Chandannagar Municipal Election 2022: ‘আমার নামেও পোস্টার দিতে পারে…কিছু মিশ্র লোক আমাদের দলে রয়েছে’
Bengal BJP: রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে পোস্টার পড়ে লোকাল ট্রেনের কামরায়। যা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়।
হুগলি: বঙ্গ বিজেপির অন্দরের ক্ষোভ যেন থামছেই না। শনিবারই বৈঠক করেছেন বিজেপির ‘বিক্ষুব্ধ’ নেতারা। কেন, বারবার এমন বিরোধ তা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছে দলেরই অন্দরে। পদ্ম শিবিরের সাংগঠনিক দৃঢ়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। এ বার, রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে পোস্টার পড়ে লোকাল ট্রেনের কামরায়। যা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। যদিও এ বিষয়ে বিশেষ আমল দিতে নারাজ বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)।
দিলীপের প্রতিক্রিয়া
চন্দননগরে দলের হয়ে প্রচারে বেরিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, “লোকে আমার নামেও পোস্টার দিতে পারে। যেকোনও কারুর ক্ষেত্রেই পড়তে পারে। কিছু মিশ্র লোক আমাদের পার্টিতে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা অধৈর্য হয়ে গেছেন। তাই তাঁরা কোনটা উচিত, কোনটা অনুচিত বুঝতে পারছেন না।”
অন্যদিকে বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “এই ধরনের কাজ অত্যন্ত ঘৃণ্য। যাঁরা এই ধরনের কাজ করেছেন তাঁরা আসলে কতটা নিকৃষ্ট তা বোঝা যায়। আমি এতদিন জানতাম, ট্রেনে কেবল গুপ্ত রোগের পোস্টার দেওয়া হয়। আজ কত নীচে বিষয়টিকে নামিয়ে নিলেন যাঁরা এই কাজটি করেছেন। তাঁদের সকলের যোগ্য শাস্তি হওয়া উচিত।”
অমিতাভকে ঘিরে বিতর্ক
রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে পোস্টার পড়ে লোকাল ট্রেনের কামরায়। বনগাঁ থেকে শিয়ালদায় আসা লোকাল ট্রেনের কামরার গায়ে একাধিক পোস্টার ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অমিতাভবাবুর বিরুদ্ধে প্রতারণা ও গরু পাচার-সহ একাধিক অভিযোগ তুলে বিজেপি থেকে অপসারণের দাবিতে পোস্টার পড়েছে। পোস্টারে তাঁকে গ্রেফতার করার দাবিও করা হয়েছে। এ নিয়ে যথেষ্ট অস্বস্তিতে রাজ্য বিজেপি।
বঙ্গ বিজপির বিদ্রোহ
বেশ কিছুদিন ধরেই বঙ্গ বিজেপিতে ‘বিদ্রোহ’ অব্যাহত। একের পর এক দলের নেতা দলীয় হোয়াটস্যাপ গ্রুপ ত্যাগ করেছেন। শনিবার দুপুর ২টোয় কলকাতার পোর্ট গেস্ট হাউজ়ে বিজেপির বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর নেতৃত্বের বৈঠক হয়। ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর, জয়প্রকাশ মজুমদার থেকে শুরু করে সায়ন্তন বসু, প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বিজেপির পরিচিত শীর্ষ মুখরা। ডাকা হয় দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া বাঁকুড়া, নদিয়ার বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের। যাঁরা মূলত কয়েক দশক ধরে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত। যাঁরা একসময়ে বঙ্গে বিজেপির আন্দোলনের রূপরেখা নির্ধারিত করতেন, তাঁরা ছিলেন ওই বৈঠকে। যাঁরা আজ বিক্ষুব্ধের তালিকাভুক্ত। বিশ্লেষকরা মতে, এটা রাজ্য বিজেপির কাছে বড় সেট ব্যাক।
বৈঠক শেষে শান্তনু বলেন, “আমাদের একটাই উদ্দেশ্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপির হাতকে মজবুত করা। কিন্তু বর্তমানে বঙ্গ বিজেপির যে কমিটি তৈরি হয়েছে তা দেখে আমার মনে হয় না এই কমিটির বিজেপিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কোনও সৎ উদ্দেশ্য আছে। উপরের নেতাদের ভুল বার্তা দিয়ে কমিটি তৈরি হয়েছে। এতে আমরা বিজেপির জন্য অশনি সঙ্কেত দেখছি। আমরা এর মোকাবিলা করব। কোনও এক বিশেষ ব্যক্তি সংগঠনকে নিজের কুক্ষিগত করতে এভাবে বরিষ্ঠ, অভিজ্ঞ নেতাদের সরিয়ে কমিটি তৈরি করেছে।”
নাম না করে দলেরই এক নেতার বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন শান্তনু ঠাকুর। মন্ত্রীর কথায়, “সংগঠনের একজন নেতা আপনাদের নাম বলতে হয় না জানেন তো সংগঠনের দায়িত্বে কে আছেন। নাম বলে তাঁকে আমি হাইলাইট করতে চাই না। তবে তাঁর একার জন্য পুরো বিজেপি ধ্বংস হয়ে যাবে কখনও হতে দেব না। অবশ্যই আমরা ওই ব্যক্তির অপসারণ চাই। ইতিমধ্যেই ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে জানিয়েছি। আগামিদিনে আরও জোর দিয়ে বলব।”
এদিন ‘বম্ব ব্লাস্ট’ করার হুঁশিয়ারি দিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর মন্তব্য, “আমি বম্ব ব্লাস্ট করব কোথায় সেটা সময় হলেই জানতে পারবেন। তবে এর মানে কখনওই এই নয় যে পার্টি ছেড়ে দিতে হবে। বম্ব ব্লাস্ট করার অনেক রকম উপায় আছে। আমরা চাইছি না পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির পতন হোক। সেখানে যা করণীয় আগামী দিনে বৃহত্তর আকারে সংঘবদ্ধভাবে করব।”
আরও পড়ুন: ‘বাংলাকে পৃথক রাষ্ট্র মনে করে তৃণমূল, সংঘাত হবেই’, ট্যাবলো বিতর্কে খোঁচা বিজেপির