বলিউডের নন, বঙ্গের ‘প্যাডম্যান’ চন্দননগরের সুমন্ত স্যর, মহিলাদের ভরসার নাম ‘ভূ-সংকল্প’

TV9 Bangla Digital | Edited By: tista roychowdhury

Jul 27, 2021 | 11:44 PM

Hooghly:পেশা হিসেবে গৃহশিক্ষকতাকেই বেছে নিয়েছেন সুমন্ত। দ্বাদশ শ্রেণি থেকে স্নাতকোত্তর স্তর পর্যন্ত ভুগোল পড়ান তিনি।

বলিউডের নন, বঙ্গের প্যাডম্যান চন্দননগরের সুমন্ত স্যর, মহিলাদের ভরসার নাম ভূ-সংকল্প
'প্যাডম্যান' সুমন্ত বিশ্বাস, নিজস্ব চিত্র

Follow Us

হুগলি:  কোনও বলিউডের চিত্রনাট্য় নয়। কোনও গল্পকারের কাহিনীও নয়। জলজ্যান্ত সত্য ঘটনা। চন্দননগরে তিনি ‘প্যাডম্য়ান’ নামেই পরিচিত। তিনি সুমন্ত বিশ্বাস। পেশায় গৃহশিক্ষক। মহিলাদের ভরসার আরেক নাম ‘ভূ-সংকল্প’। সুমন্তবাবুর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সেটি। ঋতুস্রাবকালীন মহিলারা যে বিশেষ শারীরিক ও মানসিক ‘অস্বস্তির’ সম্মুখীন হন, সেইসব দিনে ভরসা হয়ে ওঠেন সুমন্ত স্যর। নিখরচায় বিলি করেন স্যানিটারি ন্যাপকিন। প্রত্য়ন্ত গ্রামে ঘুরে ঘুরে দিয়ে থাকেন জরুরি শিক্ষার পাঠ।

ভুগোল নিয়ে পড়াশোনা। ডবল এম.এ., বি.এড. হওয়ার পরেও চাকরি মেলেনি। তাই পেশা হিসেবে গৃহশিক্ষকতাকেই বেছে নিয়েছেন সুমন্ত। দ্বাদশ শ্রেণি থেকে স্নাতকোত্তর স্তর পর্যন্ত ভুগোল পড়ান তিনি। পড়ানোর বাইরে বাকি সময়টা পুরোটাই দিয়ে দেন গ্রামের মহিলাদের উন্নতিকল্পে।

ঋতুস্রাব যে একটি শরীরের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া তা এখনও মেনে নিতে পারেননা মহিলারা। ঋতুস্রাবকে কেন্দ্র করে এখনও বহাল রয়েছে ছুত্‍মার্গ। শুধুমাত্র ঋতুস্রাবের জন্য এখনও স্কুলছুট হয়ে থাকে একাধিক কিশোরী। অনেকক্ষেত্রেই, মহিলারা ঋতুস্রাবকালীন স্বাস্থ্য়বিধি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন। বরং, এই শারীরিক প্রক্রিয়া নিয়ে কুসংস্কারের প্রচার প্রচলনই বেশি।

বিগত ১৩ বছর ধরে শিক্ষকতা করার পাশাপাশি চন্দননগরে তো বটেই, অযোধ্যা-পুরুলিয়া-সহ একাধিক জেলার প্রত্য়ন্ত গ্রামে গিয়ে মেয়েদের পাশে দাঁড়িয়েছেন সুমন্ত। কেবল ঋতুস্রাব প্রসঙ্গে বিজ্ঞানমনস্ক শিক্ষাদান নয়, নিখরচায় স্যানিটারি ন্যাপকিন, ওষুধ বিলি করা থেকে শুরু করে যাবতীয় প্রয়োজনীয় সুবিধা অসুবিধায় মহিলাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন সুমন্ত ও তাঁর সংস্থা ‘ভূ-সংকল্প’-এর কর্মীরা।

সকলের প্রিয় ‘প্যাডম্যান’ কেন এই পদক্ষেপ করলেন? সুমন্ত এর জবাবে বলেন, “ছোট থেকে দেখেছি, ঋতুস্রাব চলাকালীন মায়েরা কত কষ্ট পান। সেই থেকেই  ভেবেছিলাম যদি কিছু করতে পারি তবে মহিলাদের জন্য করব। কাজ করতে গিয়ে দেখেছি  কতজন এই বিষয়ে মুখ খুলতেই চান না। অনেকেই হুমকি দিয়েছেন। প্রাণে মেরে দেওয়ার হুমকিও পেয়েছি। কিন্তু আমি সংকল্প নিয়েছিলাম কোনও অবস্থাতেই পিছু হটব না। তাই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।” সুমন্ত এখন একা নন, তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন তাঁর ছাত্র ছাত্রীরাও। ‘ভূ-সংকল্প’ এখন পৌঁছে যায় প্রত্যন্ত গ্রামের অন্দরমহলে। মহিলাদের ভরসার নাম সুমন্ত বিশ্বাস। আরও পড়ুন: কোলে কন্যা, তবু চাই ‘রূপশ্রী’! নাম নথিভুক্ত করাতে গিয়েই গ্রেফতার মহিলা

Next Article