বাংলার বন কর্মীরা যেন জিম কর্বেট! নজির তৈরি করলেন জিনাতকে ধরে
Tigress Zeenat: জয়দীপ কুণ্ড কার্যত ওড়িশার বনদফতরের ব্যর্থতা প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। বলেন, "এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে শুধুমাত্র ওড়িশার বনদফতরের অব্যবস্থা ও অক্ষমতার পরিচয়। আজ বাঘের মতো একটা প্রাণীকে অন্য জঙ্গল থেকে উড়িয়ে এনে তাঁকে ম্যানেজ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
বাঁকুড়া: জিম কর্বেটকে কে না চেনেন? এক সুদক্ষ শিকারি। হিংস্র চিতা থেকে বাঘ। মুহূর্তে চলে আসতে তাঁর আয়ত্তে। রবিবার বাংলার বনকর্মীরাও যেন হয়ে উঠলেন সেই জিম কর্বেট। তবে হ্যাঁ পার্থক্য আছে। কর্বেটের শিকারে প্রাণীদের প্রাণ গেলেও, জিনাত কিন্তু সুস্থ। ঘুম পাড়ানির গুলিতে সাময়িকভাবে ঝিমিয়ে পড়লেও, পরে আবারও সে ‘চঙ্গা’ হয়ে উঠবে বলেই মনে করছেন বন কর্মীরা।
ওড়িশার সিমলিপাল থেকে হাজির পশ্চিমবঙ্গে। ঘুরে বেরিয়েছে ন’দিন ধরে। কখনও ঝাড়গ্রাম, কখনও পুরুলিয়া কখনও বাঁকুড়া। কথা হচ্ছে জিনাত বাঘিনিকে নিয়ে। তার ভয়ে আতঙ্কে দিন কাটিয়েছেন মানুষজন। বিশেষ করে জঙ্গলের ধারে যে সকল মানুষজন থাকেন তাঁরা ভুলেছিলেন নাওয়া-খাওয়া। অবশেষে ২৯শে ডিসেম্বর বিকেলে ধরা দিল সে। আর জিনাত ধরা পড়তেই পশ্চিমবঙ্গের বনকর্মীদের কাজের ভূয়সী প্রশংসা করলেন বণ্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞ জয়দীপ কুণ্ড।
জয়দীপ কুণ্ড কার্যত ওড়িশার বনদফতরের ব্যর্থতা প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। বলেন, “এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে শুধুমাত্র ওড়িশার বনদফতরের অব্যবস্থা ও অক্ষমতার পরিচয়। আজ বাঘের মতো একটা প্রাণীকে অন্য জঙ্গল থেকে উড়িয়ে এনে তাঁকে ম্যানেজ করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাকে ধরতে পারেনি।” এ রাজ্যের বনকর্মীদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, “এরপর সে পশ্চিমবঙ্গে ঢুকল। তাকে গার্ড করে করে রাখা হল। যাতে বাঘ বা মানুষের মধ্যে কোনও লড়াই না হয়। আমি বলব এই রাজ্যের বনদফতর, বনকর্মীরা নজিরবিহীন কাজ করে দেখালেন। যেখানে মানুষের কোনও ক্ষতি না হয়ে বাঘকে বাগে এনেছি। আরও একবার প্রমাণ হল বণ্যপ্রাণ সংরক্ষণে পশ্চিমবঙ্গ সবার থেকে এগিয়ে। অন্য রাজ্যের শেখা উচিত।”
প্রসঙ্গত, শনিবার রাতে জিনাত ছিল বাঁকুড়ার গোঁসাইডিহিতে। রাতেই জিনাতকে লক্ষ্য করে তিনটি ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়া হয়েছিল। কিন্তু তাতে কাবু করা যায়নি। রবিবার বিকাল ৩.৫৮ মিনিটে চতুর্থ ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়েন বনকর্মীরা। তাতেই বাগে আসে সে।