন, তাদের মন চায়নি ছেলেকে বাড়ি থেকে বের করার। কিন্তু গত ২০১৩ সাল থেকে দীর্ঘ ৮ বছর যে মানসিক ও শারীরিক অত্যাচারের শিকার হয়েছেন, তাতে আর কোনও উপায় ছিল না।

দিনের পর দিন বৃদ্ধ বাবা-মাকে নিপীড়ন! হাইকোর্টের নির্দেশে ঘরছাড়া হল ছেলে-বউমা
নিজস্ব চিত্র

Follow Us

হুগলি: ধুমধাম করে ছেলের বিয়ে দিয়ে বউমা ঘরে এনেছিলেন জনৈক প্রতাপ ও অঞ্জনা মুখার্জী। সেই বৌমার হাতেই দিনের পর দিন নিপীড়িত হতে হয়েছে তাঁদের। বৃদ্ধ বাবা-মায়ের ওপর মানসিক অত্যাচার থেকে শারীরিক নির্যাতন কোনও কিছুই বাদ যায়নি। সব জেনেশুনেও ছেলে ছিলেন নির্বাক দর্শকের ভূমিকায়। হাইকোর্টের নির্দেশে সেই সেই ছেলে-বউমাকে বিতাড়িত হতে হল বাড়ি থেকে। তাঁদের জিনিসপত্র দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দিল পুলিশ।

গত কয়েকমাস নরক-যন্ত্রণা ভোগ করেছেন বৃদ্ধ প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও স্ত্রী অঞ্জনা দেবী। বাড়ির বাথরুম, দোতলার ঘর এমনকি সিঁড়িতেও তাঁদের ‘নো এন্ট্রি’ করে তালা ঝুলিয়ে দেন বউমা। নিচের একটা ঘরে কার্যত গৃহবন্দি দিনরাত কাটত বৃদ্ধ দম্পতির। মন চায়নি ছেলের বিরুদ্ধে থানা পুলিশ করার। কিন্তু আর সহ্য করতে না পেরে বাধ্য হয়ে পুলিশ প্রশাসনের দারস্থ হন প্রতাপবাবু। প্রশাসন ছেলেকে ডেকে মিমাংসা করার চেষ্টা করে। কিন্তু কাজ হয়নি। অবশেষে কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হন মা অঞ্জনা দেবী। আদালতে রিট পিটিশন দাখিল করেন গত ২১ জুন।

তার পর ২৭ তারিখ হাইকোর্টের বিচারক রাজা সেখর মান্থা পুলিশকে নির্দেশ দেন ওই ছেলে ও বউমাকে বাড়ি থেকে বিতাড়িত করার। বাড়িতে বৃদ্ধ-বৃদ্ধার অনুমতি ছাড়া তাঁদের প্রবেশাধিকার নেই বাড়িতে। ছেলেকে বাড়িতে ঢুকতে গেলে অবশ্যই নিতে হবে বাবার অনুমতি। একইসঙ্গে জানাতে হবে পুলিশকেও।

আর সোমবার আদালতের নির্দেশ মেনে উত্তরপাড়া থানার পুলিশ ১৮/এ ভবানী সেন সরণীর বাসিন্দা প্রতাপ মুখার্জীর বাড়িতে যায়। ছেলে সুশান্ত ও বউমা পম্পাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় পুলিশ। তাঁদের জিনিসপত্রও বের করে দেওয়া হয়। বৃদ্ধ-বৃদ্ধা বলেন, তাদের মন চায়নি ছেলেকে বাড়ি থেকে বের করার। কিন্তু গত ২০১৩ সাল থেকে দীর্ঘ ৮ বছর যে মানসিক ও শারীরিক অত্যাচারের শিকার হয়েছেন, তাতে আর কোনও উপায় ছিল না।

বউমাকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার নির্দেশ পুলিশের

এদিকে ঘরছাড়া হয়ে ছেলে সুশান্তর বক্তব্য, বিয়ের পর থেকেই অশান্তি হত সংসারে। তাঁকে বাবা-মা বলেছিলেন বিবাহ বিচ্ছদ করতে। কিন্তু তিনি রাজি হননি বলেই আজ এই ঘটনা। বাবা-মা যে তাঁদের ওপর অত্যাচারের কথা বলছেন তার বিপরীত ঘটনা ঘটেছে এ বাড়িতে। অভিযোগ তাঁর। বলেন, “আমার ঘরের বিদ্যুৎ সংযোগ পর্যন্ত কেটে দেওয়া হয়েছে। একটা অন্ধকার ঘরে বসবাস করেছি। এ এক দিক দিয়ে ভালই হল।” আরও পড়ুন: ‘ছেলের বাচ্চা নয়’, ৩ বছরের নাতিকে বিষ মেশানো পান্তা খাওয়ালেন দাদু-ঠাকুমা! 

Next Article