BLO News: সামনে ভাতের থালা, হাউহাউ করে কাঁদছেন BLO, আর বলেই যাচ্ছেন, ‘আমি আর পারছি না’
এখানেই শেষ নয়, তাঁর আরও দাবি, "নির্বাচন কমিশনের সঠিক পরিকল্পনা নেই। একাধিকবার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হচ্ছে। BLO রা গোটা ফিল্ড ওয়ার্ক করছে। তাঁদের সমস্যাটা কেউ বুঝছে না। এটা শুধু আমার একটার ঘটনা নয়, অনেকেরই এই সমস্যা হচ্ছে। আমরা সমাজে একটা সম্মান পাই,তারপরে যখন আমরা BDO অফিস থেকে এই ধরনের ব্যবহার পাই তাতে আমি ভিষণভাবে ভেঙে পরি। প্রচণ্ড কেঁদে ফেলি।"

হুগলি: পরনে গোলাপি চুড়িদার। সামনে সাজানো ভাতের থালা। কিন্তু তিনি খাচ্ছেন না। হাপুস নয়নে কেঁদেই চলছেন। আর তাঁকে সামলাচ্ছেন পরিবারের খুদে সদস্যরা। গলা জড়িয়ে স্নেহের চুম্বন দিচ্ছে গালে। যাতে তিনি কান্না বন্ধ করেন। কিন্তু মহিলা বিএলও খালি কেঁদেই যাচ্ছেন। আর বলছেন, “আমি আর পারছি না।” আর সেই ভিডিয়ো রীতমতো ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়।
কী ঘটেছে?
পান্ডুয়া ব্লকের বাঁটিকা বৈঁচি গ্ৰাম পঞ্চায়েতের পশ্চিম পাড়া এলাকার স্কুল শিক্ষিকা সুমিতা মুখোপাধ্যায় (ঘোষ)। তিনি ওই পঞ্চায়েতের ৪১ নম্বর বুথে BLO হিসাবে কাজ করছেন। জানা গিয়েছে, তিনি ১৩০০ ফর্মের মধ্যে ৩০০ এন্ট্রি করেছিলেন। সেই কারণে লো-পারফর্মার বলা হয় তাঁকে। সুমিতার দাবি, টেকনিক্যাল সমস্যার জন্য SIR-এর কাজে বিলম্ব হয়েছিল। তাই ব্লক অফিসে ডেকে পাঠিয়ে BLO-কে দিয়ে অনলাইন এন্ট্রি করানো হয়। আর সেই সময়েও বারবার সার্ভারে সমস্যা দেখা দেয়। এদিকে কাজের চাপে শারীরিক অসুস্থতা সত্ত্বেও দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রাখা হয়েছে অভিযোগ।
এরপর অসুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেই কেঁদে ফেলেন তিনি। আর সেই ভিডিয়ো ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। শিক্ষক-শিক্ষা কর্মী ও বিএলও ডিউটি প্রতিরোধ মঞ্চের আহ্বায়ক অনিমেষ হালদারের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে এই ভিডিয়ো ছাড়া হয়।
সুমিত মুখোপাধ্যায় জানান, “আমার শারীরিক অসুস্থতা থাকা সত্ত্বেও আমি SIR এর কাজটা করছি। ইতিমধ্যেই প্রায় ৩০০ জনের নাম অনলাইনে আপডেট করেছি। তারপরেও আমাকে ব্লক অফিসে ডেকে পাঠিয়ে ওখানে অনলাইন এন্ট্রির কথা বলা হয়। কিন্তু সেখানে সার্ভার সমস্যা। সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টে অবধি সেখানে বসে থেকে ও যথাযথ কাজ করতে পারিনি টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে। কাউকে বলেও সমস্যার কোনও সুরাহা হয়নি। তার মধ্যে আমার খাওয়া হয়নি। তখন আমার শারীরিক অবস্থা প্রচণ্ড খারাপ ছিল। আমার মনে হচ্ছিল আমি নিজেকে শেষ করে দিই। আমি যখন বাড়ি আসি আমার সহযোগী BLO আমার সঙ্গে বাড়ি অবধি এসেছিলেন বলে আমার কোনও অঘটন ঘটেনি। না হলে যা খুশি হতে পারত। আমি বাড়িতে প্রচণ্ড ভাবে ভেঙে পড়েছি। কারণ আমাকে প্রচণ্ডভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে।”
এখানেই শেষ নয়, তাঁর আরও দাবি, “নির্বাচন কমিশনের সঠিক পরিকল্পনা নেই। একাধিকবার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হচ্ছে। BLO রা গোটা ফিল্ড ওয়ার্ক করছে। তাঁদের সমস্যাটা কেউ বুঝছে না। এটা শুধু আমার একটার ঘটনা নয়, অনেকেরই এই সমস্যা হচ্ছে। আমরা সমাজে একটা সম্মান পাই,তারপরে যখন আমরা BDO অফিস থেকে এই ধরনের ব্যবহার পাই তাতে আমি ভিষণভাবে ভেঙে পরি। প্রচণ্ড কেঁদে ফেলি।”
বিএলও’র স্বামী বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, “সেদিন মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে কান্নাকাটি করছিল। হাসপাতালে ভর্তি করার মত পরিস্থিতি হয়েছিল কোনও রকমে আমরা খাবার, ওষুধ খাইয়ে সুস্থ করেছি। পোর্টালের সার্ভার ডাউন থাকার কারণে সমস্যার দায় চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে আমার স্ত্রীর উপর। আধিকারিকদের দায় চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই চাপ সহ্য করতে না পেরে অনেকে মারাও গেছেন, অসুস্থ হয়েছেন।”
