পান্ডুয়া: বিদেশি সংস্থার কেমিক্যাল হাব নির্মাণের সিদ্ধান্ত ও জমি অধিগ্রহণ ঘিরে একসময় তোলপাড় হয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম। পরিবেশ দূষণ ও নিজেদের কৃষিজমি রক্ষার্থে তৎকালীন বাম সরকারের বিরুদ্ধে পথে নেমেছিলেন সেখানকার বাসিন্দারা। সেই আন্দোলন-ক্ষোভ-বিক্ষোভে তপ্ত হয়েছিল নন্দীগ্রামের মাটি। সেই ঘটনার পর কেটে গিয়েছে এক দশকের বেশি সময়। এবার হুগলির পান্ডুয়াতেও কারাখানা বন্ধ ও জমি ফিরে পাওয়ার দাবিতে আন্দোলন সংগঠিত হচ্ছে। গ্রামে রাসায়নিক কারখানা হতে দিতে চান না এলাকার বাসিন্দারা। কারণ কেমিক্যাল হাব থেকে বাড়বে দূষণ। ক্ষতি হবে জমির। সেই কারণে রাসায়নিক কারাখানা তৈরির বিরুদ্ধে পথে নামলেন তাঁরা। হুগলির পান্ডুয়ার দাসপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সর্বমঙ্গলা এলাকার ঘটনা। সেখানকার মঙ্গলা, কুলবাড়ুই, মসুরিয়া, সোনাটিকরি ও ফতেপুর-সহ একাধিক গ্রামের মানুষজন বিদ্রোহ শুরু করেছেন বলে জানা যাচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, কারখানা হওয়ার কথা শুনে জমি দিয়েছিলেন কৃষকরা। পরবর্তীকালে তাঁরা জানতে পারেন, সেটি রাসায়নিক কারখানা হবে। মাস ছয়েক আগে নির্মাণ কাজও শুরু হয় কারখানার। স্থানীয় গ্রামাবাসীদের অভিযোগ, রাসায়নিক কারখানা হলে দূষণ ছড়াবে এলাকায়। এরফলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে চাষের জমি। দিন পাঁচেক আগে গ্রামের মানুষ ও পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা হয় এ নিয়ে। কিন্ত প্রসাশনের পক্ষে কোনও দিশা না মেলায় আন্দোলনে নামেন স্থানীয় লোকজন। পরে প্রশাসনের তরফে কারখানার কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এক বিক্ষোভকারী বলেন, “আমরা তো বুঝিনি। জমি দিয়ে দিয়েছি। এখন শুনি এমন কারখানা হবে যেখান থেকে দূষণ ছড়াচ্ছে। তাই আমরা চাই না যাতে আমাদের এই কৃষিভূমি ধ্বংস হোক। সেই কারণেই আন্দোলন। জমি ফিরে পেতে চাইছি আমরা।” স্থানীয় মানুষের দাবি, কোনওভাবেই জমির ক্ষতি,পরিবেশ দূষণ করা যাবে না। যদিও পান্ডুয়া ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক সেবন্তী বিশ্বাস বলেন, “গ্রামবাসীদের নিয়ে আলোচনা করা হয়েছিল। কিন্তু সমাধান সূত্র পাওয়া যায়নি। আলোচনা চলছে।”
এমনিতেই সোনাটিকরি গ্রামে একটি গেঞ্জি কারখানা থেকে মাঝে মধ্যেই দূষণ ছড়ায় বলে অভিযোগ করে গ্রাম বাসীরা। ফের যদি এই রাসায়নিক কারখানা হয় দূষণ বাড়বে। এলাকাবাসী চাইছেন, দূষণ হয় না এমন কোনও কারখানা তৈরি হক। নচেত আন্দোলন চলবে। বস্তুত, কাজের দাবিতে যখন কল-কারখানার পক্ষে লোকজন সওয়াল করেন। সেই সময় পরিবেশ বাঁচাতে গ্রামাবাসীদের এই সিদ্ধান্ত নিতান্তই উল্লেখযোগ্য।