Chinsurah: টানা ৭০ দিন বেতনহীন ওরা, আর তাতেই রাতারাতি ভোল বদলে যাচ্ছে শহরের, চিন্তায় প্রশাসন
Chinsurah: রোজ সকালে সাফাইয়ের চালান অরুণ সাহা। খানিক হতাশের সুরেই বলছেন, “২৭৫ টাকা মজুরিতে কাজ করি। কিন্তু ৭০ দিন হয়ে গেল হাতে একটা টাকাও পাইনি। অফিসের কর্মীদের বেতন দিয়েছে। কিন্তু আমরা যাঁরা গাড়ি চালাই তাঁদের বেতন দেওয়া হয়নি। আমাদের যে কী করে দিন চলবে তা ভাবছেই না পুরসভা।
চুঁচুড়া: অপরিচ্ছন্ন শহরের তকমা পেতে চলেছে চুঁচুড়া? শহরের রাস্তায় ঘুরতে ঘুরতে এই প্রশ্নই ঘোরাফেরা করছে অনেকের মনে। কোথাও উপচে পড়েছে জঞ্জাল, কোথাও রাস্তাতেই পচছে গরু-কুকুর। দুর্গন্ধে নাভিশ্বাস উঠছে সাধারণ মানুষের। এদিকে সমস্যা রয়েছে অন্যত্রও। প্রত্যহ সকাল-বিকাল শহর পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব যাঁদের কাঁধে সেই সব সাফাই গাড়ির চালকেরা প্রায় দু’ মাস বেতন পাননি বলে জানা যাচ্ছে। সেই ক্ষোভে কর্মবিরতিক পথে হেঁটেছেন তাঁরা। তাতেই দুর্গাপুজো, কালীপুজো, ভাইফোঁটার পর এবার জগদ্ধাত্রী পুজোর বাজারেও একেবারে জঞ্জালের ডেরায় পরিণত হয়েছে হুগলির সদর শহর।
এদিকে পাশেই চন্দননগর। জগদ্ধাত্রী পুজোর বাজারে সেখানে রোজই নামছে মানুষের ঢল। চাপ পড়ছে চুঁচুড়ার উপরেও। দিনে দিনের জঞ্জালের স্তূপ ধারেভারে বাড়তে থাকায় চিন্তায় স্থানীয় বাসিন্দারা। সমস্যা যে হচ্ছে তা মানছেন সাফাই কর্মীরাও। কিন্তু, তাঁরাও বলছেন তাঁদের অসহায়তার কথা। একযোগে সকলেই বলছেন উৎসবের মরসুমেও আমাদের বেতন দেওয়া হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে কাজ বন্ধ করা ছাড়া তো আর কোনও উপায় ছিল না।
রোজ সকালে সাফাইয়ের চালান অরুণ সাহা। খানিক হতাশের সুরেই বলছেন, “২৭৫ টাকা মজুরিতে কাজ করি। কিন্তু ৭০ দিন হয়ে গেল হাতে একটা টাকাও পাইনি। অফিসের কর্মীদের বেতন দিয়েছে। কিন্তু আমরা যাঁরা গাড়ি চালাই তাঁদের বেতন দেওয়া হয়নি। আমাদের যে কী করে দিন চলবে তা ভাবছেই না পুরসভা। আমরা কাজ না করলে তো শহর আরও আবর্জনায় ভরে যাবেই।” একই সুর আর এক সাফাই গাড়ির চালক তপন গঙ্গোপাধ্যায়ের গলাতেও। বলছেন, “বোন এল। ভাইফোঁটা দিল। হাতে মিষ্টির প্লেট তুলে দিল। আমি ওকে কিছুই দিতে পারলাম না। হাতে যে টাকাই নেই।”
এ ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক মহলের পাশাপাশি চাপানউতোর তৈরি হয়েছে প্রশাসনিক মহলেও। চুঁচুড়া পুরসভার সিআইসি জয়দেব অধিকারী বলছেন, “পুরসভার ফান্ড নেই। বেতন দেওয়া যাচ্ছে না। আমাদের উপরে যাঁরা আছে তাঁদের বিষয়টি জানানো হয়েছে।” অন্যদিকে চেয়ারম্যান অমিত রায় বলছেন, “কাজ বন্ধ করে ব্ল্যাকমেল করে কোনও কিছু হয় না। কী কারণে এই অবস্থা সবাই জানে। আমরা চেষ্টা করছি।” সুর চড়িয়েছে পদ্ম শিবির। বিজেপির হুগলি সংগঠনিক জেলা সম্পাদক সুরেশ সাউ সরকারের বিরুদ্ধে আঙুল তুলে বলেন, “চুঁচুড়া পুরসভার এই অবস্থা দীর্ঘদিনের। যাঁরা আসলেই নোংরা ঘেঁটে শহর পরিষ্কার রাখে তাঁরাই বেতন পায় না। আর যাঁরা কোনও কাজ না করে বাড়িতে বসে থাকে তাঁরা বেতন পেয়ে যায়।”