Child harassment: এক থেকে একশো না পারার ‘মাশুল’, একরত্তি শিশুর পায়ে খুন্তির ছ্যাকা শিক্ষিকার
Hooghly: গরম খুন্তির ছ্যাঁকায় যন্ত্রণাকাতর শিশুটি কান্নাকাটি শুরু করলে ওই ক্ষত জায়গায় মলম লাগিয়ে একটি কাপড় বেঁধে দেন ওই শিক্ষিকা।
হুগলি: পড়া না পারায় কখনও বেধড়ক মার, কখনও গায়ে গরম মোম ঢেলে দেওয়া, কখনও তুলে আছাড় মারা আবার কখনও খুন্তির ছ্যাঁকা। লঘু কারণে এরকম গুরু দন্ড দেওয়ার উদাহরণ বারবার চলে আসে খবরের শিরোনামে। কিন্তু তাতে আদেও কি বদলায় কিছু? ঘটনার হয়ত পরিবর্তন হয়না কিছুই। কেবল ঘটনাস্থল আর প্রেক্ষণাপট বদলায়। নৃশংসতার তালিকায় যুক্ত হয় একের পর এক ঘটনা। আবারও পড়া না পারায় কঠোর ‘মাশুল’ দিতে হল আরও একরত্তি শিশুকে। এবার ঘটনাস্থান হুগলির হিন্দমোটর। ছাত্রের গায়ে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দেওয়ার অভিযোগ উঠল গৃহশিক্ষিকার বিরুদ্ধে।
শুক্রবার ঘটনটি ঘটে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষিকার বিরুদ্ধে শনিবার ছাত্রের পরিবার লিখিত অভিযোগ দায়ের করে উত্তরপাড়া থানায়। সেই অভিযোগের তদন্তে নেমেই গ্রেফতার হয় অভিযুক্ত শিক্ষিকা। পরে তাকে আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আক্রান্ত শিশুটি একটি বেসরকারি বিদ্যালয়ের ক্লাস ওয়ানের ছাত্র। কোন্নগর রাজীব গান্ধী রোডের বাসিন্দা রুমু ঘোষ নামে অভিযুক্ত শিক্ষিকার কাছে প্রাইভেট পড়তে যায় গত শুক্রবার। সেখানেই তাকে এক থেকে একশো পর্যন্ত লিখতে বলে ওই শিক্ষিকা। কিন্তু তা না পারায় অভিযুক্ত শাস্তি হিসাবে প্রথমে স্কেল দিয়ে বেধড়ক মার ও পরে শিশুটিকে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দেন বলে অভিযোগ। গরম খুন্তির ছ্যাঁকায় যন্ত্রণাকাতর শিশুটি কান্নাকাটি শুরু করলে ওই ক্ষত জায়গায় মলম লাগিয়ে একটি কাপড় বেঁধে দেন ওই শিক্ষিকা। শুধু তাই নয়, ছাত্রর পরিবারের অভিযোগ, খুন্তি দিয়ে ছ্যাঁকা দেওয়ার বিষয়টি যেন সে বাড়িতে কাউকে না বলে তার জন্যও ভয় দেখায়।
প্রথমে শিক্ষিকার ভয়ে বাড়ি ফিরে শিশুটি কাউকে কিছু না বললেও পরের দিন ওই কাপড় খুলতেই শিশুটির মায়ের চোখ পড়ে পায়ের ক্ষতচিহ্নের উপর। এরপরই তার পরিবার উত্তরপাড়া থানার কোন্নগর পুলিশ ফাঁড়িতে ওই গৃহ শিক্ষিকার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ। অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে প্রথমে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে শ্রীরামপুর আদালতে তোলা হয়। সেখানে বিচারক তাকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। ঘটনা প্রসঙ্গে অভিযুক্ত গৃহ শিক্ষিকা রুমু ঘোষ জানান, “ছাত্রটিকে সামান্য ভয় দেখাতে গিয়ে এই ঘটনা ঘটেছে। তিনি কখনই শিশুটিকে আঘাত করতে চাননি। অন্যদিকে, এই ঘটনায় অভিযুক্ত গৃহ শিক্ষিকার কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন শিশুটির মা।” তিনি বলেন, “নিশ্চয়ই ওই শিক্ষিকা খুন্তিটি গরম করে এনেছিলেন। তবেই তিনি ছ্যাকা দিতে পেরেছেন। তিনি ভয় দেখিয়েছেন এটা মানতে পারছি না।”
উল্লেখ্য, মাত্র একদিন আগেই ঘুম পাড়ানোর জন্য একটি শিশুকে তুলে আছাড় মারার অভিযোগ ওঠে পরিচারিকার বিরুদ্ধে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়ে পশ্চিম মেদিনীপুরে। যেখানে সিসি টিভিতে দেখা যায়, শিশুটি ঘুমাতে না চাওয়ায় পরিচারিকা তাকে মারধর এবং খাটে আছাড় মারছে। এযাবৎকালে যা অন্যতম নৃশংসতার উদাহরণ। এছাড়াও, মাত্র কয়েক মাস আগে হাওড়ায় পড়া না পারায় এক ছাত্রের গায়ে গরম মামলার অভিযোগ ওঠে গৃহ শিক্ষকের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার অভিযোগ দায়ের হয় গোলাবাড়ি থানায়। এই সমস্ত কিছু থেকে একটা কথা পরিষ্কার, বারবার লঘু পাপে গুরু দণ্ড দেওয়ার অভিযোগে লাগাম পড়ছে না একটুও।