কোন্নগর: নির্মম ঘটনা হুগলিতে। সম্পত্তির লোভে দিদির গায়ে গরম জল ঢেলে দেওয়ার অভিযোগ। গ্রেফতার পিসেমশাই ও তাঁর পিসতুতো ভাই। বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে।
আহত যুবতীর নাম ঐশ্বর্য আদক। বয়স পঁচিশের আশপাশে। অভিযোগ, তাঁর শরীরেই পিসতুতো ভাই গরম জল ঢেলে দেয়। ঘটনায় মদত দেয় যুবতীর পিসি ও পিসেমশাই বলে দাবি আহতর বাবা প্রণব আদকের। প্রণব বাবুর অভিযোগ, তাঁকে ও তাঁর মেয়েকে ওই বাড়ি থেকে উৎখাত করতে নানারকম অভিসন্ধি করে তাঁর বোন-ভগ্নীপতি। ঘটনার দিন তিনি কাজে গিয়েছিলেন। রাত নটা নাগাদ বাড়ি ফিরে মেয়ের কাছে জানতে পারেন নির্মমতার কথা। গরম জল তৈরি করে ঢালা হয় মেয়ের গায়ে। তারপর তার পিসি বোরোলিন লাগিয়ে দেয়। পিসেমশাই আবার আইসক্রিম খাওয়াতে নিয়ে যায় যেন ব্যাপারটা এমন কিছুই হয়নি।
প্রণব বাবু বলেন, “মেয়েকে দেখে আমি স্তম্ভিত হয়ে গেছি। ও একটু জরোসরো। সব কথা গুছিয়ে বলতে পারে না। মানসিক স্বাস্থ্য খারাপ। এমন ভাবে ওর উপর অত্যাচার হয়েছে এর বিচার চাই।” তবে এই অত্যাচার কিন্তু দীর্ঘদিনের। প্রণব আদকের অভিযোগ, তাঁর বাবা পান্নালাল আদকের মৃত্যুর আগে বোন ভগ্নিপতি জোর করে তাদের বাড়ি নিজেদের নামে লিখিয়ে নেয়। তবুও তাঁরা পৈত্রিক ভিটেতেই থাকেন। গত মে মাসে ঐশ্বর মায়ের মৃত্যু হয়। এরপর মেয়েটা একা হয়ে যায়। তিনি বেসরকারি জায়গায় কাজ করেন। মেয়েকে রেখেই কাজে যেতে হয়। আর সেই সুযোগে তার উপর চলে অত্যাচার।
আহত যুবতীর বাবা জানিয়েছেন, “এর আগে একবার আমার মাথায় জল ভর্তি পিতলের বালতি ছাদ থেকে ফেলে দিয়েছিল আমার ভাগ্না। সেটা আমি দেখে ফেলি। কিন্তু অলৌকিক ঘটনা বলে চালানোর চেষ্টা করত। সে যাত্রায় কোনও ভাবে প্রাণে বাঁচি। আমাকে মারতে পারছে না এখন অবলা মেয়েটার উপর নির্যাতন চলছে। এর বিচার চাই।” উত্তরপাড়া থানার পুলিশ অভিযুক্ত দীপঙ্কর মৈত্র ও তার নাবালক ছেলেকে গ্রেফতার করেছে। আজ ধৃত দীপঙ্কর মৈত্রকে শ্রীরামপুর আদালতে পেশ করা হবে। তার ছেলেকে জুভেনাইল আদালতে পেশ করা হবে। কোন্নগর পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন দাস বলেন, “সম্পত্তির জন্য মানুষ যে এত নির্মম হতে পারে তা দেখে খারাপ লাগছে। ঘটনা যদি সত্যি হয় পুলিশ তার ব্যবস্থা নেবে।অভিযুক্তদের পক্ষে কেউ থাকবে না।”