হুগলি: প্রতিবেশীদের মধ্যে কেউ-কেউ বলেছিলেন, “ওকে তো ছোট থেকে দেখেছি। এমন করবে কে জানত”, কেউ আবার বলেছেন, “ওর বাবা-মা খুবই সজ্জন ব্যক্তি” আসলে কেউই বুঝতে পারছে না চেনা ছেলেটা কীভাবে এত অচেনা হয়ে গেল। কথা হচ্ছে অয়ন শীলের। নিয়োগ দুর্নীতে তাঁকে গ্রেফতার করেছে ইডি। তিনি শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় (Santanu Banerjee) ঘনিষ্ঠ ছিলেন বলে সূত্রে মারফত খবর। তবে যাঁরা ছোট থেকে অয়নকে দেখছে তাঁদের যেন মাথায় হাত।
সেই রকমই এক ব্যক্তি রাধিকা দত্ত। চুঁচুড়া সুপার মার্কেটের মালিক তিনি। ওই এলাকাতেও একটি ফ্ল্যাট রয়েছে অয়ন শীলের নামে। রাধিকা দত্ত জানালেন, এক সময় এই এলাকাতে একটি কম্পিউটারের দোকান ছিল অয়নের।রাধিকা দত্তের দাবি,পনেরশো বর্গফুটের এই ফ্ল্যাট প্রথমে ভাড়ায় নিয়ে ছিলেন অয়ন। পরে তা কিনে নেবার কথা বলেন। তবে টাকা দেননি। সেই ফ্ল্যাট তালা বন্ধ অবস্থাতেই রয়েছে।
রাধিকা বাবু বলেন, “রেজিস্ট্রি করেছিল কি না মনে নেই। মার্কেটে অনেকেই দোকান নেওয়ার পর টাকা দিয়েছে। ওকে ভালবাসতাম তাই দোকান কিনতে দিয়েছিলাম।” তিনি আরও বলেন, “অনেক লোকের থেকে টাকা তুলেছে পরে শুনেছি। ফ্ল্যাট বিক্রি করে টাকা দেবে বলেছিল। কিন্তু পাওনাদারদের দিচ্ছি দেবো করে দেয়নি। এখন বুঝতে পারছি ও চিটিংবাজ।”
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ৩৭ ঘন্টার জিজ্ঞাসাবাদ এবং তল্লাশির গ্রেফতার পর শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী অয়ন শীল। সোমবার ভোর রাতে অয়নকে গ্রেফতার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। গ্রেফতার করে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে ইডি-র অফিসে। হুগলি জেলার বলাগড়ের তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতারের পরই ইডির স্ক্যানারে আসে অয়নের নাম। তিনি শান্তনুর ঘনিষ্ঠ বলে জানা গিয়েছে। সল্টলেকের এফডি ব্লকের ৩৮৮ নম্বর বাড়িতে ছিল অয়নের অফিস। শনিবার সেখানেই হানা দেন ইডির অফিসাররা। এর পর দীর্ঘ ৩৭ ঘণ্টা এফডি ব্লকে অয়নের অফিসে চলে তল্লাশি এবং সেই সঙ্গে অয়নকে জিজ্ঞাসাবাদ। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, সল্টলেকের এই বাড়ি থেকে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত প্রচুর তথ্য উদ্ধার হয়েছে। পুরসভার নিয়োগ সংক্রান্ত ওএমআর শিট ও অনেক তথ্য মিলিছে বলে দাবি গোয়েন্দাদের।