Rachana Banerjee: হুগলির ‘লকেট’ রচনার গলায়, রিলস-মিমের মধ্যেও কোন পথে কাটলেন দিল্লির ‘টিকিট’

Rachana Banerjee: রাজনীতিতে একেবারেই আনতোড়া একজন। অভিনয় জগতে রচনা-লকেট অনেক সিনেমাতেই একসঙ্গে অভিনয় করেছেন। তখনই দুই বন্ধু, কখনওবা বৌদি-ননদের ভূমিকায়। পর্দার বৌদ-ননদের খেল জমে উঠেছিল রাজনীতির পর্দায়। গত লোকসভা ভোটে তৃণমূলের কাছ থেকে হুগলি আসন ছিনিয়ে নেয় বিজেপি।

Rachana Banerjee:  হুগলির 'লকেট' রচনার গলায়, রিলস-মিমের মধ্যেও কোন পথে কাটলেন দিল্লির 'টিকিট'
রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়Image Credit source: Facebook
Follow Us:
| Updated on: Jun 05, 2024 | 5:33 PM

হুগলি: রাজনীতির আঙিনায় তাঁর প্রথম পা। প্রতিপক্ষ অভিনয় জগতে তাঁর সহকর্মী থাকলেও রাজনীতির ময়দানে যথেষ্টই অভিজ্ঞ হয়ে উঠেছিলেন। একবারের সাংসদ ছিলেন তিনি। তাঁকে ‘সিনিয়র’ মেনে নিতে কোনও অসুবিধাও হয়নি তাঁর। কিন্তু সিনিয়রকে টেক্কা দিয়ে রাজনীতিতে পা রেখেই ‘খেল’ দেখালেন দিদি নম্বর ওয়ান, হুগলির তৃণমূল প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৭৬ হাজারেরও বেশি ভোটে জয়ী হয়েছেন রচনা।

রাজনৈতিক জীবনে প্রথম পরীক্ষায় রচনার স্কোর

হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রাপ্ত ভোট ৭০২৭৪৪। ৭৬ হাজার ৮৫৩ ভোটে লকেট চট্টোপাধ্যায়কে পরাজিত করেছেন তিনি। গত লোকসভা নির্বাচনে হুগলি তৃণমূলের থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল বিজেপি। পুরনো মাটি পুনরুদ্ধার করলেন রচনাই।

রাজনৈতিক জীবনে উত্থান

রাজনীতির ময়দানে প্রথম পা রেখেছেন ‘দিদি নম্বর ওয়ান’।  সৌজন্যে বাংলার ‘দিদি’ মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। লোকসভা নির্বাচনের দামামা বাংলায় বেজে গিয়েছে। তখনই হঠাৎই বাংলার মহিলাদের কাছে জনপ্রিয় টেলিভিশন শো ‘দিদি নম্বর ওয়ানে’র মঞ্চে দেখা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেদিন থেকেই জল্পনা ওঠে তবে কি এবার রচনাকে প্রার্থী করতে চলেছেন মমতা? জল্পনা সত্যি হয় প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পরই। রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হুগলির লকেট চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড় করালেন মমতা।

কেন রচনা হলেন প্রার্থী? রাজনীতিতে একেবারেই আনতোড়া একজন। অভিনয় জগতে রচনা-লকেট অনেক সিনেমাতেই একসঙ্গে অভিনয় করেছেন। তখনই দুই বন্ধু, কখনওবা বৌদি-ননদের ভূমিকায়। পর্দার বৌদ-ননদের খেল জমে উঠেছিল রাজনীতির পর্দায়। গত লোকসভা ভোটে তৃণমূলের কাছ থেকে হুগলি আসন ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। সৌজন্যে তারকা প্রার্থী লকেট। মমতা মাটি ঘেঁটে বুঝেছিলেন, সেখানে হারার মূল কারণ গোষ্ঠীকোন্দলের কাঁটা। তাই নতুন মুখকেই দাঁড় করিয়েছেন তিনি। আর শেষ খেলা খেলে দিলেন রচনাই।

ফেম ফ্যাক্টর না মিম? 

প্রথমবার দাঁড়িয়েও নির্বাচনী প্রচারে ঝড়ে তুলেছিলেন রচনা। প্রথম যেদিন গাড়িতে হুগলি যাচ্ছিলেন, সিঙ্গুরের পথে গাড়ি থেকে নেমে কারখানার ধোঁয়া দেখিয়ে রিলস বানিয়েছিলেন রচনা। সে  সময়ে তাঁকে নিয়ে কম মিম হয়নি। বিষয়টা নিয়ে সে সময় কটাক্ষ করেছিলেন লকেটও। কিন্তু রচনার কথায় মিম তাঁর পাবলিসিটিই বাড়িয়েছে। আর ভোটে জেতার পর সে কথা নিজেই বলেছেন রচনা। নির্বাচনী প্রচারে বেরিয়ে কখনও ঘুগনি খাইয়েছেন কর্মীদের, কখনও দই, কখনও আবার মাটিতে পাত পেড়ে বসে খেয়েছেন। জনসংযোগের ক্ষেত্রে একেবারে দুঁদে রাজনীতিবিদদের বলে বলে ‘গোল’ দিয়েছেন রচনা।

নির্বাচনের দিনও লকেটকে অনেক বেশি ময়দানে দেখা গিয়েছে। কিন্তু সে সময় রচনাকে সে অর্থে দেখা যাচ্ছিল না। প্রশ্ন উঠছিল, রচনা কি তাঁর ‘সিনিয়ক’কে টেক্কা দিতে পারছেন না? ভোটের একেবারে শেষ লগ্নে বুথে দেখা যায় রচনাকে। সে বুধে EVM খারাপের অভিযোগ ওঠে, রচনা গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। কিন্তু তার আগে পুলিশের সঙ্গে ঝামেলা করে, বুথে বুথে ঘুরে, সারাদিনের লাইমলাইট কেড়ে নিয়েছিলেন লকেট। লকেট সহানুভূতির সুরে বলেছিলেন, ‘তৃণমূল প্রার্থী রাজনীতিতে নতুন। তাই বুঝতে পারছেন না।’ কিন্তু শেষ বেলায় চুপচাপ ফুল ফোটালেন রচনাই।