Singur: বাংলাকে ‘টাটা’ বলায় খেসারত ৭৬৬ কোটি! কী বলছেন সিঙ্গুরবাসী

Sanath Majhi | Edited By: শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী

Oct 31, 2023 | 4:57 PM

Singur: সিঙ্গুর এখন রাজনীতির ময়দান। সিঙ্গুরকে ব্যবহার করেছে বিগত দিনের সরকার আর এখনও রাজনীতির ময়দান হিসাবে ব্যবহার করে যাচ্ছে বর্তমান সরকার।  এমনই দাবি করছেন সিঙ্গুরের ইচ্ছুক এবং অনিচ্ছুক চাষিরা

Singur: বাংলাকে টাটা বলায় খেসারত ৭৬৬ কোটি! কী বলছেন সিঙ্গুরবাসী
কী বলছেন সিঙ্গুরের বাসিন্দারা?
Image Credit source: TV9 Bangla

Follow Us

সিঙ্গুর: ১৫ বছরের আগের আন্দোলন এখন অতীত বিস্মৃত। সিঙ্গুরে এখন টাটার অস্তিত্বের বিন্দুবিসর্গও নেই। তবে এখনও আগাছায় ভরা পড়়ে রয়েছে জমি। ১৫ বছর পর আবার নতুন করে শিরোনামে সিঙ্গুর। সৌজন্যে আর্বিট্রাল ট্রাইব্যুনাল। তাদের নির্দেশ অনুযায়ী, টাটাকে কারখানা করতে না দেওয়ায় রাজ্য সরকারকে সুদ-সহ বিপুল পরিমাণ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আসলের অঙ্কটা ৭৬৫.৭৮ কোটি টাকা। সিঙ্গুর নিয়ে আবারও বড় ধাক্কা খেল রাজ্য। আবারও নতুন করে পাড়ার মোড়ের চায়ের দোকানে জটলা তৈরি হল, সুর চড়ল ইচ্ছুক অনিচ্ছুক চাষিদের। ‘আর্বিট্রাল ট্রাইব্যুনাল’ কী? কী তাদের কাজ? তা হয়তো ওতো ভালোভাবে বুঝতে পারেন না গ্রামের দেহাতি মানুষগুলো। কিন্তু এক সময়ে ওঁদেরই কেউ সিঙ্গুর আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন, আবার কেউ হননি। তাঁদের মত আজও ভিন্ন, এই নির্দেশের ফলে নতুন করে নাড়াচাড়া শুরু হয়েছে তাঁদের নিয়ে। আজ কী বলছেন তাঁরা?

সেখানকার মানুষদের বক্তব্য, সিঙ্গুর এখন রাজনীতির ময়দান। সিঙ্গুরকে ব্যবহার করেছে বিগত দিনের সরকার আর এখনও রাজনীতির ময়দান হিসাবে ব্যবহার করে যাচ্ছে বর্তমান সরকার।  এমনই দাবি করছেন সিঙ্গুরের ইচ্ছুক এবং অনিচ্ছুক চাষিরা। তবে একটা বিষয়ে তাঁরা আজও একমত। তাঁদের বক্তব্য,  শিল্পের বিরোধিতা করে আন্দোলন হয়নি, আন্দোলন হয়েছিল কৃষি জমি বাঁচানোর দাবিতে। তাঁরা এখনও বলেন, সিঙ্গুরে শিল্প হোক।

তবে চাষিরা চাষাবাদ করেই দিনযাপন করেন। ওতো আইনি জটিলতা, আইনের মারপ্যাঁচ তাঁরা বোঝেন না আজও। তাই তাঁদের অনেকেই বলছেন,  টাটাকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যাপারটা আইনি ব্যাপার, সেটায় বিশেষ কিছু বলার নেই। অনিচ্ছুক চাষি ভুবন গরাই বলেন, “আমরা জমি অধিগ্রহণের বিরোধিতা করেছিলাম। কিন্তু শিল্প চেয়েছিলাম। বামফ্রন্ট আসার আগে বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে ১ নম্বর ছিল। এখন তো ইনকিলাব জিন্দাবাদ করে সব বন্ধ করে দিয়েছে। জমি অধিগ্রহণ অবৈধ। আমাদের আন্দোলন সফল হয়েছে। তবে সিঙ্গুরের লোকেরা এখনও বঞ্চিত। সব সরকারই মিথ্যাবাদী।”

সরকার এবং শিল্পপতির আইনি লড়াইয়ে কার্যত সেখানকার মানুষরা বিধ্বস্ত হয়েছিলেন। দীর্ঘ আন্দোলন, চাষের জমি চলে যাওয়া, সে জমি ফেরত পাওয়া, তা আবার চাষযোগ্য করে তোলা, ক্ষতিপূরণ ইত্যাদি ইত্যাদি- সে এক লম্বা প্রক্রিয়া। সেখানকার মানুষ আজ ক্লান্ত। নতুন করে আর কোনও বিতর্ক আন্দোলন চান না তাঁরা। তাই তাঁদের একাংশ বলছেন, সরকার  আর শিল্পপতিদের ব্যাপার। তাতে সিঙ্গুরের কৃষক থেকে সাধরণ মানুষের কিছু যায় আসে না। ইচ্ছুক চাষি শক্তিপদ মুখোপাধ্যায় বলেন,  “আমরা তো চেয়েছিলাম শিল্প হোক। এখন যা পরিস্থিতি হল, চাষও আর হল না। শিল্পও হল না। বর্তমান যুব সমাজ আর ঘুরে দাঁড়াতে পারল না। সিঙ্গুর যে তিমিরে ছিল, সেই তিমিরেই রয়ে গেল। সব জমি নিজের নামে হয়নি। বর্তমান রাজ্য সরকার চাষিদের ধাপ্পা দিয়েছে।”

তবে আজ ওঁদের অনেকেই বলছেন, সিঙ্গুরে শিল্প হলে প্রভূত উন্নয়ন হত। তা এক প্রকার স্বীকার করছেন সব পক্ষই। কারণ সিঙ্গুরের মানুষের বক্তব্য, যে অন্ধকার ছিল, প্রদীপের নীচের সেই অন্ধকার আজও গাঢ়।

Next Article