Kalyan Banerjee: ‘মমতাই অনুপ্রেরণা’, অভিষেক নিয়ে আর শব্দ খরচ করতে নারাজ কল্যাণ
TMC: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বা ডায়মন্ড- চ্যাপ্টার নিয়ে আর একটি শব্দও খরচ করেননি তৃণমূল সাংসদ। মনে করা হচ্ছে, দলের নির্দেশ মেনে 'কল্যাণ-বিদ্রোহ' -র এখানেই ইতি টানলেন সাংসদ।
চন্দননগর: কল্যাণ-বিতর্কে তৃণমূল (TMC)- এর স্পষ্ট নির্দেশ, দলের বাইরে আর কোনও বিবৃতি দেওয়া যাবে না। তা অমান্য করলেই রয়েছে কঠোর পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি। এই আবহে অভিষেক মন্তব্য নিয়ে বিতর্কের ঠিক দু’ দিন পর শনিবার সন্ধায় নিজের সাংসদ এলাকার একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন শ্রীরামপুর সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee)। এদিন রিষড়াতে ফের তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঢালাও প্রশংসা শোনা গেল শ্রীরামপুরের সাংসদের গলায়। জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখান পথই তাঁর পথ। তবে অভিষেক নিয়ে আর কোনও মন্তব্য করলেন না তিনি।
এদিন মঞ্চে দাঁড়িয়ে কল্যাণ বলেন, “আমাদের কাজের মূল প্রেরণার নাম আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের শিখিয়েছেন মানুষের পাশে থাকতে হবে। মানুষকে নিয়ে সঙ্গে থাকতে হবে। মানুষের ব্যাথা যন্ত্রণাকে বুঝতে হবে।”
কল্যাণের বক্তব্য মমতাময়:
শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ বলেন, “২০১১ সালের আগে পশ্চিমবঙ্গে বিরোধী নেত্রী হিসাবে কেউ যদি থাকেন তাঁর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো এমন বিরোধী দলনেত্রী ভারতবর্ষে খুঁজে পাওয়া যায়নি। আর ২০১১ সালের পর ভারতবর্ষে সবচেয়ে ভাল প্রশাসক, ভাল মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন যিনি তাঁর নামও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের ধ্যান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের নিঃশ্বাসে-প্রশ্বাসে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখানো রাস্তায় আজ এখানে এসে পৌঁছেছি। একটা দিন ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য আমরা লড়াই করতে পেরেছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিপিএমকে উৎখাত করেছেন। এবার নির্বাচনেও বুঝিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যতক্ষণ রয়েছেন, তৃণমূল কংগ্রেস রয়েছে, বাংলায় বিজেপির কোনও জায়গা নেই”।
তিনি আরও বলেন, “ওরা বলেছিল আবকি বার দোশো পার। সত্তরটা পেয়ে হেরে ভূত হয়ে বাড়ি চলে গিয়েছে। কারণ, বিপরীতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ সারা বাংলা মমতাময়। রাজ্যবাসী এত উন্নয়ন পাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য”।
মমতায় আছেন কল্যাণ, অভিষেকে নেই:
রিষড়ার ২০ নম্বর ওয়ার্ডে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে ব্যাডমিন্টনও খেলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। রিষড়া মাতৃসদনের জন্য সাংসদ কোটার ২২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা অনুমোদন করেছেন সেটা ঘোষণা করেন। আগামী দিনে আরও কাজ করবেন বলেও জানান তৃণমূল সাংসদ। তবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বা ডায়মন্ড- চ্যাপ্টার নিয়ে আর একটি শব্দও খরচ করেননি তৃণমূল সাংসদ। মনে করা হচ্ছে, দলের নির্দেশ মেনে ‘কল্যাণ-বিদ্রোহ’ -র এখানেই ইতি টানলেন সাংসদ।
তৃণমূলের নির্দেশ:
কল্যাণ বিতর্কে প্রসঙ্গে এদিন সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে অনেকেই বিবৃতি, পাল্টা বিবৃতি দিচ্ছেন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও লিখছেন। এতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। আমি নিষেধ করেছিলাম। কোনও মন্তব্য থেকে বিরত থাকতে বলেছিলাম। কিন্তু শোনেনি।’ তিনি আরও বলেন শনিবারই শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি বৈঠকে বসেছিল। আর সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাঁরা এই ধরনের বিবৃতি দেবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কমিটি কঠোর সিদ্ধান্ত নেবে।